রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

রাউজানে পানির অভাবে জমি অনাবাদি

এবার ১৮ হাজার ৫৮০ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষমাত্রা

| প্রকাশের সময় : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

রাউজান (চট্টগ্রাম) থেকে এম বেলাল উদ্দিন: রাউজানে পানির অভাবে বহু ফসলি জমিতে বোরো ধানের চাষ ব্যাহত হচ্ছে। তবে যেসব এলাকায় পানির ব্যবস্থা রয়েছে, সেসব এলাকার কৃষকরা চারা রোপন করার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে ফসলি জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ শুরু করছেন কৃৃষকরা। আগের দিনে গরু-মহিষের মাধ্যমে কৃষকরা চাষাবাদ করলেও বর্তমানে প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বদলে দিয়েছে কৃষি খাতকে। যে লাঙল-জোয়াল আর ‘হালের বলদ’ ছিল কৃষকের চাষাবাদের প্রধান উপকরণ, সে জায়গা এখন দখল করে নিয়েছে ‘কলের লাঙল’ ট্রাক্টর (জমি চাষের যন্ত্র)। কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে চাষাবাদের কারণে একদিকে যেমন সময়, শ্রম ও অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে, তেমনি ফসলের উৎপাদনও বেড়েছে। ফলে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের। কেবল জমি চাষই নয়, জমিতে নিড়ানি, সার দেয়া, কীটনাশক ছিটানো, ধান কাটা, মাড়াই, শুকানো ও ধান থেকে চাল সবই আধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে। সকাল থেকে সারাদিন ফসলি জমিতে বোর ধানের চারা বীজতলা থেকে তুলে রোপন করছেন। এলাকার কৃষকেরা বোরো ধানের চারা রোপন করার জন্য দৈনিক ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা বেতন দিয়ে চাষাবাদের কাজ করাচ্ছেন। সরজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, রাউজানের হলদিয়া, ডাবুয়া, চিকদাইর, গহিরা, নোয়াজিশপুর, বিনাজুরী, কদলপুর, রাউজান, পূর্বগুজরা, পশ্চিমগুজরা, উরকিরচর, নোয়াপাড়া, বাগোয়ান, পাহাড়তলী ইউনিয়ন, রাউজান পৌর এলাকার আলী খীল, ওয়াহেদার খীল, ঢালারমুখ, পূর্বরাউজান, পশ্চিম রাউজান, ঢেউয়া পাড়া, হাজীপাড়া, সাপলঙ্গা, গণি হাজীপাড়া, দলিলাবাদ, ছত্রপাড়া, ছিটিয়া পাড়া, সুলতানপুর, কাজীপাড়া, পশ্চিম সুলতানপুর, মোবারক খীল, দক্ষিণ গহিরা, পূর্বগহিরা, পশ্চিমগহিরা, উত্তর সর্তা এলাকার ফসলি জমিতে সেচের পানি দিয়ে এলাকার কৃষকেরা বোরো ধানের চাষাবাদ শুরু করেছেন। এসব এলাকার অনেক জমি পানির অভাবে চাষাবাদ হচ্ছে না। তবে যে সকল এলাকায় চাষাবাদ হচ্ছে না, এসব এলাকায় কৃষকরা নানা রকম সবজি চাষ করে তাদের চাহিদা মেটাতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। রাউজান উপজেলা প্রশাসন ফসলি জমিতে চাষাবাদের জোর দিলেও নানা কারণে অনেক ফসলি জমি অনাবাদি থেকে যাচ্ছে। তবে অন্য বছরের তুলনায় এ বছর শুষ্ক মৌসুমে বোরো ধানের চাষাবাদ বাড়বে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার বেলায়েত হোসেন জানান, বোরো ধানের চাষাবাদের জন্য প্রতিটি এলাকায় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে কৃষক ও সেচ প্রকল্পের ম্যানেজারদের ডেকে উপজেলা উদ্যোগে সমাবেশ করে এলাকার কৃষকদের বোরো ধানের চাষাবাদের জন্য উৎসাহিত করা হয়। উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় এ বৎসর শুষ্ক মৌসুমে ১২০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড জাত ও চার হাজার ৫২৫ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশিল জাতের বোরো ধানের চাষাবাদসহ মোট চার হাজার ৬৪৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এই পর্যন্ত এক হাজার ৬৭০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চারা রোপন করা হয়েছে। বাকি জমিতে বোরো ধানের চারা রোপন চলমান রয়েছে। রাউজানে বোরো ধানের চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হলে এ বছর রাউজানে বোরো ধানের চাষাবাদ থেকে ১৮ হাজার ৫৮০ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন করা যাবে আশা করেন উপজেলা কৃষি অফিসার। রাউজানে ডিজেলচালিত সেচ পাম্প ৮৬০টি, বিদ্যুৎচালিত সেচপাম্প ৭৭টিসহ ছোট-বড় ৯৬০ সেচপাম্পের মাধ্যমে চাষাবাদে সেচ প্রদান করছে হচ্ছে। এ ছাড়া গভীর নলক‚প, টিউবওয়েলসহ ছোট ছোট সেচপাম্প চালু রয়েছে। এ ছাড়া রাউজানের উঁচু এলাকায় খালের মধ্যে বাঁধ দিয়ে উজান থেকে নেমে আসা খালের পানি আটক করে ওই পানি সেচের মাধ্যমে কৃৃষকেরা বোরো ধানের চাষাবাদ করছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন