বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

২ শিক্ষক দিয়ে চলছে শিক্ষাকার্যক্রম

জয়পুরহাট শিমুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

| প্রকাশের সময় : ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

জয়পুরহাট থেকে মুুুহাম্মদ আবু মুসা : পাঁচজন শিক্ষকের পদের বিপরিতে দুইজন শিক্ষক কর্মরত থাকায় মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে জয়পুরহাট শিমুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্যক্রম। সকল প্রকার নিয়মনীতি উপেক্ষা করে সেই বিদ্যালয় থেকে একজন শিক্ষিকাকে সংযুক্তি প্রদান করে শহরের একটি স্কুলে পাঠানো হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই সংযুক্তি আদেশ বাতিল চেয়ে চিঠি দেয়া হলেও তা দীর্ঘদিনেও সুরাহা করতে পারেনি স্থানীয় প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ।
জয়পুরহাট সদর উপজেলার দোগাছী ইউনিয়নের শিমুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি দ্বিতীয় ধাপে জাতীয়করণ করা হয়। ওই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ পাঁচজনের পদ থাকলেও বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন ইন্তেজার রহমান, মমতা রানী ও কামনা রানী নামে তিনজন শিক্ষক। সহকারী শিক্ষক ইন্তেজার রহমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন দীর্ঘদিন ধরে। কামনা রানী নামে একজন জয়পুরহাট পিটিআইতে ট্রেনিংয়ে রয়েছেন।
ইন্তেজার রহমান ও মমতা রানী দুইজনে দীর্ঘদিন ধরে এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চালাচ্ছেন। এ অবস্থায় ওই বিদ্যালয়ের কার্যক্রম একেবারেই ভেঙে পড়েছে। অথচ ওই বিদ্যালয়ের অপর এক সহকারী শিক্ষিকা সুইটি বেগম ২০১৫ সাল থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংযুক্তি আদেশে জয়পুরহাট শহর সরকারি বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছেন। যেখানে ছয়জন শিক্ষকের পদের বিপরিতে ছয়জন শিক্ষকই কর্মরত আছেন। সংযুক্তি আদেশে আসা সুইটি বেগমকে দিয়ে শিক্ষক সংখ্যা হচ্ছে সাতজন। যা পদ সংখ্যার অতিরিক্ত। শিক্ষক কম থাকা স্কুলে সংযুক্তি আদেশে শিক্ষক দেয়ার নিয়ম থাকলেও এখানে সেই নিয়মকে উপেক্ষা করা হয়েছে। এদিকে শিমুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সঙ্কটের কারণে লেখাপড়া বিঘœ ঘটছে মর্মে সুইটি বেগমের সংযুক্তি আদেশ বাতিল চেয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে পাঠানো পত্রও দীর্ঘদিনেও কার্যকর হয়নি। ফলে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের খামখেয়ালিপনায় বন্দী হয়ে পড়েছে শিমুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় শতাধিক শিশুশিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন। এদিকে শিক্ষক সঙ্কটের কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কথা ভেবে একই সময়ে দু’টি ক্লাসে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে বলে জানান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইন্তেজার রহমান। ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রমনাথ বর্মণ, নুপুর ও ইতি রানী জানায়, শিক্ষক না থাকায় ক্লাস ঠিক মতো হয় না।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি যোগেন চন্দ্র বর্মন জানান, সুইটি বেগমের ডেপুটেশন বাতিলের জন্য বারবার আবেদন নিবেদন করেও লাভ হয়নি। ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি মো. নুরুজ্জামান মন্ডল বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে শিক্ষক সঙ্কটের কারণে শিক্ষার মানও ভেঙে পড়েছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন এই বিদ্যালয় থেকে বেতন তুলবেন অথচ কাজ করবেন আর এক বিদ্যালয়ে এ কেমন সিদ্ধান্ত শিক্ষা বিভাগের। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. ইন্তেজার রহমান জানান, শিক্ষক সঙ্কটে আমি দিশেহারা। মাত্র দুইজন শিক্ষক দিয়ে একটা বিদ্যালয় চলতে পারে কি? অফিসের কাজেও বাইরে যেতে পারি না। ভারপ্রাপ্ত জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আশরাফুল কবীর জানান, শিমুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সঙ্কটের কথা তুলে ধরে সুইটি বেগমের সংযুক্তি আদেশ বাতিল করার জন্য ২০১৭ সালের ৮ আগস্ট মহাপরিচালকের কাছে পত্র দেয়া হয়েছে, কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
২৬ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১০:৪৭ এএম says : 0
তারপরও উপর মহলের লোকজন ভাবেন যে প্রাইমারি শিক্ষকদের মর্যাদার জন্য বেতন বাড়ানোর দরকার নাই। তাদের মতে শিক্ষকরা শুধু ছেড়া পাঞ্জাবি আর ভাঙা ছাতি নিয়ে চলবে।মর্যাদা নাকি টাকা দিয়ে নির্ধারিত হয়না।তাহলে উনারা কেনো বেশি বেতন নেন?
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন