কাপ্তাই (রাঙ্গামাটি) উপজেলা সংবাদদাতা
পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের জনবল সঙ্কটের কারণে বনজ সম্পদ রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। দুর্গম বনের বিট ও রেঞ্জের কর্মরত বনরক্ষীরা বনজ সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে প্রায় ম্যালেরিয়া ও টাইফয়েড রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। সরেজমিন পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের দায়িত্বরত বিভিন্ন বিট ও রেঞ্জ ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া যায়। বিশাল বনজ সম্পদ রক্ষা করার জন্য একটি বিট বা রেঞ্জে যে খানে ১০/১২ জন বনরক্ষী প্রয়োজন সে খানে দেখা যায় বিশাল বনজ সম্পদ পাহাড়া দেয়ার জন্য কোন কোন বিটে ১ কিংবা ২ জন লোক দিয়ে পাহাড়া দেয়া হয়েছে। এবং কোন কোন, রেঞ্জে রয়েছে ৩/৪ জনের মতো। নাম না প্রকাশ করার শর্তে কয়েকজন রেঞ্জ অফিসার ও বিট কর্মকর্তা বলেন, আমাদের লোকবলের সঙ্কটের কারণে বনের মধ্যে পাহাড়া দিতে গিয়ে অনেক সময় বিভিন্ন বিপদের মুখোমুখি পড়তে হয়। এ বিপদের মোকাবেলা করতে গিয়ে কোন কোন সময় আমরা বাধ্য হয়ে পিছু হঠতে বাধ্য হতে হয়। যে পরিমাণ হাতিয়ার রয়েছে তাও অনেক পুরাতন প্রয়োজনের সময় বিকল হয়ে পড়ে বলে উল্লেখ করা হয়। বিট বা রেঞ্জের ২/৫ জন স্টাফ দিয়ে বনজ সম্পদ রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় বনজ সম্পদ রক্ষা করার জন্য দিনে-রাতে টহল দিতে হয়। কোথায় কোন ধরনের সম্পদ ক্ষতি হচ্ছে কিনা। এরমধ্যে অনেক বয়বৃদ্ধ বনরক্ষী রয়েছে পাহাড়ে বনজ সম্পদ পাহাড়া দিতে গিয়ে পা পিছলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গহানিসহ ম্যালেরিয়া, টাইফয়েড আক্রান্ত হয়ে বিটে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে। এতে করে উক্ত অসুস্থ রক্ষীকে সেবাযতœ করতে আরো ২/১ জন স্টাফ প্রয়োজন হয়ে পড়ে। ফলে বনরক্ষার্থে-বিট ও রেঞ্জের বনরক্ষীদের বিভিন্ন সঙ্কট সৃষ্টি হয়। এর ফলে সরকারি সম্পদ রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) সালাহ উদ্দিন এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, বর্তমানে আমাদের বিভিন্ন রেঞ্জ ও বিটে বড় ধরনের লোক বল সঙ্কট সৃষ্টি হয়ে পড়েছে। এ বন বিভাগের আওতায় আলিখ্রিং রেঞ্জ ৪৮ হাজার, একর ফারুয়া ৭৮ হাজার, সাংড়াছড়ি ৩৮ হাজার ও কাপ্তাই-কর্ণফুলি রেঞ্জের শাড়ে তের হাজার একর বনভূমি প্রায় লোকবল সঙ্কটের কারণে অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। এরমধ্যে চলতি এপ্রিল মাসে অর্ত দক্ষিণ বন বিভাগ হতে ১৫ জন স্টাফ পদন্নোতি ফলে বদলি হয়ে অন্য জেলায় চলে গেছে। এরমধ্যে তিনজনকে স্টাফকে নতুনভাবে অত্র বিভাগে দেয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি আরো বলেন, অনেক বয়বৃদ্ধ স্টাফ অবসরে যাওয়ার কারণে নতুনভাবে কোন স্টাফ না দেয়ার ফলে পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের লোকবল সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। অতিশয় এ পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগে নতুন করে জনবল না দেয়া হলে বনজ সম্পদ রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন