শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

শুকিয়ে যাওয়া নাগর নদ - বুকে নেই হাঁটু পানি কৃষক করছেন বোরো আবাদ

প্রকাশের সময় : ৩ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মো. গোলাম ফারুক, দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) থেকে
দুপচাঁচিয়া উপজেলার কোল ঘেঁষে বয়ে যাওয়া স্রোতস্বি নাগর নদ এখন প্রায় মৃত নদে পরিণত হয়েছে। ‘আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে, বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে’। কবিতার এ পংক্তিটির তৎকালীন সময়ে সত্যতা থাকলেও বর্তমানে স¤পূর্ণ তার উল্টো। এ নদের চিত্র হয়েছে। জানা গেছে, স্বাধীনতার পূর্বে থেকে স্বাধীনতার পরবর্তী আশির দশক পর্যন্ত এ নদ ছিল জৌলুসে পরিপূর্ণ। সে সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নৌ-পথে উপজেলার সদর বন্দর তিন মাথাসহ অন্যতম ব্যবসায়ী স্থান হিসেবে পরিচিত বন্দর নগর তালোড়ার ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন ধরনের মালামাল এ নদ পথে আনা নেয়া করতো। বর্ষাকালে পানিতে টইটুম্বুর এ নদে পাল তোলা নৌকাসহ বিভিন্ন ধরনের নৌযান যাতায়াত করতে দেখা গেছে। এছাড়া জলজপ্রাণী শুশুকের ডিগবাজি দেখতে এলাকার শিশু-কিশোর ও বয়োবৃদ্ধরা নদের কিনারে ভীড় জমাতো। কিন্তু বর্তমানে নাব্যহীনতা ও বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক কারণে সে নাগর নদ আর শুষ্ক মৌসুমে পানি থাকে না। আর এ সুযোগে নদ কিনারে অবস্থিত প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রামের লোকজন বোরো ধানের বীজতলা, ধান চাষসহ বিভিন্ন ধরনের মৌসুমি শাকসবজি ও রবি শস্যের চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। বর্তমানে এ চিত্র দেখে আর মনে হয় না এই সেই স্রোতস্বিনী নাগর নদ। এ ব্যাপারে উপজেলার বন্দর নগর তিনমাথা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মরহুম আলহাজ ময়েজ সরদারের পুত্র আলহাজ আব্দুর রাজ্জাক, মৃত ইসমাইল হোসেন সরদারের পুত্র আতাউর রহমান সরদার বাবলা, মৃত প্রভাষ বসাকের পুত্র প্রান্তোষ বসাক, শ্যাম সুন্দর আগরওয়ালা ও তালোড়ার পরানপুর গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি আলহাজ আয়েন উদ্দিন প্রাং, তালোড়া বাজারের আলহাজ আনোয়ারুল হক তালুকদার, ধলাহার গ্রামের সন্তোষ চৌধুরী ‘দৈনিক ইনকিলাব’-কে জানান, দুপচাঁচিয়া উপজেলার কোল ঘেঁষে প্রবাহিত এ নদ পথে বিভিন্নস্থান থেকে আসা প্রতিদিন শত শত নৌকা ও বেদে বহরের দল দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরসহ বন্দর নগর তালোড়ায় সে সময় ভীড় জমাতো। কিন্তু আজ নদে পানি শূন্যতার জন্য সেই চিত্র আর চোখে পড়ে না। তাছাড়া বর্ষা মৌসুমেও আগের মতো এ নদের প্রবল স্রোত আর নেই। নদের বক্ষে ও তীর ঘেঁষে মাটি কাটা ও বালু উত্তোলনের ফলে পরিবেশও হচ্ছে হুমকির সম্মুখিন। পানি শূন্যতার জন্য নদের তীরবর্তী এলাকার কৃষকরা আর আগের মতো তাদের ক্ষেতে সেচ কাজেও পানি দিতে পারছে না। তবে এলাকাবাসী মনে করেন, খনন কাজ করে নাব্যতা বাড়ালে কিছুটা হলেও পানি শুষ্ক মৌসুমে ধরে রাখা সম্ভব হবে এবং এলাকার চাষাবাদেও কৃষকরা উপকৃত হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন