শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

লক্ষ্মীপুরে সুপারিতে কেমিক্যাল মিশ্রণ হুমকির মুখে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য

| প্রকাশের সময় : ২৭ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

লক্ষ্মীপুর থেকে এস এম বাবুল (বাবর) : লক্ষ্মীপুর পুর জেলার বিভিন্ন স্থানে জলাশয়গুলোতে অপরিকল্পিতভাবে কেমিক্যালের মিশ্রনদিয়ে পাকা সুপারি জলাসয়ে ভেজানো হচ্ছে। ভিজা সুপারীর দুর্গন্ধে পরিবেশ দুষণের পাশাপাশি ধ্বংস হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের জলজ প্রাণি। অন্যদিকে রং ও বিষাক্ত কেমিক্যালের মিশ্রনের এসব সুপারি মানবদেহে মরণব্যাধি ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্বক হুমকির কারন হয়ে দাড়িয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের তদারকির ও ভ্রাম্যমাণ অভিযান জোরদার না থাকায় একটি চক্র এসব করে আসছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
স্থানীয় কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ল²ীপুরের প্রধান অর্থকরী ফসল সুপারি। এবার প্রায় ৩শ’ কোটি টাকা মূল্যের সাড়ে ১২ হাজার টন সুপারির ফলন হয়েছে এ জেলায়। মৌসুমে স্থানীয় বাজারে সুপারির মূল্য কিছুটা কম থাকে। এখানকার উৎপাদিত সুপারি কেউ রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করেন, আবার অনেকে নদী-নালা, খাল, ডোবা-পুকুরসহ বিভিণœ জলাসয়ে ভিজিয়ে সংরক্ষন করে এবং পরে ভালো দামে বিক্রি করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার প্রায় সব এলাকার বিভিন্ন ডোবা-নালায় পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয়েছে সুপারি। বর্তমানে ৪০ থেকে ৫০ ভাগ সুপারি বিভিন্ন স্থানে জলাশয় গুলোতে ভেজানো রয়েছে। সুপারির কাঁচা স্বাদ ধরে রাখতে নির্দিষ্ট পাকা হাউসে ভেজানোর নিয়ম থাকলেও বেশি লাভের আশায় তা মানছেননা ব্যবসায়ী ও মজুদদাররা।
স্থানীয়রা জানান, উম্মুক্ত জলাশয়ে সুপারি ভেজানোর ফলে পানি ব্যবহার করতে পারছেনা তারা, মাছ চাষ ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি পঁচা সুপারির দুর্গন্ধে আশপাশে চলাচল করতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় এলাকার লোকজন ও পথচারীদের।
ল²ীপুরের সদর উপজেলা চররুহিতা, দালালবাজার ও রায়পুরের রাখালিয়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে শ্রমিকরা স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে সুপারিতে বিষাক্ত রং মেশাচ্ছে। পানিতে দীর্ঘদিন সুপারি সংরক্ষণ করলে রং নষ্ট হয়ে যায়। যে কারণে অসাধু ব্যবসায়ীরা সুপারিতে রং মিশিয়ে চকচকে করে থাকে। পরে চড়া দামে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হয় বিষাক্ত কেমিক্যাল ও রং মিশ্রিত এসব সুপারি।
পরিবেশবাদী সংগঠন (ইউএস) এর ল²ীপুর জেলা শাখার সভাপতি অহিদুল হক বাবলু জানান, সুপারি প্রধান এলাকা ল²ীপুরে এক শ্রেনির অসাধু ব্যবসায়ীরা সুপারি উম্মুক্ত জলাশয়ে ভিজিয়ে পচানোর ফলে জলজ উদ্ভিত ধংস হয়ে অক্সেজেন কমে হুমকির মুখে পড়ছে পরিবেশ। প্রশাসনের সহায়তায় এসব করা হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসন সচেতন হলে এ অবৈধ কাজ বন্ধ করা সম্ভব বলে জানান পরিবেশবাদী সংগঠনের এ নেতা।
ল²ীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. আনোয়ার হোসেন জানান, সুপারিতে বিষাক্ত ক্যামিকেল ও রং মেশানোর ফলে মানবদেহে বিভিন্ন রোগসহ ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এতে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন