রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

কোয়েল ও কবুতরপ্রেমিক মোস্তাফার ভাগ্য বদলের গল্প

রাউজান (চট্টগ্রাম) থেকে এম বেলাল উদ্দিন | প্রকাশের সময় : ১৭ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

২৬ বছরের এক যুবক। তার নাম শাহরিয়ার মোস্তাফা। তখন তিনি সপ্তম শ্রেণিতে পড়তেন। স্কুলে যাওয়া আসার সময় গ্রামের গাছগাছালিতে কবুতর ও কোয়েলের কিচিরমিচির শব্দ তাকে আকৃষ্ট করতেন। এ কারণে পাখিদের প্রতি তার দুর্বলতা সৃষ্টি হয়। একদিন চট্টগ্রাম নগররের একটি বাজার থেকে তিন জোড়া ময়ূরপঙ্খি কবুতর আর দুই জোড়া কোয়েল পাখি কিনে আনেন ৬০০ টাকা দামে। আস্তে আস্তে ওই কবুতর ও কোয়েল ডিম দেয়। ডিম থেকে বাচ্ছা হয়। এভাবে ছয়মাসের মধ্যে তার মোট ২৬টি কবুতর ও কোয়েল হয়। তার কিছুদিন পর আরো কবুতর কিনেন তিন জোড়া। তার মধ্যে হেলমেড, ময়ূরপঙ্খি, সিরাজ কবুতর ছিল। আরেকদিন কিনেন আরো কিছু কোয়েল পাখি। এভাবে বাড়তে থাকে তার শখের বসে করা পাখি পালনের পরিধি। এভাবে তিনি ৫০০ অধিক কবুতর ও কোয়েলের মালিক হন শাহরিয়ার। বাড়ির এক পাশে বানিয়েছেন তাদের জন্য আলাদা বাসা।
চট্টগ্রামের রাউজানের বাগোয়ান ইউনিয়নের পাঁচখাইন গ্রামের মীর বাড়ির কবুতর ও কোয়েলপ্রেমিক যুবক শাহরিয়ার মুস্তাফার স্বাবলম্বী হওয়ার গল্প এটি। তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায় শিক্ষক পিতা নজরুল ইসলামের দ্বিতীয় সন্তান তিনি। ২০০৯ সালে এসএসসি পাস করার পর আর পড়ালেখা করা হয়নি। তাই পুরোদমে লেগে যান কবুতর ও কোয়েল পালনের কাজে। বাবা মার কাছ থেকেও একাজে উৎসাহ পেয়েছেন বলেন জানান তিনি। দীর্ঘদিন থেকে বাড়িতে কবুতর ও কোয়েল লালন করে ব্যবসা করে আসলেও এখন তিনি উপজেলার সবচেয়ে জনবহুল বাণিজ্যিক এলাকা নোয়াপাড়া পথেরহাটে একটি দোকান খুলে বসেছেন। দোকান ভাড়া দিতে হয় মাসে পাঁচ হাজার। এখানে তার সরবরাহ করা কোয়েল আর নানা প্রজাতির কবুতর দেখতে ভিড় করেন শিশু তরুণ যুবক থেকে বৃদ্ধরাও। বলেন, তার বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান মিলে মোট তার ৫০০ অধিক কবুতর ও কোয়েল আছে। দিনের বেলা যখন তিনি দোকানে থাকেন তখন বাড়ির কবুতর ও কোয়েলগুলোর খাবার ও যতœ নেন তার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা। শাহরিয়ার জানান, তিনি সিরাজ কবুতর বিক্রি করেন ছয় হাজার টাকা জোড়া। কোয়েল এক টাকা জোড়া। এভাবে তিনি প্রতিমাসে ২০-২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ করতে পারেন। এ পর্যন্ত তিনি এ ব্যবসা করে আট থেকে ১০ লাখ টাকার মালিক হয়েছেন বলে জানান। তিনি জানান যেসব পাখি পালনের অনুমতি আছে সেগুলোই তিনি রাখেন। তার মধ্যে আছে সিরাজ, ময়ূরপঙ্খি, গিরিবাজ, শাটিং, সিলভার, মক্কি, শর্টপিচ, হোমা, পাইলট, কিং, বল পেশওয়ারি, ছোয়া ছন্দন কবুতর মোট ২০০টি। কবুতর ও কোয়োলের স্বাস্থ্য খারাপ হলে তিনি নিজেই চিকিৎসা দিয়ে ভালো করে তোলেন। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি এদের চিকিৎসা দেয়ার প্রশিক্ষণও নেন বলে জানান। তিনি মনে করেন, এই ব্যবসা দিয়ে জীবনে তিনি উচ্চ স্থানে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবেন। বেকার যুবকরা যদি এধরনের ব্যতিক্রমি কাজে এগিয়ে আসেন তাহলে দেশে বেকারত্ব কমে আসবে।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাইলে রাউজান উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও ভেটিরিনারি সার্জন লেনিন দে বলেন, গৃহপালিত অনেক পাখি আছে যা লালন করে মানুষ স্বাবলম্বী হতে পারে। আর এরকম কেউ যদি নিজ উদ্যোগে এগিয়ে আসে তাহলে তার অধিদফতর থেকে সহযোগিতা দেয়া হবে। যুবক শাহরিয়ারের গল্প শুনে তিনি শিগগির সরেজমিন তার কার্যক্রম পরিদর্শন করবেন বলে জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
Hridoy Khan ১২ নভেম্বর, ২০২০, ২:৪৪ পিএম says : 0
আমি কবুতরের খামার করতে চাই আপনি কি বলেন
Total Reply(0)
Hridoy Khan ১২ নভেম্বর, ২০২০, ২:৪৫ পিএম says : 0
আমি কবুতরের খামার করতে চাই আপনি কি বলেন
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন