শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

কুড়িগ্রামে বেকারত্বের অভিশাপে ধুঁকছে ন্যাশনাল সার্ভিসের ৩০ হাজার কর্মী

কুড়িগ্রাম থেকে শফিকুল ইসলাম বেবু | প্রকাশের সময় : ১০ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

কুড়িগ্রামে বেকারত্বের অভিশাপে ধুকছে ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির ৩০ হাজার বেকার যুবক-যুব মহিলা কর্মী। খন্ডকালিন কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়ে জীবন গড়ার স্বপ্ন দেখলেও আজ তারা পরিবারের ভার হয়ে দাঁড়িয়েছেন। চাকরি স্থায়ীকরণে সভা সমাবেশ-মানববন্ধনেও সাড়া নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। সরকার মহলের সাড়া না পাওয়ায় হতাশায় দিন পার করছেন ন্যাশনাল সার্ভিসের বিপুল সংখ্যক এসব কর্মী।
জানা যায়, মহাজোট সরকারের ঘরে ঘরে চাকরি দেওয়ার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে কুড়িগ্রামে আওয়ামীলীগ সরকারের প্রথম দফা ক্ষমতার সময় অর্থাৎ আট বছর আগে চালু হয় ন্যাশনাল সার্ভিস নামে একটি কর্মসূচি। এর মাধ্যমে কর্মসংস্থান হয় প্রায় ৩০ হাজার বেকার যুবক ও যুব মহিলার। কিন্তু দুই বছরের মাথায় বেকার হয়ে পড়েন তারা। কুড়িগ্রামে কর্মসংস্থানের সংকট বিবেচনায় নিয়ে সরকারের ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি চালু হয় ২০১০ সালে। ওই বছরের ৬ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুড়িগ্রামে প্রথম ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
কুড়িগ্রাম যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ন্যাশনাল সার্ভিসের কর্মীদের চাকরিতে পুর্নবহালের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা আসেনি। দ্বিতীয় ধাপে যে ৪৩ হাজার আবেদন পড়েছে, সে ব্যাপারেও সুনির্দিষ্ট কোনো দিকনির্দেশনা নেই।
ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির আওতায় চারটি ব্যাচে প্রায় ৩০ হাজার বেকার যুবক ও যুব মহিলাকে বিভিন্ন ট্রেডে তিন মাসের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এরপর দুই বছরের জন্য মাসিক ৬ হাজার টাকা ভাতায় বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে তাদের সংযুক্ত করা হয়। কাজের সুযোগ পেয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার পথে অনেকটা এগিয়ে যান ন্যাশনাল সার্ভিসের হাজারো কর্মী।
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মাধ্যমিক (এসএসসি) বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বা তদূর্ধ্ব বয়সী শিক্ষিত বেকারদের তিন মাসের প্রশিক্ষণ শেষে ২০১০ সালের ১৫ জুলাই প্রথম ব্যাচের ৯ হাজার ৭২১ জনকে বিভিন্ন দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়। পর্যায়ক্রমে চারটি ব্যাচে মোট ২৯ হাজার ৮১৫ জনকে সংযুক্ত করা হয়।
গত ২০১১ইং সালের ২৬ জানুয়ারি পুনরায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। তখন আরো ৪৩ হাজার ৭০৩ জনের বৈধ আবেদন সরকারের বিবেচনার জন্য রাখা হয়। পরবর্তীতে আর আবেদনকারীদের চাকুরি দেয়নি সরকার। ন্যাশনাল সার্ভিসের কর্মীরা বলছেন, তারা দুই বছরে পরিবারের অভাব-অটনে অনেকটাই অর্থ জুগিয়েছেন। কিন্তু মেয়াদ শেষে আবারও ফিরে যেতে হয়েছে সেই বেকার জীবনে।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন জানান-সরকার ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচিতে চাকরিদাতাদের শুধুমাত্র দুই বৎসরের জন্য নিয়োগ দিয়েছিলেন। চাকরির মেয়াদ শেষে তাদেরকে নিয়ে সরকারের নতুন কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই। হলে তাদের অগ্রাধিকার সর্বাগ্রে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন