সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

বগুড়ার মোকামতলায় সচ্ছলতা ফিরেছে সবজি চাষে

| প্রকাশের সময় : ৮ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

এনজিও গুটিয়ে নিচ্ছে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম
বগুড়া থেকে মহসিন রাজু : লাভজনক হওয়ায় একসময় কেবলই ধান ও আখের চাষ হতো, এমন গ্রামে বাড়ছে নানা প্রজাতির সবজি ও মশলার চাষ। আর্থিক সচ্ছলতার মুখ দেখছেন চাষিরা। ফলে ক্ষুদ্রঋণের ব্যবসায়ী এনজিওগুলো গুটিয়ে নিচ্ছে তাদের কার্যক্রম। সবজি চাষের লাভের টাকায় এক ধরনের বিপ্লবাত্মক পরিবর্তন আনয়নকারী এলাকাটির নাম মোকামতলা। এটি বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার একটি ইউনিয়ন হলেও পাশবর্তী জয়পুরহাট ও গাইবান্ধা জেলার ট্রানজিট পয়েন্ট বিধায় এর একটা আলাদা ভৌগলিক গুরুত্ব রয়েছে। সরেজমিন মোকামতলার একটু পূর্বদিকের চাকোলমা গ্রামে গিয়ে পাওয়া গেল এলাকায় সবজি চাষের পথিকৃত বলে পরিচিত মধ্যবয়সী হোমিও চিকিৎসক মোস্তফা মামুদ ও তার কলেজপড়–য়া ছেলে শাকিব শাহরিয়ারকে। নিজের শিম ও মিষ্টি কুমড়া ক্ষেতে পরিচর্যারত ডাক্তার মাসুদ জানালেন তার গ্রামে সবজি চাষের সূচনার কথা।
তরুণ বয়সেই হোমিও চিকিৎসার পাশাপাশি তার মনে বাসনা জাগে বাড়ির পাশের ভিটা জমিতে পটলের আবাদ করলে কেমন হয়? আজ থেকে দেড় যুগ ওই এলাকায় তখন কেবলই ধান, আখ ও মরিচ আবাদের প্রচলন ছিল। তাই অনেকের বাধা, নিরুৎসাহ সত্তে¡ও তিনি প্রথম বছরই পটল চাষের ফলাফলে বাম্পার ফলনের পাশাপাশি আর্থিকভাবে লাভবান হন। বর্তমান সময়ের চাষাবাদের হিসাব কষে তিনি জানালেন, এক বিঘা জমিতে ২৫ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে বছরের ৯ মাস ধরে পটল বিক্রি করে গড়ে লাভ হয় লক্ষাধিক টাকা। বাড়তি বোনাস হিসেবে পটলের জাংলার (মাচার) নীচে চাষ করা হয় দামি মশলা আদার! প্রতিবিঘা জমিতে ধান চাষের হিসাব দিয়ে (তার নিজের এলাকার) তিনি বললেন, এক বিঘা জমিতে এখন বোরো ও আমন মৌসুমে খরচ হয় কমপক্ষে ১৫ হাজার টাকা। ঋণ ও খরচ মিলিয়ে গড়ে কোনোবার ২০, কোনোবার ২৫ হাজার টাকা লাভ হয়। যা সবজির ধারে কাছেও যেতে পারে না। একই গ্রামের অপরাপর সবজিচাষিদের মধ্যে আবু বক্কর সিদ্দিক আকন্দ ও রাজ্জাক আকন্দ জানালেন, ডা. মাসুদের দেখাদেখি এই এলাকায় বেড়েছে সবজির চাষ। পটলের পাশাপাশি লাউ, কুমড়া, করলা, শিম, বেগুন ও হলুদের মতো মশলার চাষ করে লাভবান হচ্ছেন গ্রামের সবাই। ক্রমশ আর্থিক সচ্ছলতার কারণে এলাকায় টিনের, বেড়ার ও মাটির ঘরের জায়গায় তৈরি হচ্ছে পাকা-সেমিপাকা বাড়িঘর। চাকোলমা ও পাশবর্তী এলাকায় ক্ষুদ্রঋণের কারবারী এনজিওদের অফিস বা সাইনবোর্ড তেমন একটা চোখে না পড়ায় এক প্রশ্নের জবাবে একই গ্রামের আলহাজ শওকত হোসেন বললেন, এখন আর এনজিওর চরা সুদের ফাঁদে পড়তে চান না কেউ। তাই প্রায় বন্ধই হয়ে গেছে এনজিওগুলোর ঋণ কার্যক্রম। যা গ্রামীণ জনপদের মানুষের স্বনির্ভর মানসিকতারই বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছেন অনেকেই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন