শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

দখলযজ্ঞে অস্তিত্ব সঙ্কটে কুমিল্লার নদ-নদী

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে | প্রকাশের সময় : ১৩ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

কুমিল্লা জেলার উল্লেখযোগ্য নদী বলতে গোমতী, মেঘনা, তিতাস আর ডাকাতিয়াকেই বুঝায়। তবে বড় আকারের এসব নদী ছাড়াও আরও বেশ কিছু নদ-নদী রয়েছে যা একসময় এখানকার গ্রামীণ জনপদ সমৃদ্ধ করেছিল। সময়ের প্রবাহে পরিচিত অনেক নদীই হারিয়ে গেছে কুমিল্লার বুক থেকে। আর যেকটি রয়েছে তার কোনটির দুইপাড় দখল করে ঘর-বাড়ি, চাষাবাদের মাঠ, দোকান-পাট এমনকি মার্কেট গড়ে তোলে অস্তিত্ব সঙ্কটের মুখে ফেলেছে।
কুমিল্লা শহরের উত্তর প্রান্তে প্রবাহিত পুরানো গোমতী নদীর দুই পাড় ও পানির অংশে এখনো চলছে দখলের হিড়িক। তিন যুগ ধরে রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ি ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের দখলযজ্ঞে পুরানো গোমতী নদী সরু হয়ে খালে রূপ নিয়েছে। কুমিল্লার দক্ষিণাঞ্চল কৃষি সমৃদ্ধ অঞ্চলে পরিণত হওয়ার পেছনে বড় অবদান ডাকাতিয়া নদীর। লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ডাকাতিয়া নদীর লাকসাম উপজেলার দৌলতগঞ্জ বাজার এবং মনোহরগঞ্জ উপজেলার মনোহরগঞ্জ বাজার এলাকাসহ কয়েকটি স্থানে দীর্ঘদিন থেকে চলছে ডাকাতিয়া নদী দখলের প্রতিযোগিতা। লাকসামে ডাকাতিয়ার দুইপাড় দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বসতি গড়ে উঠেছে। মনোহরগঞ্জ উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ঘাগুরিয়া নদীও দখলযজ্ঞে আক্রান্ত। দাউদকান্দি উপজেলার গৌরিপুর বাজার সংলগ্ন কালা ডুমুর নদীর কোন কোন অংশে ভরাট হয়ে দোকান পাট, মার্কেট গড়ে তোলা হয়েছে। প্রভাবশালীরা নদী দখল করে জায়গা ভাড়া বা দখলস্বত্ত¡ বিক্রি করে দিচ্ছেন। লাকসাম উপজেলার দৌলতগঞ্জ বাজার এবং চান্দিনা উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ক্ষিরাই নদীর দুইপাড় ও পানির অংশ দখলের কারনৈ নদীর অস্তিত্ব বিলীনের পথে। ব্রাহ্মণপাড়া, বুড়িচং এবং কুমিল্লা সদর উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ৩০কিলোমিটার দীর্ঘ ঘুংঘুর নদীর ২০কিলোমিটারই দখল হয়ে গেছে। বাড়ি-ঘর, দোকানপাট আর চাষাবাদের জন্য জমি গড়ে তোলে এক সময়ের খরস্্েরাতা ঘুংঘুর নদীকে গ্রাস করেছে প্রভাবশালীরা। চৌদ্দগ্রাম উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত কাকড়ী নদীর পাড় দখলের প্রতিযোগিতা অব্যাহত রয়েছে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কুমিল্লা অঞ্চলের সভাপতি প্রফেসর ডা. মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর মাসুম বলেন, ‘কুমিল্লার এসব নদীর কোনটি জেলা প্রশাসনের দায়িত্বে রয়েছে। আবার কোনটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায়। অথচ তাদের নাকের ডগাতে বসেই নদ-নদী দখলের প্রক্রিয়া চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। আমরা আমাদের অবস্থান থেকে নদ-নদী রক্ষা, পরিবেশ রক্ষায় আন্দোলন, সভা, সেমিনার, মানুষের মাঝে এসব বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু আমাদের তো প্রশাসনিক, আইনগত ক্ষমতা নেই। যাদের আছে তাদের তো ভূমিকা রাখতে হবে। আর ভূমিকা রাখতে পারলে কুমিল্লার নদ-নদীগুলোর অস্তিত্ব রক্ষা হবে বলে আমরা মনে করি।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন