রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ) থেকে নাজমুল হোসেন
শিক্ষাবান্ধব প্রধানমন্ত্রী সেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রণালয়ের সফল শিক্ষামন্ত্রী দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে যখন অগ্রণী ভূমিকা নিয়ে মাল্টিমিডিয়ায় উন্নত লেখাপড়ার সুযোগ সৃষ্টি করে যাচ্ছেন ঠিক সেই মুহূর্তে দীর্ঘদিন ধরে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান চলছে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ শরিফিয়া ফাজিল (স্নাতক) মাদরাসার একাডেমিক ভবনটি ৫ বছর পূর্বে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। ফলে ৫ শতাধিক শিক্ষার্থীকে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করতে হচ্ছে। এতে করে শিক্ষার গুণগত মান যেমন নিম্নমুখী হচ্ছে তেমনী দিন দিন শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমতে শুরু করেছে। শত বছরের প্রাচীন এই প্রতিষ্ঠানটি ১৯৫৮ সালে ফাজিল তথা ডিগ্রি শ্রেণীতে উন্নিত হয়। মাদরাসার জরাজীর্ণ ভবনটি এতই পুরাতন যে এর নির্মাণ সালই কেউ বলতে পারে না। এই ভবনটি অফিস, লাইব্রেরি ও কম্পিউটার ল্যাব হিসেবে ব্যবহার করা হয়। নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে কাজ করার কারণে ভবনটিতে ফাঁটল ধরায় বিগত উপজেলা নির্বাহী অফিসার রায়হান কবির মাদরাসা পরির্দশন করে ক্লাস রুমগুলো ঝুঁকিপূর্ণ বলে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন। পরিত্যক্ত ঘোষণার পর থেকে শিক্ষকবৃন্দ ঝুঁকি এড়াতে শিক্ষার্থীদের মাদরাসা মাঠে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করছেন। এ দিকে এরূপ পরিবেশে শিক্ষার্থীরা পড়ালেখায় মনোযোগী হতে পারছে না। ফলে মাদরাসাটির পড়ালেখার মান ক্রমান্নয়ে নিম্নমুখী হচ্ছে এবং ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান জানান, মাদরাসার একাডেমিক ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণার পর ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে সরকারের বিভিন্ন দফতরে আবেদন করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। ভবনটি ফাঁটল ধরে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় শঙ্কা নিয়ে শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নিচে পাঠ গ্রহণ করতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা শিক্ষা অফিসার জাকির হোসেন বলেন, মাদরাসার ভবন নির্মাণের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে ফ্যাসিলিটিস বিভাগ। এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসার লায়লা খানম বলেন, অফিসিয়ালভাবে বিষয়টি জানানো হলে আমি যথাযথ ব্যবস্থা নেব। স্থানীয় এমপি গাজী ম.ম আমজাদ হোসেন মিলন বলেন, আমি ইতোমধ্যে মাদরাসার মানসম্মত একাডেমিক ভবন নির্মাণের জন্য শিক্ষামন্ত্রী বরাবর ডিও দিয়েছি। অতিসত্তর মাদরাসার ভবন নির্মাণের জন্য বরাদ্দ পাওয়া যাবে বলে আশা করছি। উল্লেখ্য মাদরাসা প্রতিষ্ঠার ইতিহাস থেকে জানা যায়, আজ থেকে ৫শ বছর পূর্বে শাহ শরিফ জিন্দানী (র.) ইসলাম ধর্মপ্রচারের জন্য ভারত থেকে বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার হিন্দু অধ্যুষিত নওগাঁয় আগমন করেন। নওগাঁর হিন্দু রাজা বান শিং কে পরাজিত করে ইসলাম ধর্ম প্রচার করেন এবং শাহী মসজিদ নামে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। শত বছর পূর্বে তৎকালীন অভিজাত মুসলিম পরিবারের মানুষ তারই নামে মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন যা জেলার প্রাচীনতম ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন