শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

সাভারে কারখানার বিষাক্ত পানিবদ্ধতা দুর্ভোগে ৩০ গ্রামের মানুষ

সেলিম আহমেদ, সাভার থেকে | প্রকাশের সময় : ২০ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

সাভার উপজেলার ইয়ারপুর ইউনিয়নের নয়নজুলি খাল দখল ও ভরাট করে ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও শিল্প কারখানা স্থাপন করায় প্রায় ৩০ গ্রামের পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে গেছে। একমাত্র খালটি দিয়ে বিভিন্ন কারখানার অপরিশোধিত ক্যামিকেল মিশ্রিত পানি নির্গমন করায় বিভিন্ন স্থানে তৈরী হয়েছে জলাবদ্ধতা। বাদ পরছেনা ঈদগাহ ও কবরস্থান।
হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ায় দুষিত পানির গন্ধে শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই দেখা দিয়েছে। এর হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেনা গবাদি পশু, লোহার আসবাবপত্র ও টিনের চালা। কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য মিশ্রিত পানিতে মরে যাচ্ছে পুকুরের মাছও। অবৈধভাবে খাল দখল ও ভরাটের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হলেও কিছুতেই দমছেনা ভূমিদস্যুতা। খালটি রক্ষার্থে এবং পানি নিষ্কাশনের জন্য উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হলেও কিছু দিনের মধ্যেই তা আবারও দখল হয়ে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জিরাবো পুকুরপাড়া এলাকার লুসাকা গ্রæপ খালের মধ্যে সরু পাইপ দিয়ে তার উপর দিয়ে স্থাপনা তৈরী করেছে। কান্দাইল এলাকার শাফাজুদ্দিন, ঘোষবাগ পশ্চিম পাড়া এলাকার ইলিয়াস কাজী, হাসেম মেম্বার ও আব্দুস সাত্তারসহ এলাকার প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তি অর্থের জন্য খালটি ভরাট করে বিক্রী করে দিয়েছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য খালের উপর কয়েকটি কালভার্ট থাকলেও তার সামনে-পিছনে ভরাট করে গড়ে তুলা হয়েছে বসতবাড়ি ও শিল্প কারখানা। ফলে পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। একারনে আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের কান্দাইল মৃধা বাড়ি ঈদগাহ মাঠ ও কবস্থানও ডুবে গেছে দুষিত পানিতে।
ভুক্তভোগী আবেদা বেগম জানান, একসময় এ খালে বিভিন্ন ধরনের মাছ পাওয়া গেলেও এখন কেবলই স্মৃতি। পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা না রেখে খালটি ভরাট করে গড়ে মিল কারখানা ও বসত বাড়ি গড়ে তোলায় পুরো এলাকায় পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
ইয়ারপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড সদস্য আবু তাহের মৃধা বলেন, জামগড়া, জিরাবো, ঘোষবাগ, কান্দাইল, ভূইয়াপাড়া, বাইপাইল, বগাবাড়ি, বেরনসহ প্রায় ৩০ টি গ্রামের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র মাধ্যম নয়নজুলি খালটি দখল হয়ে গেছে। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই এবং শিল্প-কারখানা থেকে নির্গত বিষাক্ত বর্জ্যের পানিতে জলাবদ্ধতার কারনে এলাকাবাসীরা আক্রান্ত হচ্ছেন নানা ধরনের চর্মরোগে।
স্থানীয় আব্দুল কুদ্দুস ভূইয়া বলেন, শিল্প কারখানার বিষাক্ত পানিতে আমাদের ঈদগাহ ও কবস্থানসহ পুরো এলাকা তলিয়ে গেছে। কয়েকদিন আগে একজন মৃত ব্যক্তির কবর খোরার গেলে বিপাকে পড়ে গ্রামবাসী। একহাত জায়গা খোড়ার পরই পানি উঠে যায়। এছাড়া কারখানার বিষাক্ত পানি গায়ে লাগায় তাদের গা চুলকানি এব ঘাঁ হয়ে যায়। তিনি অভিযোগ করেন স্থানীয় কনকর্ড, বেবীলনসহ বিভিন্ন ডাইং ও ওয়াশিং কারখানার বিষাক্ত বর্জের কারনে লোহাজাতিয় বিভিন্ন আসবাবপত্র এবং ঘরের টিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
বিষাক্ত বর্জ্য মিশ্রিত পানির দুর্গন্ধ এবং জলাবদ্ধতা নিরসনে অবিলম্বে খালটি উদ্ধার করে তা খননের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন