শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

চেঙ্গা পালপাড়ার মৃৎশিল্পীদের সংসারে ফিরছে সচ্ছলতা

প্রকাশের সময় : ২২ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মোঃ গোলাম ফারুক, দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) থেকে
দুপচাঁচিয়া সদরের পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের চেঙ্গা পালপাড়ার কুমাররা ল্যাট্রিনের মাটির পাট তৈরি করে জীবননির্বাহ করছে। আদি এ পেশায় জড়িত থেকে অনেকের সংসারে ফিরে এসেছে সচ্ছলতা। প্রকাশ, আধুনিকতার ছোঁয়ায় যখন মৃৎশিল্প প্রায় বিলুপ্তের পথে, প্রতিযোগিতার বাজারে টিকতে না পেরে যখন অনেকেই ছেড়ে দিচ্ছে এ পেশা, ঠিক তখনই উপজেলা সদরের পৌর এলাকার ১নং ওয়ার্ডের চেঙ্গা পালপাড়ায় দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র।
সরেজমিন চেঙ্গা পালপাড়া এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এই গ্রামের পরিবারের সদস্যরা মৃৎশিল্পের বিভিন্ন সামগ্রী তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। এর মধ্যে বাড়ির পাশে বিশাল খোলা জায়গায় পাট তৈরির কাজে ব্যস্ত সুজন পালের পুত্র রঞ্জিত পাল (৪৮) ও সুভাস পালের পুত্র প্রভাস পাল (৪৫)-এর সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত ল্যাট্রিনের এই পাট তৈরির কাজ তারা ধরে রেখেছেন। বাহির থেকে ৫০ টাকার ভ্যানে মাটি ক্রয় করে এনে তা পানিতে ভিজিয়ে পাট তৈরির উপযোগী করে তোলেন। পরে ফর্মার সাহায্যে পাট তৈরি শুরু করেন। রোদে তা শুকিয়ে নেন। ১০০ পিস পাট তৈরির পর তা পরিপূর্ণ শুকিয়ে গেলে ভাটার আগুনে পোড়েন। বাড়ির এক পাশেই তৈরি একটি ঘরে এ ভাটা। মাটির ট্যালির ছাউনির এই ঘরের মধ্যে গর্ত খুড়ে তৈরি করা হয়েছে এই ল্যাট্রিনের পাট পোড়ানোর ভাটা। তুষের সাহায্যে আগুন দিয়ে পাট পুড়ে পরিপূর্ণ পাট তৈরি করে। পরে উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী আদমদিঘী, কাহালু, নন্দীগ্রাম এলাকা থেকে সাধারণ মানুষ তাদের কাছে এই পাট ক্রয় করতে আসে। ২০ সেটের একটি ল্যাট্রিনে পাট বাড়িতে গিয়ে বসানোসহ তারা ২ হাজার টাকা মূল্য নিয়ে থাকেন। এ ক্ষেত্রে পাটের তৈরি মাটি ক্রয়, শ্রমিক মজুরি, পোড়ানোর তুষ খরচ বাদ দিয়েও সেটপ্রতি ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা আয় হয়। তাদের এ পাট তৈরির কাজে গৃহকর্তার পাশাপাশি মহিলাসহ ছেলে-মেয়েরাও বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে। এতে তাদের আয়ও বেশি হয়। ফাল্গুন, চৈত্র ও বৈশাখÑ এই তিন মাস তাদের বিক্রয় অন্যান্য মাসের তুলনায় ভালো হয়। দ্রব্যমূল্যের এ বাজারে এ পেশায় জড়িত থেকে এ পাড়ার সবাই স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করছে। অনেকেই হয়েছে স্বাবলম্বী। তবুও তাদের প্রত্যাশা, সরকারিভাবে সহযোগিতা পেলে তারা এই আদি পেশার প্রসার ঘটিয়ে প্রতিযোগিতার বাজারে এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হবেন। এ ক্ষেত্রে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতাও কামনা করেছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন