শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

সবকিছু থাকলেও কার্যক্রম নেই

দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) থেকে মোঃ গোলাম ফারুক | প্রকাশের সময় : ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

দুপচাঁচিয়া উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরি
দুপচাঁচিয়া উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরীটির শুধুমাত্র সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার অভাবে সবকিছু থাকলেও কার্যক্রম নেই বললেই চলে। বই আমাদের অবসরের সঙ্গী। বই মানুষের চিত্য বিনোদনের নির্মল উপাদান। অজানাকে জানা, অচেনাকে চেনার অনন্য উপায় হচ্ছে বই। কেননা বই হচ্ছে জ্ঞানের প্রতিক। বইয়ের সঙ্গে যার যত বেশী সম্পর্ক তার জ্ঞানের গভিরতা ততই প্রখর। সমাজের জ্ঞানীদের আলাদা একটি মর্যাদা আছে। আর আছে বলেই সমাজ ব্যবস্থা এখনো অতটা অধঃপতিত হয় নি। মানব জীবনে বইয়ের ব্যাপক প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কেননা বই হচ্ছে মানব সভ্যতার শ্রেষ্ঠ প্রকাশ মাধ্যম। তারই প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে দুপচাঁচিয়া উপজেলা প্রশাসন বিকেন্দ্রীয় করণের সাথে সাথে ১৯৮৪ সালে উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরীটি স্থাপিত হয়। উপজেলা প্রশাসন চত্বরে একটি বিশাল কক্ষ নিয়ে এই লাইর্বেরীর কার্যক্রম শুরু হয়। সু-সজ্জিত লাইব্রেরীটিতে শুরুতেই প্রায় ১ হাজার ৮শ বিভিন্ন প্রকার বই স্থান পায়। এর মধ্যে গল্প, উপন্যাস, কবিতা সহ এইচ,এস,সি ছাত্র-ছাত্রীদের গুরুত্বপূর্ণ বইও ছিল। শুরুতেই লাইব্রেরীটির পাঠকদের মাঝে বেশ সাড়া জাগায়। যুবক সহ অনেকেই জ্ঞান চর্চার একটি বড় মাধ্যম হিসেবে এই লাইব্রেরীটিকে বেছে নেই। অনেক স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরাও অবসরে লাইব্রেরীতে ছুটে আসে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে পদাধিকার বলে সভাপতি নিয়োগ করে একটি শক্তিশালী কমিটির মাধ্যমে খন্ডকালীন একজন শিক্ষক লাইব্রেরীটি পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে। কোন এক সময় উপজেলা পরিষদে স্থান সংকুলন না হওয়ায় নতুন অফিসগুলোর কার্যক্রম উক্ত লাইর্বেরীতেই চলতে থাকে। ফলে লাইব্রেরীর কাজকর্ম ভাটা পড়ে। পরবর্তীতে প্রশাসন চত্বরে নতুন ভবনে অফিসগুলো স্থানান্তরিত হলেও প্রায় ১৬ বছর যাবত লাইব্রেরীটির কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। এ সময় লাইব্রেরীর অনেক মূল্যবান বই পত্র পোকায় খেয়ে ফেলেছে। আসবাবপত্রগুলোও নষ্ট হয়ে গেছে। প্রায় ৮ বছর যাবত স্থানীয় ডিএস মাদ্রাসার লাইব্রেরীয়ান মতিউর রহমান কে লাইব্রেরীটির খন্ডকালীন লাইব্রেরীয়ানের দায়িত্ব পালন করছেন। গতকাল রোববার একান্ত এক সাক্ষাতকারে তিনি জানান, মাসিক ৮শ টাকার সম্মানির মাধ্যমে প্রতিদিন বিকেল ৫ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত প্রায় ২ ঘন্টা তিনি লাইব্রেরীটি খোলা রাখেন। এ সময় অনেকেই পত্রিকা পড়ার জন্য এলেও বই পড়ার কোন পাঠক আসে না বললেই চলে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহেদ পারভেজ কে সভাপতি ও অধ্যক্ষ আবুল বাসারকে সাধারন সম্পাদক করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট লাইব্রেরীটির পরিচালনা কমিটি রয়েছে। কমিটি কাগজ কলমের মাধ্যমে সীমাবদ্ধ থাকলেও লাইব্রেরীটির কার্যক্রম প্রায় নেই বললেই চলে। এ ব্যাপারে গতকাল ৪ ফেব্রুয়ারি রোববার লাইব্রেরীটির পরিচালনা কমিটির সাধারন সম্পাদক অধ্যক্ষ আবুল বাসার এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি “দৈনিক ইনকিলাব” কে জানান, মানুষ আর আগের মতো লাইব্রেরী মুখী নয়। তা ছাড়াও লাইব্রেরী সংলগ্ন মুক্ত ড্রেন যাওয়ার কারনে প্রশাবের গন্ধে লাইর্বেরীটির পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। যা বর্তমানে বই পড়ার স্বাস্থ্য সম্মত জায়গাও নয়। লাইব্রেরীটি অন্যত্র স্থানান্তরিত করলে তা পুনরায় চালু করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান। উপজেলা শিক্ষার মান উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি আলহাজ¦ আব্দুর রাজ্জাক ও উপজেলা লেখক সমিতির সভাপতি সিরাজুল হক মন্টু জানান, মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে লাইর্বেরীর বিকল্প নেই। লাইর্বেরী হচ্ছে সব সভ্যতার উন্নতির সেতু বন্ধন তারা এই ভাষার মাসেই দুপচাঁচিয়ার এই পাবলিক লাইর্বেরীটি পুনরায় চালুর দাবি জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন