কামরুজ্জামান টুটুল, হাজীগঞ্জ (চাঁদপুর) থেকে
৭ দিনের সপ্তাহে ৩ দিন কলেজের ক্লাস বাকি ৪ দিন অন্যের কাজ করে পড়ালেখা করে শারীরিক প্রতিবন্ধী কলেজ ছাত্র ইমান পাটোয়ারী (১৮)। নিজে এবং বাবা আ. কাদের পাটোয়ারী দুই জন মিলিয়ে অন্যের কাজ করে যা আয় হয় তা দিয়ে নিজের পড়ালেখার পাশাপাশি মা-বাবা ও স্কুল ছাত্রী ছোট বোন মিলিয়ে ৪ জনের সংসার চলছে। উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হলে ও এখনো অনেক বই ক্রয় হয়নি অর্থাভাবে। সম্ভব হলে পড়ালেখা শেষ করে চাকরি করার একান্ত ইচ্ছে আছে বলে জানায় ইমান পাটোয়ারী। চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের ৫নং সদর ইউনিয়নের মৈশাইদ গ্রামের আ. কাদের পাটোয়ারীর ছেলে ইমান পাটোয়ারী। উপজেলার বলাখাল মকবুল আহম্মেদ ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণীর ব্যবসা শাখার প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। স্থানীয় রামপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন জিপিএ ৪.১৭ নিয়ে। ভর্তির সময় ভর্তির পুরো টাকা দিতে পারেননি। একান্ত আলাপচারিতায় ইমান পাটোয়ারী ইনকিলাবকে জানায়, জন্মগতভাবে তার দুটো পা বাঁকা ও স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক ছোট। মাধ্যমিক পাস করার পরে কলেজে ভর্তি হয়েছেন। কিন্তু বই কেনা, কলেজের বিভিন্ন পরীক্ষার ফি, কলেজের বেতন, ভালো ফলাফলের জন্য প্রাইভেট পড়া, কলেজে আসার উপযোগী ড্রেস কোথা থেকে আসবে এসব নানান চিন্তার মধ্যে দিন পার করতে হয় তাকে। পড়ালেখার পাশাপাশি পারিবারিক অভাবের কারণে বাবার সাথে সপ্তাহে ৪ দিন অন্যের জমিতে কাজ করে ইমান। ইচ্ছে আছে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে পড়ালেখা করার। অন্যের কাজ করতে গিয়ে প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ৩ দিন ক্লাসে অনপুস্থিত থেকে কিভাবে ভালো পড়ালেখা করা সম্ভব এমন একটি ভাবনা ইমানের মনে প্রায় চেপে বসে। তবে কষ্ট হলে পড়ালেখা শেষ করে সরকারি চাকরি করার আকাক্সক্ষা রয়েছে ইমানের। ৩ ভাই আর ৪ বোনের অভাবের সংসার তাদের। বাবা অন্যের জমিতে কাজ করে পরিবারের দেখাশোনা করেন। বড় ৩ বোনদের বিয়ে দেয়া হয়েছে আর ছোট বোনটি স্থানীয় রামপুর উচ্চ বিদালয়ে অধ্যায়ণরত। তবে সম্প্রতি সময়ে ইমান প্রতিবন্ধী ভাতা পায় বলে জানায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন