ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন, তার যৌথ পরিবারের সদস্য এবং মন্ত্রী-সচিবসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা মিলে ৪ হাজার ২শ’রও বেশি ইরাকির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। ইরাকে একটি ‘জবাবদিহিতা ও ন্যায়বিচার সংক্রান্ত কমিশন’ এই তালিকা তৈরি করেছে। তালিকার শীর্ষে রয়েছে সাদ্দাম হোসেনের নাম। এছাড়াও রয়েছে, তার সন্তান, নাতিনাতনী এবং আত্মীয়স্বজনদের নাম। রয়েছে সাদ্দাম হোসেনের মন্ত্রী, সচিব, বাথ পার্টির বিভিন্ন পর্যায়ের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের নাম। এদের অনেকেই বর্তমানে জেলে রয়েছেন বা ইতোমধ্যেই ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। তালিকায় রয়েছে সাদ্দাম হোসেনের কাজিন আলী হুসাইন আল-মাজিদর নাম যাকে কেমিক্যাল আলী বলে ডাকা হত। ১৯৯৮ সালে কুর্দিদের ওপর গ্যাস হামলা চালানোর দায়ে ২০১০ সালে তার ফাঁসির আদেশ কার্যকর করা হয়। তালিকায় রয়েছে সাদ্দাম হোসেনের প্রভাবশালী পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারেক আজিজের নামও। সাদ্দাম হোসেনের ক্ষমতাচ্যুতির সময় তিনি উপ-প্রধানমন্ত্রী পদে ছিলেন। প্রশাসনের এই একমাত্র খ্রিস্টান সদস্যকে ২০১৩ সালে মৃত্যুদÐ দেয়া হয় এবং এর দু’বছর পর কারাগারে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। জর্দানে অবস্থানরত তার ছেলে জায়েদ এই তালিকাকে আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটে জেতার জন্য স্টান্টবাজি বলে আখ্যায়িত করেছেন। এই তালিকা প্রকাশের আগে গত রোববার তিনি এএফপিকে বলেন, ‘আমরা বিগত ১৫ বছর ধরে প্রচÐ চাপ এবং অবিচারের মুখোমুখী, যথেষ্ট হয়েছে, এই তথাকথিত সরকারের আক্রোশ কখন শেষ হবে?’
তিনি অস্বীকার করে বলেন, তাদের পরিবারের কোন সম্পদ নেই। তার পিতার বাগদাদের বাড়ি ইতোমধ্যেই প্রখ্যাত শিয়া রাজনীতিবিদ আম্মার আল-হাকিম দখল করে নিয়েছেন।
তালিকায় নাম থাকা ব্যক্তিদের সম্পত্তি কী আছে, কোথায় আছে তা এখন খুঁজে বের করার কাজ চলছে। ২০০৩ সালে ইরাকে মার্চ-এপ্রিল মাসে মার্কিন-নেতৃত্বাধীন অভিযানে সাদ্দাম হোসেন ক্ষমতাচ্যুত হন। জুলাই মাসে মসুল শহরে আরেক অভিযানে নিহত হন তার দুই ছেলে উদে ও কুসে হোসেন। এরপর সে বছরই ডিসেম্বরের ১৩ তারিখ তিকরিতের কাছে একটি খামার বাড়িতে মার্কিন সেনাদের হাতে ধরা পড়েন সাদ্দাম হোসেন।
মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধসহ একাধিক অপরাধের দায়ে তার বিচার হয় এবং মৃত্যুদÐ দেয়া হয়। ২০০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়। সূত্র : এএফপি, বিবিসি, ডিজিটাল জার্নাল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন