কুমিল্লায় ৪০ লাখ টাকা মূল্যের রপ্তানীমুখি গার্মেন্টস পণ্য লুটের ঘটনায় জড়িত আন্ত:জেলা ডাকাত দলের সদস্য রুবায়েত হোসেন বাবুল (৩৫) পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন জেলার দাউদকান্দি উপজেলার রায়পুর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের পাশে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ডাকাত বাবুল নরসিংদী জেলার সদর উপজেলার কুড়েরপাড় গ্রামের ঈমান আলীর ছেলে। এ সময় পুলিশের একজন পরিদর্শক ছাড়াও আরও ৪ পুলিশ আহত হয়েছে। নিহত ডাকাত বাবুলের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ডাকাতি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে ২০টি মামলা ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দি উপজেলার আমিরাবাদ এলাকায় গত ১১ এপ্রিল দুপুর দেড়টার দিকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী রপ্তানীমুখী গার্মেন্টস পণ্যবাহী একটি কাভার্ডভ্যানের চালক শাহআলম (২৫) ও তার সহকারী আনোয়ার হোসেনকে (২২) হাত-পা বেঁধে ফেলা হয়। পরে তাদেরকে মুন্সীগঞ্জ এলাকার ভবেরচর থানাধীন রাস্তার পাশে ফেলে রেখে ডাকাত দল কাভার্ডভ্যানটি নিয়ে ঢাকা অভিমুখে চলে যায়। এ ঘটনায় দাউদকান্দি থানায় মামলা দায়ের করার পর থানা ও জেলা ডিবি পুলিশ অভিযানে নামে। গত সোমবার মধ্য রাতে ঢাকার উত্তরার ১৩ নং সেক্টরের একটি বাসা থেকে লুট হওয়া গার্মেন্টস পণ্য উদ্ধার ও মালামাল লুটে নেয়ায় জড়িত ডাকাত দলের মারুফ হোসের লাভলু ও রুবায়েত হোসেন বাবুলকে আটক করা হয়। ডাকাত লাভলু মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার বড় বাহাদুর পুর গ্রামের আয়নাল হাওলাদারের পুত্র। পরে তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেটকার উদ্ধার ও অপর ডাকাতদের আটক করতে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে দাউদকান্দি মডেল থানা ও ডিবি পুলিশ অভিযান শুরু করে।
অভিযানে অংশ নেয়া ডিবির এসআই শাহ কামাল আকন্দ পিপিএম জানান, মঙ্গলবার দিবাগত মধ্য রাতে দাউদকান্দির রায়পুর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের পাশে ডাকাত বাবুলের অন্যান্য সহযোগিরা ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সেখানে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাতারি গুলি চালিয়ে ডাকাত বাবুলকে পুলিশের নিকট থেকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশও আত্মরক্ষার্থে ৩৭ রাউন্ড শট গানের পাল্টা গুলি চালায়। এতে মাথায় গুলিবিব্ধ হয়ে ডাকাত বাবুল গুরুতর আহত হন। তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনার পর বুধবার ভোর রাতে তার মৃত্যু হয়। দাউদকান্দি থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, ডাকাতদের গুলিতে থানার ওসি (তদন্ত) নুরুল ইসলাম মজুমদার, এএসআই প্রদীপ দাস, কনস্টেবল সোহরাব হোসেন ও ইব্রাহিম আহত হয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ছিনতাইকাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার, এক রাউন্ড গুলিসহ একটি পাইপগান, ডিবির ২টি জেকেট, ১টি সিগন্যাল লাইট ও কিছু দেশীয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুপুরে দাউদকান্দি মডেল থানায় পুলিশের কর্তব্যকাজে বাঁধাসহ ডাকাত নিহত হওয়া এবং অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন