শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

দলিল বন্ধক রেখে পুলিশকে টাকা দিয়ে ছাড়া পেলেন অটোচালক

| প্রকাশের সময় : ২৬ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সেলিম আহমেদ, সাভার থেকে : তামার তার চুরির অভিযোগে দুইজনকে আটকের পর মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে সাভারের হরিণধরা এলাকার ট্যানারি পুলিশফাঁড়ির এসআই শাহ আলমের বিরুদ্ধে। এদের মধ্যে একজন পৈত্রিক বাড়ির দলিল বন্ধক রেখে পুলিশকে টাকা দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে হেমায়েতপুর এলাকার ঋষিপাড়া মোড় থেকে তাদের আটক করে পুলিশ। রাতভর ট্যানারি ফাঁড়ি হাজতে আটক রেখে নির্যাতনের পর একজনকে শুক্রবার দুপুরে অন্যজনকে গতকাল শনিবার দুপুরে লক্ষাধিক টাকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
আটক আনোয়ার হোসেন (৪০) মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর থানার উত্তর নয়াবাড়ী এলাকার মরহুম নাছির উদ্দিন মৌলভীর ছেলে ও আনিছুর রহমান (৩৮) সাভারের ভাকুর্তা ইউনিয়নের ফিরিঙ্গকান্দা এলাকার আজিবুর রহমানের ছেলে।
হেমায়েতপুর-সিঙ্গাইর রোডের অটোরিকশা চালক আনোয়ার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর হেমায়েতপুরের ঋষিপাড়া কাঠালতলায় একটি হোটেলে বসে পুড়ি খাচ্ছিলাম। তখন এসআই শাহ আলমসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা এসে আমাকে ধরে নিয়ে যায়। রাতে ট্যানারি ফাঁড়িতে নিয়ে মারধর করে ও চুরি ডাকাতি মামলায় ঢুকিয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে দুই লাখ টাকা দাবি করে।
তিনি বলেন, খবর পেয়ে রাতে আমার স্ত্রী মোসলেমা আক্তার ফাঁড়িতে আসলে পুলিশ কর্মকর্তা শাহ আলম তাকে বকাঝকা করে বের করে দিয়ে টাকা জোগাড় করতে বলে।
অবশেষে সিংগাইরের পৈত্রিক ভিটার দলিল বন্ধক রেখে ৫০ হাজার টাকা এসআই শাহ আলমের হাতে দিলে গতকাল দুপুর ১২টার দিকে আমাকে ছেড়ে দেয়।
তিনি বলেন, এখন কিভাবে বাড়ির দলিল ছাড়িয়ে আনবো সেই দুশ্চিন্তায় রয়েছি।
হানিফ পরিবহনের শ্রমিক আনিছুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, হেমায়েতপুরের মুসলিমপাড়া নিজ বাসার সামনে চা দোকান থেকে বৃহস্পতিবার রাতে আমাকে ধরে নিয়ে যায় এসআই শাহ আলম। ট্যানারি ফাঁড়িতে নিয়ে মারধর করে এক লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে চুরি ও ডাকাতির মামলার আসামি করার ভয় দেখায়। পরে তাদের জানাই, আমি বিদেশ (জর্ডান) যাওয়ার জন্য টাকা জমা দিয়েছি আমাকে ছেড়ে দিন। কিন্তু ওই পুলিশ কর্মকর্তা এক লাখ টাকার নিচে ছাড়বে না। অবশেষে স্বজনদের মাধ্যমে ৬০ হাজার টাকা দিলে শুক্রবার দুপুরে আমাকে ছেড়ে দেয়।
তবে হরিণধরা ট্যানারি ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, তারা দুইজনেই চোর। তাদের বিরুদ্ধে ট্যানারী থেকে তামার তার চুরি করার অভিযোগ রয়েছে। তারা তার চুরির কথা স্বীকারও করেছে। কিন্তু তারা মুচলেকা দিয়েছে এলাকা ছেড়ে চলে যাবে তাই তাদের ছেড়ে দিয়েছি।
এ বিষয়ে সাভার মডেল থানার ওসি মহসিনুল কাদির জানান, বিষয়টি নিয়ে সামনের দিকে আর আগানোর দরকার নেই। আমি ওই এসআইকে ডেকে শাসিয়ে দিচ্ছি, যাতে আর এ ধরনের কোনো কাজ না করে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন