শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

সড়কে ধান শুকানো যান চলাচলে বিঘ : বাড়ছে দুর্ঘটনা

| প্রকাশের সময় : ৯ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) থেকে আতাউর রহমান : ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে আমন ধান শুকানোর কাজ। দু’পাশে কলা গাছ অথবা কাঠেরগুঁড়ি ফেলে ধান শুকাতে দেওয়ায় রাস্তা শরু হয়ে যান চলাচলে বিঘ ঘটছে, ফলে বাড়ছে দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনার বেশি শিকার হচ্ছে ত্রিহুইলারগুলো। দূরপাল্লার গাড়ী ধীর গতিতে চলায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে যাত্রীরা। দুর্ভোগ ও দুঘর্টনা ঘটলেও এ বিষয়ে প্রশাসনের কোন উদ্যোগ নেই।
সরেজমিন দেখা যায়, ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে আমন ধান শুকানোর কাজ। এ মৌসুমে সূর্যের আলো একটু আড়াআড়িভাবে পড়ায় বাড়ির চারপাশের গাছপালার ছায়া ঢেকে দিচ্ছে আঙিনা। বোর মৌসুমের চেয়ে এ মৌসুমের দিন গুলি অপেক্ষাকৃত ছোট হওয়ায় রোদও থাকে অল্প সময়। তাছাড়াও গ্রামগুলিতে বাড়ির পাশে গাছ লাগানোয় আমন মৌসুমে বাড়ির আঙিনায় রোদ পাওয়া যায় কম। এ সব সুবিধার কথা ভেবেই আঞ্চলিক মহাসড়কের আশপাশের কৃষকরা সড়ককে ধান শুকানোর জন্য বেঁচে নিয়েছে। আমন মৌসুম শুষ্ক হওয়ায় অনায়াসেই ধান কাটার পর জমিতেই তা শুকানোর কাজটি করতে পারে। এতে শ্রম ও সময় একটু বেশি লাগে। তারপরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কৃষক-কৃষাণীরা সড়কে ধান শুকানোর কাজ করে।
উপজেলার সাধোরগুলা গ্রামের হারুনা খাতুন, ভাষাগকুলনগরের হাজেরা খাতুন, বটতলা গ্রামের আব্দুল কাদির জানান, এই সময়ে বাড়ির আঙিনায় রোদ পাওয়া যায় কম। মহাসড়কে পিছের উপর রোদ পড়লেই অল্প সময়ে গরম হয়ে ওঠে ধান যার ফলে মহাসড়কে ধান শুকাতে দিলে তা দ্রæত শুকায়। তাছাড়া মহাসড়কে ত্রিফাল ছাড়াই ধান শুকাতে দেয়া যায়। এ সব সুবিধার কথা ভেবেই জীবনের ঝুঁকি নিয়েও মহাসড়কে ধান শুকানো হয়।
ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জ ও ভৈরব গামী শ্যামলছায়া ও এম,কে সুপারের একাদিক গাড়ি চালকদের সাথে কথা হলে তারা জানান, ধান শুকাতে দিয়ে গাছের গুড়ি ফেলে রাখায় রাস্তা শরু হওয়ায় গাড়ি চালাতে হচ্ছে ধীর গতিতে যে কারণে ১ ঘণ্টার রাস্তা পাড়ি দিতে হয় দেড় থেকে ২ ঘণ্টায়।
সিএনজি চালক ফরিদ উদ্দিন জানান, রাস্তার দু’পাশে ধান রোদে দেয়ায় মাঝ রাস্তা দিয়ে সিএনজি চালাতে হয়। এতে প্রায় সময় বড় গাড়ি গুলো সিএনজিকে ধাক্কা দিয়ে উল্টে দিচ্ছে।
ঈশ্বরগঞ্জ পরিবহন শ্রমিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রয়েল বলেন, এ মৌসুমে রাস্তা ছাড়াও ধান শুকানোর প্রচুর জায়গা রয়েছে। একটু সচেতন হলে আমরা অনেক দুর্ঘটনা থেকে বাঁচতে পারি। এবিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন উদ্যোগী হলে দূর্ঘটনা অনেকাংশে কমে যাবে।
ঈশ্বরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ইনচার্জ মাহফুজুর রহমান জানান, মহাসড়কের দু’পাশে ধান শুকানোর ফলে বড় ও ছোট গাড়ি গুলো প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। দুর্ঘটনা কবলিত স্থানে উদ্ধার কাজে দ্রæত পৌছতেও তাদের সমস্যা হচ্ছে।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী বাবুল মিয়া বলেন, সড়কে ধান শুকানোর জন্য আমরা বিভিন্ন সময় স্থানীয় কৃষকদের বাঁধা নিষেধ দেয়া হলেও তারা মানছে না। বিষয়টি নিয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
এব্যাপারে ঈশ্বরগঞ্জ পৌর মেয়র মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুস ছাত্তার বলেন, বাড়ির আঙিনায় ধান শুকানো নিরাপদ তারপরও অনেক এলাকায় কৃষকরা জীবনের ঝুঁকিনিয়ে ধান শুকাতে সড়কে আসে এটা ঠিক নয়। এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে বলা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন