বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

পানি ছাড়াই চারা উৎপাদন

বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে পানি ছাড়াই বোরো মৌসুমের জন্য শুকনো বীজতলায় চারা উৎপাদন পদ্ধতি চালু করেছেন স্থানীয় কৃষি অফিস। প্রাথমিকভাবে উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে বেশ কয়েকজন কৃষক এ বীজতলা তৈরিতে এগিয়ে এসেছে। পানি ছাড়া কম খরছে বোরোর এ বীজতলা দৃশ্যমান হওয়ার পর খবর পেয়ে স্থানীয় অন্যান্য কৃষকদের মধ্যে বেশ সাড়া জাগিয়েছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগের উদ্যোগে কয়েকজন কৃষকের জমিতে পরীক্ষামূলক প্রয়োগকৃত এ পদ্ধতিটি দেখার জন্য এলাকার অন্যান্য কৃষকরা ভিড় করতে শুরু করেছে।

জানা যায়, উপজেলার পূর্ব গোমদÐী, সারোয়াতলী ও জ্যৈষ্ঠপুরায় পরীক্ষামূলকভাবে শুকনো জমিতে বোরো ধানের এ বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বোয়ালখালীর সর্বত্রই এবং সব কৃষকের কাছে এ বীজতলা তৈরির খবর ও প্রযুক্তি পৌঁছে দেয়া হবে বলে জানান উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকতারা।
এ বীজ তলায় প্রথম বারের মতো সাফল্য পাওয়া পূর্ব গোমদÐী ইউনিয়নের কৃষক আনোয়ার আজিম চৌধুরী, জ্যৈষ্ঠপুরা গ্রামের বিনোধ চৌধুরী বলেন, প্রথমদিকে আমরা বিষয়টি আমলেই নেইনি। পরে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে নিজেদের প্রায় ১০ শতক শুকনো জমিতে হালচাষ, পরিমাণ মতো জৈবসার, ডিএসপি, পটাশ সার প্রয়োগ করে বীজতলার উপযোগী করে তুলি। বীজতলা প্রস্তুতের পর ধানের বীজগুলো দুইদিন পানিতে ভিজিয়ে রাখি, এরপর পানি ঝরিয়ে রেখে দিয়ে দেখি প্রতিটি ধানের বীজ থেকে অঙ্কুর বের হয়েছে। অঙ্কুরসহ ধানের বীজগুলো বীজতলায় ছিটিয়ে উপরে হালকা মাটি দিয়ে ঢেকে দেই। এরপর বীজতলাটি পলিথিন দিয়ে কয়েকদিন পর্যন্ত ঢেকে রাখি। পরে পলিথিন সরিয়ে নিয়ে অবাক হয়ে দেখি বীজতলায় শতভাগ চারা গজিয়েছে এবং সেগুলো সবুজ আকার ধারণ করেছে। আবার বীজ বপনের মাত্র ২১ দিন পর দেখি চারাগুলো উত্তোলনের উপযোগী হয়েছে। এ ছাড়া পানির বীজতলা থেকে এ শুকনো বীজতলার চারা অনেকটাই মজবুত। আগামীতে আমরা আরো বেশি করে এ বীজতলা করার চেষ্টা করব। তবে এ বিষয়ে সরকার ও স্থানীয় কৃষি অফিস আমাদের যথাযথ সহযোগিতা অব্যাহত রাখলে সব কৃষক এ পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরিতে এগিয়ে আসবে। সেই আরো অনেক সফলতা আসবে আমাদের দেশের অর্থনীতিতে।
বোয়ালখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু জাফর মো. মঈনুদ্দিন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের দেশে প্রতিবছরই বোরোর বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এতে স্থানীয় কৃষকরা চাষাবাদ থেকে আগ্রহ হারাচ্ছে। তাই তীব্র শৈত্যপ্রবাহ, পানি সংকট, কোল্ড ইনজুরি থেকে বোরোর বীজতলা রক্ষায় শুকনো জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে এ ধরনের বীজতলা তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ ধরনের শুকনো বীজতলায় পরিশ্রম ও খরচ অনেক কম। পানি সেচ দেয়ারও প্রয়োজন পড়ে না। জলীয়বাষ্পের প্রভাবে পলিথিনে জমাটবাঁধা পানিতে বীজতলা ভেজা থাকে। এতে মাটির উর্বরতাশক্তি বাড়ে। তিন সপ্তাহের মধ্যে গজানো চারা রোপণ করা যায়। চারার বয়স কম হওয়ায় ফলনও বেশি হবে বলে তিনি ধারণা করছেন। শুকনো পদ্ধতির পরীক্ষামূলক বোরোর এ বীজতলা তৈরির বিস্তার ঘটাতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন