সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

বিএসইসির সভায় অনুমোদন ডিএসইর মালিকানা পেল চীন

১৪মে চীনের সঙ্গে চুক্তি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ মে, ২০১৮, ৯:৫৭ পিএম

অবশেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মালিকানা পেল চীন। শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রকসংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সভায় বৃহস্পতিবার দেশটির কাছে শেয়ার বিক্রির চুড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। এরফলে ডিএসইর শেয়ার ভারত না চীন পাবে, এ সংক্রান্ত পাঁচ মাসের বিতর্কের অবসান ঘটলো। এর আগে গত সোমবার বিশেষ সাধারণ সভায় ডিএসইর সদস্যরা চীনের পক্ষে সর্ব সম্মতি দিয়েছিল।
ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএএম মাজেদুর রহমান বলেন, বিএসইসি থেকে চুড়ান্ত অনুমোদন পাওয়া গেছে। শিগগিরই চীনের সঙ্গে চুক্তি সই হবে। প্রাথমিকভাবে চুক্তির জন্য ১৪ মে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বিষয়টি অর্থমন্ত্রীর সময়ের উপর নির্ভর করছে। তিনি দেশে এলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
বিএসইসির অনুমোদনে বলা হয়, চীনের শেনঝেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের কাছে ডিএসইর মোট শেয়ারের ২৫ শতাংশ অর্থাৎ ৪৫ কোটি নয় লাখ ৪৪ হাজার ১২৫টি শেয়ার বিক্রির চুক্তির অনুমোদন দেয়া হয়। প্রতিটি শেয়ারের মূল্য ২১ টাকা। তিনটি শর্তে এই চুক্তি হবে। এক্ষেত্রে চুক্তির কার্যক্রম সিকিউরিটিজ আইন ও ২০১৩ সালের সিকিউরিটিজ আইনের শর্ত অনুসারে হতে হবে। চুক্তির স্বারের ১ বছরের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। এছাড়া বিএসইসি’র অনুমোদন ছাড়া চুক্তির কোনো শর্ত পরিবর্তন করা যাবে না।
ডিএসই’র পরিচালক মো. রকিবুর রহমান বলেন, এই ঘটনা স্টক এক্সচেঞ্জের জন্য ইতিহাস হয়ে থাকবে। বিষয়টি স্টক এক্সচেঞ্জের ইতিবাচক। আর ইতিবাচক বিষয়টি বাস্তবায়নে সবচেয়ে বেশি ভুমিকা রেখেছে দেশের গণমাধ্যম।
প্রসঙ্গত, ডিমিউচুয়ালাইজেশনের (মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা আলাদাকরণ) শর্ত অনুসারে ডিএসই’র ২৫ শতাংশ শেয়ার কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রি বাধ্যতামূলক। এ কারণে শেয়ার বিক্রির জন্য আর্ন্তজাতিকভাবে দরপত্র আহ্বান করে ডিএসই। এরপর চীনের দুই শেয়ারবাজার শেনঝেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ এবং ভারতের ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের নেতৃত্বে দুই কনসোর্টিয়াম আলাাভাবে দরপত্রে অংশ নেয়। এক্ষেত্রে চীনের প্রতিষ্ঠান ডিএসইর ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতিটি শেয়ারের দরপ্রস্তাব করেছে ২২ টাকা (লভ্যাংশ সমন্বয়ের পর ২১ টাকা)। এতে ৪৫ কোটি শেয়ারের মোট মূল্য দাঁড়ায় ৯৯০ টাকা। এছাড়াও স্টক এক্সচেঞ্জের কারিগরি সহায়তার জন্য আরও ৩০৭ কোটি টাকা দেবে চীন। ফলে চীনা প্রতিষ্ঠানের অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় এক হাজার ৩শ টাকা। বিপরীতে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান প্রতিটি শেয়ারের দাম প্রস্তাব করেছে ১৫ টাকা। এতে শেয়ারের মূল্য দাঁড়ায় ৬৭৫ কোটি টাকা। এ কারণে কারিগরি সহায়তাসহ চীনের সঙ্গে ভারতের মূল্যের পার্থক্য দাঁড়ায় ৬২৫ কোটি টাকা। তবে প্রভাবশালী একটি অংশ ভারতের কাছে শেয়ার বিক্রির জন্য স্টক এক্সচেঞ্জকে চাপ দিয়েছিল। এতে ভারতকে শেয়ার দেয়ার ব্যাপারে কমিশনের দুই একজন সদস্যের অতি উৎসাহী তৎপরতা ছিল চোখের পড়ার মতো। এনিয়ে অনেক ঘটনার পর গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ডিএসই’র পরিচালনা পরিষদের সভায় চীনা কনসোর্টিয়ামকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে বেছে নেয়া হয়। আর এই প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য ২২ ফেব্রুয়ারি বিএসইতে পাঠানো হয়। ওইদিনই ডিএসই’র প্রস্তাব পর্যালোচনা করতে চার সদস্যের কমিটি গঠন করে কমিশন। এরপর ১৯ মার্চ ডিএসই’র দেয়া চীনা কনসোর্টিয়ামকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী করার প্রস্তাবের ব্যাপারে কিছু ব্যাখা চাওয়া হয়। এছাড়াও সুনির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয়ে সংশোধনের কথা বলা হয়েছিল। এনিয়ে কয়েক দফা চিঠি চালাচালির পর বিএসইসি’র শর্তের অনুসারে ইজিএম করে সাধারণ সস্যদের সম্মতির সিদ্ধান্ত নিল ডিএসই। এই সিদ্ধান্তের লিখিত কপি পাওয়ার দুই দিনের মধ্যেই অনুমোদন দিল বিএসইসি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন