সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

ঘোড়ার গাড়িতে বেঁচে থাকার লড়াই

| প্রকাশের সময় : ৯ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) থেকে টি এম কামাল : যুগের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। কমতি নেই উন্নয়নের। সবকিছুর সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলছে উন্নয়ন কার্যক্রম। এরপরও কোথাও যেন একটু বাধা রয়েছে। সেটা অবশ্য প্রকৃতির বাধা। যেখানে মানুষ থমকে দাঁড়াতে বাধ্য হন। সেখানেই বড় অসহায় মানুষ। যেমন অসহায় চরাঞ্চলের মানুষগুলো। কারণ তারা প্রকৃতির সৃষ্টি বিশাল জলরাশি যমুনায় বেষ্টিত। ফলে তাদের জীবিকা নির্বাহের পথটাও সীমিত। তাই বলে বেঁচে থাকার লড়াইটা বন্ধ রাখলে তো আর চলবে না। বাঁচার জন্য লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। ঘোড়ার গাড়িতে চলছে সেই লড়াই। সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চলের রাস্তাঘাটে মানুষ ও নানা ধরনের নিত্য ব্যবহার্য মালামাল বহনে অসংখ্য ঘোড়ার গাড়ি নিয়মিত চলাচল করে থাকে। আর এ থেকে যে আয় আসে তা দিয়ে চরাঞ্চলের পাঁচ শতাধিক পরিবারের মতো মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।
নৌকায় ভেসে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক চরাঞ্চলের মানুষ প্রয়োজনের তাগিদে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে থাকেন। আবার অনেকেই ব্যবসা ও বসতবাড়িসহ নানা ধরনের কাজে নৌকা করে পণ্য আনা-নেয়ার কাজ করেন। এসব মানুষ বা পণ্য বহনে ঘোড়া গাড়ি ব্যবহার করে চরাঞ্চলের মানুষ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কাজিপুর উপজেলার নাটুয়ারপাড়া, মনসুর নগর, খাসরাজবাড়ী, চরগিরিশ, নিশ্চিন্তপুর, তেকানী ইউনিয়ন যমুনা নদী বেষ্টিত। এসব ইউনিয়নের ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে নৌকায় করে নানা ধরনের পণ্য ক্রয় করেন। এরপর সেসব পণ্য ঘোড়ার গাড়িতে করে নিজ নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে নিয়ে যান। এ ছাড়া ইট, বালু, সিমেন্ট, ছন, পাট, কাঁঠাল, বাদাম, মরিচ, ধান, পাট, কাউন, ভুট্টাসহ মৌসুমী বিভিন্ন ধরনের মালামাল ঘোড়ার গাড়িতে বহন করে চরাঞ্চলের মানুষ। প্রতিটি ঘোড়ার গাড়ি ১৫-২০ মণ ওজন বহনে সক্ষম। গড়ে এসব গাড়ি দিনে প্রায় ৫০ কিলোমিটারের অধিক চরের বালুময় কাঁচা রাস্তা চলাচল করা যায়। আবুল হোসেন, মোহাম্মদ আলী, হোসেনসহ একাধিক ঘোড়ার গাড়ির চালক জানান, নাটুয়াপাড়া হাটবাজার কেন্দ্রিক তারা গাড়ি চালান। পণ্য বহনে কিলোমিটার প্রতি ৮-১০ টাকা হারে ভাড়া পেয়ে থাকেন। প্রতিদিন প্রায় ৫০০-৬০০ টাকা আয় হয়ে থাকে। আর প্রত্যেকে ঘোড়ার পেছনে প্রতিদিন প্রায় ১০০-১৫০টাকা খাওয়া বাবদ খরচ হয়। সবমিলিয়ে ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে বর্তমানে তাদের জীবিকা নির্বাহের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তারা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন