মুরশাদ সুবহানী, পাবনা থেকে : পাবনায় এবার আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতিকূল-বৈরী আবহাওয়ার মাঝেও ভাল ফলন হওয়ায় কৃষকদের মাঝে খুশীর হাসি ফুটে উঠেছে। পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের পরিচালক বিভূতি ভূষণ জানান, এবার পাবনা জেলায় প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। নির্ধারিত লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে প্রায় ৩ হাজার হেক্টর পরিমান বেশী জমিতে আমান আবাদ হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য মতে, এ বছর পাবনা জেলায় রোপা আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪৯ হাজার ৩২৫ হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে ৫২ হাজার ৪১২ হেক্টর জমিতে। সে হিসেবে ৩ হাজার ৮৭ হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হয়েছিল। অপরদিকে ফলনের লক্ষ্যামাত্রা ধরা হয় প্রতি হেক্টরে ৩.৬ মেট্রিকটন। এখন পর্যন্ত পাওয়া উৎপাদনের তথ্য মতে প্রতি হেক্টরে ৪ মেট্রিকটন করে ফলন মিলছে। তিনি জানান, কেবল ধান কাটা শুরু হয়েছে। সব কাটা শেষ হলে ফলনের সর্বমোট তথ্য পাওয়া যাবে। আর ক্ষতির প্রসঙ্গে বিভূতি ভূষণ বলেন, অতিবৃষ্টিতে যে ক্ষতি হয়েছে তা খুবই সামান্য। তবে ক্ষতি কাটিয়েও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফলন পাওয়া যাবে বলে দাবি করেন তিনি।
আবহাওয়া প্রতিকূল থাকার কারণে ধানের যে ক্ষতি হয়েছে, তা যত সামান্য। বরং লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফলন পাওয়া গেছে। আর ফলন ভাল হওয়ায় কৃষকের ঘরে ঘরে এখন নবান্ন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। পিঠাপুলি খাওয়ানোর জোর প্রস্তুতি চলছে তাদের মধ্যে। প্রতি বছর আমনের ফলন ঘরে ওঠার পর নবান্ন উৎসব বাঙালীর আবহমানকালের ঐতিহ্য।
জেলার সদর উপজেলার মালিগাছা, আটঘরিয়া উপজেলার বাঐকোলা, চাটমোহর উপজেলার চড়ইকোল, চলন বিল এলাকা , কাটাখালি, হরিপুর, লাউতিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন ধান কাটা নিয়ে। কৃষি শ্রমিকরা ধান কেটে আঁটি বেধে মাথায় করে কিংবা গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। সেখানে বাড়ির উঠোনে অথবা মাঠের পাশে খোলা করে চলছে ধান মাড়াই করার কাজ। ধান মাড়াই, ধান উড়ানো ও শুকানোর কাজে কৃষকের সাথে হাত লাগাচ্ছেন কৃষানীরাও। তবে ধান কাটতে কুষি শ্রমিক পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়েছে। মালিগাছা গ্রামের কৃষক আবেদ আলী। বলেন, ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা দিন হাজিরা দিয়েও কৃষি শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। তাই দ্রæত ধান কেটে বাড়িতে নেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। অনেকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ইতোপূর্বে এই সময় কৃষি শ্রমিকের এমন সংকট প্রকট ছিল না অনেকে কৃষি শ্রম কাজ ছেড়ে দিয়ে ব্যাটারী চালিত রিকশা চালানোর কারণে কৃষি ক্ষেত্রে শ্রমিকের সংকট দেখা দিয়েছে। কৃষিবিদ জাফর সাদিক জানালেন, রোপা-আমন ধানের ফলন ভাল হওয়ায় শুধু পাবনায় নয় সারা দেশে চালের উর্ধগতি কমে আসবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন