তুরস্কে আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান। আগামী ২৪ জুন প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। ২০১৯ সালের নভেম্বরে হওয়ার কথা ছিল এই নির্বাচন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে এসব কথা বলা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০২ সাল থেকে ক্ষমতায় আছেন এরদোগান। তার জাতীয়তাবাদী মিত্ররাই আগাম নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে এরদোগান বলেছেন, পূর্বের সমস্যা কাটিয়ে উঠতে নতুন নির্বাচন প্রয়োজন তুরস্কের। তিনি বলেন, ‘সিরিয়াসহ অন্যান্য পরিস্থিতির কারণে নতুন প্রশাসন গড়ে তোলা জরুরি হয়েছে। এতে আমাদের দেশের ভবিষ্যত আরও শক্তিশালী হবে।’ এরদোগান জানান, জাতীয়তাবাদী এমএইচপি দলের প্রধান ডেভলেট বাচেইয়ের সঙ্গে আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। সামনের নির্বাচনে এরদোগানের একে পার্টির সঙ্গে জোট সরকার গঠন করার কথা রয়েছে এমএইচপির। খবরে বলা হয়, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগানের সামনে এখনও ক্ষমতার মেয়াদ আছে প্রায় দেড় বছর। তার দেশে কোনো রাজনৈতিক অস্থির পরিস্থিতিও সৃষ্টি হয়নি। তাহলে কেন এই আগাম নির্বাচন। এরদোগানের প্রধান মিত্র কট্টর ডানপন্থি নেতা দেভলেত বাহসেলি আগাম নির্বাচন দাবি করার এক দিনের মধ্যে ওই ঘোষণা দিয়েছেন এরদোগান। তাই আগামী ২৪ শে জুন জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এখন বিষয়টি নিশ্চিত করবে সেদেশের নির্বাচন পরিষদ। নির্বাচন পরিষদ বা নির্বাচন কমিশন অনুমোদন দিলে এবারই প্রথমবারের মতো সেখানে একই সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন হবে। নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার অধীনে এতে অধিকতর ক্ষমতা পাবেন এরদোগান। কারণ, ২০১৭ সালের এপ্রিলে তুরস্কে সংবিধান সংশোধনের গণভোট হয়। তাতে সামান্য ভোটের ব্যবধানে ‘হ্যাঁ’ ভোট বিজয়ী হয়। এর ফলে তুরস্কের সংসদীয় গণতন্ত্র চলে যায় প্রেসিডেন্টের নির্বাহী ক্ষমতার অধীনে। এর মাধ্যমে আরো শক্তিশালী হয়ে ওঠেন এরদোগান। সাংবিধানিক ওই পরিবর্তন প্রযোজ্য হবে নতুন নির্বাচিত সরকারের ক্ষেত্রে। নির্বাচিত এমন প্রেসিডেন্ট কারো সঙ্গে কোনো পরামর্শ ছাড়া ভাইস প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রীপরিষদ, উচ্চ পর্যায়ে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও সিনিয়র জজদের নিয়োগ দিতে পারবেন। এ ছাড়া নির্বাহী আদেশ ও জরুরি অবস্থা জারি করে তিনি বিলুপ্ত করতে পারবেন পার্লামেন্ট। এত সব ক্ষমতা যে প্রেসিডেন্ট পাবেন তিনি তা কিভাবে ব্যবহার করবেন তা রাজনৈতিক সচেতন যেকোনো ব্যক্তিই আন্দাজ করতে পারেন। হয়তো সেই ক্ষমতা হাতের নাগালে পাওয়ার জন্যই কোনো কারণ ছাড়া প্রেসিডেন্ট এরদোগান নতুন নির্বাচন ঘোষণা করেছেন। তিনি ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একে পার্টি) নেতা। বিবিসি, রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন