শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

লালপুরে রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরিতে ব্যস্ত গাছিরা

| প্রকাশের সময় : ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

 নাটোর জেলা সংবাদদাতা 

নাটোর জেলার উপজেলা গুলোতে বইতে শুরু করেছে শীতের আমেজ আর তাইতো লালপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহি মধুবৃক্ষ খেজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরীতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে এই অঞ্চলের গাছিরা। শীতের আগমনে অবহেলায় বেড়ে উঠা খেজুরের গাছের কদর এখন অনেক বেশি। উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় গাছিদের যেন দম ফেলার সময় নেই। সকাল থেকে শুরু হয় মধুবৃক্ষ খেজুরের গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরির কাজ। এই মধুবৃক্ষকে ঘিরে গ্রামীণ জীবনে বিরাজ করছে এক প্রকার উৎসবমুখর পরিবেশ। শীতের সকালে আমন ধানের মুড়ি আর খেজুরের সুমিষ্ট রস কেনা পছন্দ করে। লালপুরের ঐতিহ্যবাহি সুস্বাদু খেজুর রস ও নবান্নের নতুন ধানের চালের ক্ষির, পায়েসে, পিঠা পুলি সবার পছন্দ। গাছিরা মধুবৃক্ষ খেজুর গাছের মাথার কাছাকাছি জায়গায় থেকে ডাল কেটে মাথা চেঁচে কয়েকদিন শুকিয়ে নেয়। তারপর ওই জায়গায় এক বিশেষ প্রক্রিয়াতে গাছ কেটে রস বের করে আর সেই রস হাড়িতে নেওয়ার জন্য সেখানে গুজ-পাতাড়ি মারে। এই রস জ্বাল করে তৈরি করা হয় পাটালী, দানাদার ও ঝোলা গুড়। খেজুরের রস ও গুড় দিয়ে তৈরি করা হয় হরেক রকমের পিঠা পুলি, ক্ষির ও পায়েস। এই নতুন খেজুরের গুড় দিয়ে পিঠা পুলি ক্ষির ও পায়েস তৈরিকে কেন্দ্র করে গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে আসতে থাকে মেয়ে, জামাই, নাতি-নাতনী আত্মীয়-স্বজন সব মিলিয়ে সৃষ্টি হয় এক উৎসব মুখর পরিবেশ।আর এ আনন্দ উপভোগ করতে শহরের বাসিন্দারাও শীতের পিঠা খেতে গ্রামে চলে আসে। উপজেলার বাজার গুলোতে উঠতে শুরু করেছে খেজুরের পাঠালি গুড়। মধুবৃক্ষ খেজুরের রস, গুড় ও পাটালী উৎপাদনে লালপুর উপজেলা প্রসিদ্ধ। এ অঞ্চলের খেজুর গুড়ের পাটালী রাজশাহী, ঢাকা, চাঁপাই, টাঙ্গাইল, চট্রগ্রাম, খুলনা, দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হয়ে থাকে। তবে কতিপয় অসাধু মুনাফালোভী গুড় উৎপাদনকারিদের কারণে উপজেলার এই ঐতিহ্য ¤øান হতে চলেছে। উপজেলার কয়েক হাজার পরিবার আয়ের প্রধান উৎস হিসেবে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে খেজুর গাছের ওপর নির্ভরশীল। উপজেলার ওয়ালিয়া গ্রামের গাছি মুনির ইসলাম, নাজমুল হোসেন, তয়জাল জানায়- ‘এ বছর আমরা আগেভাগেই রস সংগ্রহের কাজ শুরু করেছি। এখন পুরো দমে রস সংগ্রহ ও রস থেকে পাটালী গুড় তৈরী করছি।’ গ্রাম বাংলার সম্ভাবনাময় লাভজনক এই খাতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় দিনে দিনে খাতটি বিলুপ্তির পথে, তাই সরকারের সুদৃষ্টির মাধ্যমে এই খাতের উন্নয়ন আশা করছি।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন