সউদী আরবের প্রভাবশালী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে ‘নয়া হিটলার’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। গত বৃহস্পতিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সালমান এই মন্তব্য করেন। এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক প্রতিদ্ব›দ্বী এই দুই দেশের মধ্যে বাকযুদ্ধ ও উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সুন্নি শাসিত সউদী আরব ও শিয়া শাসিত ইরানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলমান। আঞ্চলিক বিভিন্ন যুদ্ধেও উভয় দেশের অবস্থান বিপরীতমুখী। মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র তেলসমৃদ্ধ সউদী আরবের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরও দায়িত্বে রয়েছেন যুবরাজ সালমান। তিনি মনে করেন, আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির অধীনে ইসলামি প্রজাতন্ত্রের বিস্তৃতি ঘটছে। তাকে গৃহবন্দি করে রাখা উচিত। নিউ ইয়র্ক টাইমসকে সালমান বলেন, কিন্তু ইউরোপ থেকে আমরা শিখেছি যে, মীমাংসার নীতি কাজ করে না। আমরা চাই না ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে যা ঘটেছে তা ইরানের নয়া হিটলার পুনরাবৃত্তি করেন। নভেম্বরের শুরুতে রিয়াদ থেকে টেলিভিশন ভাষণে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরির পদত্যাগকে কেন্দ্র করে দুই প্রতিদ্ব›দ্বীর মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। হারিরি পদত্যাগের ইরান ও দেশটির রাজনৈতিক মিত্র হেজবুল্লাহ’র বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলেন এবং দাবি করেন প্রাণনাশের আশঙ্কা রয়েছে।
হেজবুল্লাহ হারিরির পদত্যাগের ঘটনাকে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল বলে আখ্যায়িত করে। তারা দাবি করে, সউদী আরবের চাপেই প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। সউদী আরব এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এরপর হারিরি লেবাননে ফিরলে পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করেন।
সউদী আরব ইয়েমেনে প্রায় দুই বছরের বেশি সময় ধরে বিমান হামলা চালাচ্ছে। দেশটিতে ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা ক্ষমতা দখল করেছে। সাক্ষাৎকারে সালমান জানিয়েছেন, ইয়েমেনে যুদ্ধে তাদের অগ্রগতি হয়েছে। তাদের মিত্ররা ইয়েমেনের ৮৫ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। তবে দীর্ঘ যুদ্ধের পরও ইয়েমেনে হুথিরা নিজেদের টিকিয়ে রেখেছে। সউদী জোটকে অভিযানে গোয়েন্দা তথ্য ও রিফুয়েলিং সুবিধা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এ যুদ্ধে প্রায় ১০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
৪ নভেম্বর হুথি বিদ্রোহীরা রিয়াদের প্রধান বিমানবন্দর লক্ষ্য করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে। সউদী আরব এই ঘটনাকে তেহরানের পক্ষ থেকে যুদ্ধের পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যায়িত করে। এর আগে মে মাসে সালমান জানিয়েছিলেন, দুই দেশের মধ্যে ভবিষ্যতে কোনও বিরোধ দানা বাঁধলে ইরানে হামলা চালানো হবে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলি খামেনি সউদী শাহী পরিবারকে অভিশপ্ত হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। ইরানি কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, সউদী আরব সন্ত্রাসবাদ ছড়াচ্ছে। সূত্র : রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন