সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

ছাতকে শিক্ষা অফিসে টাকা ছাড়া ফাইল চলে না

| প্রকাশের সময় : ২৪ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ছাতক (সুনামগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : ছাতক উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে টাকা ছাড়া কোন কাজই হয় না। ঘুষ-দূর্নীতিসহ যাবতিয় অনিয়ম যেন এখানে নিয়মে পরিণত হয়েছে। অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলা শিক্ষা অফিসার মানিক চন্দ্র দাস প্রাক-প্রাথমিকের উপকরণ ক্রয়, টয়লেট ও ভবন মেরামত, বই পরিবহন, টিএ বিল, বিদ্যুৎ বিল, টাইম স্কেল, ভাড়াটিয়া শিক্ষক দিয়ে বিদ্যালয়ে লেখাপড়া, বিষয় ভিত্তিক শিক্ষক প্রশিক্ষণের নামে স্বজনপ্রীতি, শিক্ষক-শিক্ষিকার বদলী বাণিজ্য, ¯িøপ ফান্ডের টাকার ভূঁয়া বিল-ভাউচারসহ অন্যান্য খাতের মাসোহারা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। জানা গেছে, চলতি ২০১৭-১৮অর্থ বছরে সরকার প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির উপকরণ ক্রয়ের জন্য ৫হাজার করে উপজেলার ১শ’ ৮২টি স্কুলে ৯লাখ ১০হাজার টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। এসব টাকা উত্তোলন ও ব্যয়ের জন্য এসএমসির সভাপতিও প্রধান শিক্ষকসহ ৩সদস্যের কমিটি গঠনের নিয়ম থাকলেও এখানে তা- মানা হচ্ছেনা। একমিটির মাধ্যমে শিক্ষার মানোন্নয়ন, শ্রেণি কক্ষে পাঠদানের প্রয়োজনীয় উপকরণ ক্রয়ও পরে রেজুলেশনের মাধ্যমে ব্যয় খাতের বিল ভাউচার তৈরি করে শিক্ষা অফিসে জমা দেয়ার নিয়ম রয়েছে। এরপর শিক্ষা অফিসার যাচাই-বাছাই করে সভাপতিও প্রধান শিক্ষকের যৌথ ব্যাংক হিসাব নম্বরের অনুকুলে চেক প্রদান করবে। কিন্তু এসব টাকা একাউন্ডে জমা না দিয়ে শিক্ষা অফিসার কমিটির সাথে ভাগ-বাটোয়ারা করে আত্মসাত করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন প্রধান শিক্ষক জানান, প্রতি স্কুলে ¯িøপ ফান্ডের ৪০হাজার টাকা বরাদ্ধের মধ্যে শিক্ষা অফিসার ভ্যাট ছাড়াও দু’হাজার টাকা করে ৩লাখ ৬৪হাজার টাকা আত্মসাত করেন। এছাড়া স্কুলে বই পরিবহনের জন্য ৪শ’ টাকা করে বরাদ্ধ দেয়া হয়। কিন্তু শিক্ষা অফিসার প্রতি স্কুলে ২শ’ টাকা দিয়ে সাড়ে ৩৬হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। ১৯নভেম্বর সকাল থেকে এসব বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ করার নিয়ম না থাকলেও এখানে বিদ্যালয় বন্ধ করে সমাপনি পরিক্ষায় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ডিউটিতে দিয়ে বাগবাড়ি, তাতিকোনা, হাদা-চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অর্ধশতাধিক স্কুলে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে।
এছাড়া প্রায় ডজন খানেক শিক্ষক বিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালন না করে তদবির বাণিজ্যসহ শিক্ষা অফিসের কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটান। এরা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জিম্মি করে শীর্ষ মহলের দোহাই দিয়ে কৌশলে উৎকোচ আদায় করে ভাগ-বাটোয়ারা করে নেয়। এদের হাতে সাধারণ শিক্ষক যেন জিম্মি হয়ে পড়েছে। ফলে সার্বিক শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসার মানিক চন্দ্র দাস এসব শিক্ষক সিন্ডিকেট সদস্যদের মতামতের বাইরে অফিসিয়াল কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। এতে শিক্ষা অফিসের চেইন্ড অব কমান্ড ভেঙ্গে পড়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মানিক চন্দ্র দাস তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের কোন সত্যতা নেই দাবি করে বলেন, একটি মহল তার মান-সম্মান ক্ষুন্ন করার লক্ষ্যে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। তবে সমাপনী পরিক্ষার ডিউটিতে যাবার ফলে শিক্ষক সংকটে কয়েকটি স্কুলের পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন