শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

শীতে কাঁপছে উপক‚লীয় জনপদ : কমেছে পর্যটক

আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) থেকে জাহেদুল হক | প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

জেঁকে বসা কনকনে শীতে কাঁপছে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপক‚লীয় জনপদ। শৈত্যপ্রবাহে, ঘন কুয়াশা ও প্রচন্ড ঠান্ডায় নাকাল হয়ে পড়েছে জনজীবন। শীতজনিত বিভিন্ন রোগ-বালাই দেখা দিয়েছে। হাসপাতালে প্রতিদিনই বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বোরো ধানের বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসল। এছাড়া পর্যটন কেন্দ্র পারকি সৈকতে কমে গেছে পর্যটকদের উপস্থিতি।
জানা যায়, গত কয়েকদিনের তীব্র শীতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষ। আর বিপাকে পড়েছে দৈনন্দিন খেটে খাওয়া মানুষজন। সকালে প্রচন্ড কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে চারদিক। দিনের মাঝামাঝি সময় সূর্যের দেখা মিললেও কমছে না শীতের তীব্রতা। সেই সাথে তিনদিন ধরে বইছে শৈত্যপ্রবাহ। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না মানুষ। শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। আর শীতে নাকাল হয়ে পড়েছে বিভিন্ন বয়সের মানুষ।
এদিকে, প্রচন্ড শীতের কারণে দেখা দিয়েছে বিভিন্ন ঠান্ডাজনিত রোগ-বালাই। হাসপাতালে বেড়েছে নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, আমাশয়, হাঁপানি, পেটেরপীড়াসহ বিভিন্ন রোগীর সংখ্যা। আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার ডা. ঈশিতা আইরিন জানান, তীব্র শীতে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শাহজাহান (২১), সুমিত (২৩), সাদিয়া (১), তৌহিদ (১৫ মাস), রওশন আরা বেগম (৬৫), কলিমউল্লাহ (১৮), আফসান সায়েদ (১৮মাস), সামির (১৮মাস), অহনা দাশ (৩মাস), আবদুল আজিজ (১৭), মাহমুদ (৮মাস), নাঈমা (৭মাস), উর্মি আক্তার (৩), সামির (২মাস), তাহমিনা (৫), সায়েদ (৮মাস), সাঈদ (১১মাস), মিসকাত (১৯ মাস) ও নারগিস আক্তার (২৩)সহ ৪০ জন রোগী উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এদের বেশিরভাগ শিশু ও বৃদ্ধ। এছাড়া আরও দুই শতাধিক রোগী বহির্বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছে। রোগীদের ভিড়ে চিকিৎসকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে হাসপাতালে সিট সংকট থাকলেও পর্যাপ্ত ওষুধ রয়েছে বলে জানা গেছে।
ঘন কুয়াশা ও প্রচন্ড শীতে বোরোর বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে জানিয়ে উপজেলার জুঁইদন্ডী এলাকার কৃষক আবছার মিয়া বলেন, শীতের কারণে তার বোরো বীজতলা ও সবজি ক্ষেতে ছত্রাক জাতীয় রোগ দেখা দিয়েছে। এতে বাড়তি অর্থ ব্যয় করে ফসলে ছত্রাক জাতীয় ওষুধ স্প্রে ছেঁটানো হচ্ছে।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, তীব্র শীতের কারণে স্বাভাবিক কাজ-কর্ম করতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে প্রায় মানুষ। বিশেষ করে বৃদ্ধ ও শিশুরা নিদারুন কষ্টে দিনযাপন করছে। কাজ না থাকলে ঘরের বাইরে কেউ বের হচ্ছেন না। এদিকে, ভরা পর্যটন মৌসুম হলেও পারকি সমুদ্র সৈকতে কমে গেছে পর্যটকের উপস্থিতি। শীতের কারণে গত তিনদিন ধরে আগের মতো পর্যটক আসছে না পারকি সৈকতে। পারকি সৈকতের ভ্রাম্যমান ফটোগ্রাফি মোহাম্মদ তারেক (১৮) বলেন, অন্যান্য দিনে পর্যটকদের ছবি তুলে হাজার দেড়েক টাকা আয় করা যেতো। শীতের কারণে সৈকতে পর্যটকের আনা-গোনা কমে যাওয়ায় খরচও মিলছে না। পারকি সৈকতের মাছরাঙা হোটেলের মালিক আনিস খাঁন জানান, কয়দিন ধরে পর্যটক কমে যাওয়ায় দোকানের কর্মচারীদের বেতন খরচও উঠছে না। এভাবে আর কিছুদিন শীত থাকলে দোকান বন্ধ করে দেয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রাখাল চন্দ্র বড়–য়া জানান, হঠাৎ প্রচন্ড ঠান্ডা পড়ার কারণে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া দেখা দিয়েছে। আমরা রোগীদের সচেতনতামূলক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। তবে ভয়ের কারণ নেই হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ রয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন