২০১৬ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে এবার আজীবন সম্মাননা পুরস্কারে ভূষিত হতে যাচ্ছেন বহুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নায়িকা ববিতা। শিঘ্রই তিনি প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে এই সম্মাননা গ্রহণ করবেন। অভিনয় জীবনের সর্বোচ্চ প্রাপ্তি হিসেবে ‘আজীবন সম্মাননা’কে সেরা অর্জন হিসেবে বিবেচনা করে ববিতা বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার পতাকা হাতে নিয়ে এদেশকে বিশ্ব দরবারে পরিচিত করার জন্য আমি বুড়িগঙ্গা থেকে ভলগা হয়ে আটলান্টিক ও মিসিসিপি অতিক্রম করে ঘুরেছি একের পর এক দেশ ও মহাদেশ। চলচ্চিত্রে অভিনয়ের শুরু থেকে সবসময় আমি গল্প, চরিত্র এমনভাবে পছন্দ করতাম যেন সেই গল্প ও চরিত্র সমাজের উপকারে আসে, দেশের উপকারে আসে। প্রয়োজনে আমি বিনা পারিশ্রমিকেও কাজ করেছি। চলচ্চিত্রে যার অনুপ্রেরণায় আমার পদার্পণ তিনি শ্রদ্ধেয় জহির রাহয়ান। এরপর যাদের নাম আমি বলতে চাই তারা হচ্ছেন শ্রদ্ধেয় খান আতাউর রহমান, সুভাষ দত্ত, নারায়ণ ঘোষ মিতা, কাজী জহির, শেখ নিয়ামত আলী, আব্দুল্লাহ আল মামুন, আমজাদ হোসেন, চাষী নজরুল ইসলাম এবং সর্বোপরি অভিনয়ের বাইরেও যিনি আমাকে পরিবারের একজন মানুষ হিসেবেই সহযোগিতা করেছেন তিনি হচ্ছেন আমাদের নায়করাজ রাজ্জাক। বিশ্ববরেণ্য অস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের প্রতি আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ, কারণ তার অশনি সংকেত চলচ্চিত্রে অভিনয় করেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমার পরিচিতি গড়ে উঠে। আমার মায়ের মৃত্যুর পর আমাকে আগলে রেখেছেন আমার বড় বোন সূচন্দা আপা এবং সবসময়ই ছায়ার মতো পাশে থেকেছে আমার ছোট বোন চম্পা। আমার একমাত্র সন্তান অনিকই এখন আমার পৃথিবী, আমার বেঁচে থাকার প্রেরণা। অবশ্যই এদেশের সিনেমাপ্রেমী দর্শকের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ তাদের ভালোবাসা, উৎসাহে আমি নিজেকে এগিয়ে নিয়ে গেছি। হয়েছি আজকের পরিপূর্ণ ববিতা। বর্তমান সরকার চলচ্চিত্র বান্ধব, শিল্প অনুরাগী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমার গভীর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তিনি বলেন, আমার ক্যারিয়ারের স্বর্ণালী সময়ে ফ্রান্সের লামোদে, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক টাইমস, রাশিয়ার প্রভোদা ম্যাগাজিন এবং লন্ডনের গার্ডিয়ান পত্রিকায় আমাকে নিয়ে প্রকাশিত সংবাদও আমাকে গর্বিত করে এবং সর্বোপরি দেশের সংবাদ মাধ্যমের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, কারণ তারা আমাকে আমার ভুল ত্রæটি ধরিয়ে দিয়ে আমাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে গেছেন।’ এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ সাতবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন ববিতা। ‘বাদী থেকে বেগম’, ‘বসুন্ধরা’, ‘নয়নমনি’, ‘পোকা মাকড়ের ঘর বসতি’, ‘রামের সুমতি’, ‘কে আপন কে পর’ ও ‘হাছন রাজা’ চলচ্চিত্রের জন্য তিনি এই সম্মাননায় ভূষিত হন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন