মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে প্রতিশেধক (ভ্যাক্সিন) এর অভাবে শতাধিক গবাদি পশুর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার বরাইদ, দিঘুলিয়া, দড়গ্রাম, তিল্লী ও হরগজ ইউনিয়নে পশুর তড়কা, বাদলা এবং ক্ষুরা রোগে এসব গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সময়মত ভ্যাক্সিন না দেওয়ার কারণে লাখ লাখ টাকার মূল্যের গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে। শুধু মাত্র উপজেলার দড়গ্রাম ইউনিয়নে জরা ও তড়কা রোগে অর্ধ শতাধিক গবাদি পশু মৃত্যু হয়েছে।
কৃষকদের অভিযোগ সরকারিভাবে যারা ভ্যাক্সিন প্রদান করে তারা নগদ টাকা চায়। টাকা না দিলে আমাদের গবাদি পশুকে ভ্যাক্সিন প্রদান করে না। গরু প্রতি ৫০ টাকা হতে একশত টাকা করে দিলে তারা বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে পশুদের গবাদি পশুকে ভ্যাক্সিন দিয়ে থাকে।
অপরদিকে উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিসের নিয়োজিত পল্লী চিকিৎসকেরা মোটা তাজাকরণের নামে পশুকে নিষিদ্ধ স্টেরয়েট (ডেক্সামেথাসন) ইনজেকশন দিচ্ছে। এতে করে পবাদি পশুর মৃত্যুর হার বেড়ে গেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
দড়গ্রাম ইউনিয়নের উত্তর রৌহা গ্রামের আব্দুল হালিমের ছেলে মো: হাবিবুর রহমান (৫৫) জানায়, এ পর্যন্ত কোন প্রকার ভ্যাক্সিন আমরা পাইনি। এ বছর আমার চারটি গরু ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। একটি গরু মারা গেছে। আমাদের এলাকায় দুই শতাধিক গরু ক্ষুরা ও তড়কা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি গরুর মৃত্যু হয়েছে। একই গ্রামের মো: হাসেমের স্ত্রী চম্পা আক্তার (৪৫) জানায়, সরকারিভাবে কোন দিনও আমাদের গরুকে ভ্যাক্সিন দেয় নি। এবারও তড়কা রোগে দেড় লাখ টাকার মূল্যের গাভী গরু মারা গেছে।
বরাইদ ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের মো: আব্দুল হকের ছেলে মো: গোলাম হোসেন (৩৫) জানায়, আমি গরীব মানুষ সরকারিভাবে ভ্যাক্সিন না পাওয়ায় এক লাখ টাকার মূল্যের গরু কিছুদিন আগে মারা গেছে। একই গ্রামের তারা মিয়ার স্ত্রী মোছা রওশন আরা (৩৫) জানায়, তার গর্ভবতী গরুর ভ্যাক্সিনের অভাবে তড়কা রোগে মারা গেছে।
উপজেলার ভেটিরিনারী সহকারী সার্জন ডা. জালাল উদ্দিন জানায়, ভ্যাক্সিন না দেওয়ার কারণে গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে বিষয়টি আমার জানা নেই তবে। আমাদের এনএটিপি প্রকল্পের জনবল শূন্য থাকার কারণে উপজেলা অফিসে আমাদের কাজ করতে হয়। ফলে অনেক সময় অনেক ইউনিয়নের খোঁজ নিতে পারি না।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো: খোরশেদ আলম জানায়, আমরা দুই এক দিনের মধ্যে ভ্যাক্সিন কর্মসূচি চালু করবো। তিনি আরো বলেন, অফিসে জনবল কম এবং ভ্যাক্সিন সরবরাহ কম থাকার কারণে অনেক জায়গাতে ভ্যাক্সিন প্রয়োগ কম হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন