ইরান ও সউদী আরবের মধ্যে চলমান উত্তেজনাকে বিশ্বের জন্য হুমকি বলে মনে করছেন সউদী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। তিনি মনে করছেন, দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ বাঁধলে জ্বালানি তেলের দাম ‘কল্পনাতীত’ রকম বেড়ে বিশ্ব অর্থনীতিতে ধস নামবে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিবিএসকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে যুদ্ধের বদলে চলমান সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের পক্ষে নিজের অবস্থান তুলে ধরেছেন তিনি।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর সউদী আরবের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি আরামকোর দুটি বৃহৎ তেল স্থাপনায় ড্রোন হামলা চালানো হয়। ওই হামলার পর সউদী আরবের তেল উৎপাদন অর্ধেকে নেমে আসে। ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী হুথি বিদ্রোহীরা এ হামলার দায় স্বীকার করলেও এ ঘটনায় ইরানকে দায়ী করে যুক্তরাষ্ট্র ও সউদী আরব। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে তেহরান। দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে আধিপত্য বিস্তার করতে গিয়ে ইরানের সঙ্গে বাকযুক্ত জড়িয়ে পড়েছে সউদী আরব। সম্প্রতি ওই হামলার পর সউদী যুবরাজ বলেছিলেন, রিয়াদ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ও যে কোনও হামলার জবাব দিতে সক্ষম। তবে সিবিএসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের পক্ষে নিজের অবস্থান তুলে ধরেছেন তিনি।
সউদী সিংহাসনের ভবিষ্যৎ উত্তরাধিকারী বলেন, ‘যুদ্ধের চেয়ে রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ সমাধান অনেক ভালো।’ এ সময় তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উচিত ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে দেখা করা। তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে নতুন চুক্তি করে মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক শান্তি বজায় রাখার ব্যাপারে জোর দেন তিনি।
সউদী যুবরাজ বলেন ‘ইরানকে ঠেকাতে বিশ্ববাসী যদি কঠোর ব্যবস্থা না নেয় তাহলে সংঘর্ষময় পরিস্থিতি আরও তীব্র হবে যা বিশ্বের স্বার্থে জন্য ঝুঁকি হবে। এতে তেল সরবরাহ ব্যাহত হবে। যার ফলে তেলের দাম কল্পনাতীত রকম বেড়ে যেতে পারে। তাদের মধ্যকার যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেবে।’
এমবিএসখ্যাত যুবরাজ জানিয়েছেন, বিশ্বের তেলের চাহিদার ৩০ শতাংশ আসে মধ্যপ্রাচ্য থেকে। বিশ্বের জিডিপির ৪ শতাংশের ক্ষেত্রে এর ভূমিকা রয়েছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘চিন্তা করুন এই বিষয়গুলো যদি হঠাৎ বাধাগ্রস্ত হয় তাহলে শুধু সউদী অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা নয়, পুরো বিশ্বের অর্থনীতি ধ্বংস হবে।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন