স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের মন্ত্রীসভায় দুই দফায় স¤প্রসারণ ও দফতর পরিবর্তন করা হয়েছে। সরকারের শেষ বছরে গতকাল মঙ্গলবার আরেক দফা স¤প্রসারণ হলো। এ দফায় কারও দফতর বদল হবে বা কেউ বাদ পড়বেন কিনা, তা শপথ ও দফতর বণ্টনের পরেও জানা যায়নি। এদিকে, দুই দফায় স¤প্রসারণ হলেও গত চার বছরে মন্ত্রীসভা থেকে বাদ পড়েননি কেউ। তবে, হজ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকি অপসারিত হয়েছিলেন। এছাড়া এ সময়ের মধ্যে দু’জন মন্ত্রী ও একজন প্রতিমন্ত্রী মারা যাওয়ায় তাদের পদ শুন্য হয়।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভের পর ১২ জানুয়ারি সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। ওই সময় দেশের তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে আরো ২৮জন মন্ত্রী, ১৭জন প্রতিমন্ত্রী ও ২ জন উপ-মন্ত্রী শপথ নেন। সব মিলিয়ে সরকার গঠনের সময় মন্ত্রীসভার সদস্য দাঁড়ায় ৪৮। এবার সরকার গঠনের সময় অতীতের রেকর্ড ভেঙে একজনকে পূর্ণমন্ত্রীসহ বিরোধীদল জাতীয় পার্টির ৩ জনকে মন্ত্রিসভায় স্থান দেয়া হয়। সরকার গঠনের দেড় মাস পরে ওই বছর ২৬ ফেব্রæয়ারি মন্ত্রীসভায় নতুন করে যুক্ত হন একজন মন্ত্রী ও ১ জন প্রতিমন্ত্রী। এরপর ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই আরেক দফা মন্ত্রীসভা স¤প্রসারিত হয়। এ সময় প্রতিমন্ত্রী থেকে মন্ত্রী হন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। এছাড়া মন্ত্রী হিসেবে নুরুল ইসলাম বিএসসি, প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তারানা হালিম ও নুরুজ্জামান আহমেদ নতুন যুক্ত হন।
এর আগে ওই বছর ৯ জুলাই দুই জন মন্ত্রীর দফতর বদল হয়। ওই সময় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে দেয়া হয় স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে। আর ওই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী তৎকালীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে করা হয় দফতরবিহিন মন্ত্রী। তবে সপ্তাহখানেক পরেই তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়।
এদিকে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিন মারা যাওয়ার পর ২০১৬ সালের ১৯ জুন খাদ্য প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের দফতর পরিবর্তন করে তাকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়। এছাড়া সরকার গঠনের দিন ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি মন্ত্রীর মর্যাদায় ৪ জন ও একই বছর ২৬ জানুয়ারি একজন উপদেষ্টা নিয়োগ দেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া সরকার গঠনের দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে মন্ত্রীর পদমর্যাদায় তার বিশেষ দূত নিয়োগ দেন।
প্রসঙ্গত, কোনো মন্ত্রণালয়ের পদ শুন্য থাকলে প্রধানমন্ত্রী সেই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। বর্তমানে সরকারের মন্ত্রীসভায় যেসব পূর্ণমন্ত্রী রয়েছেন, তারা হলেন-অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী, তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী মুহা. ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, রেলপথ মন্ত্রী মো. মুজিবুল হক, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান, সাংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি, খাদ্য মন্ত্রী মো. কামরুল ইসলাম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে রয়েছেন-শ্রম ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক (চুন্নু), অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. শ্রী বীরেন শিকদার, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বেগম ইসমাত আরা সাদেক, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের প্রতিমন্ত্রী মো. মসিউর রহমান রাঙ্গা, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত নুরুজ্জামান আহমেদ। আর উপমন্ত্রীদের মধ্যে রয়েছেন-পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়।
মন্ত্রীর পদ মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাদের মধ্যে রয়েছেন-রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী ও নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন