নাটোর জেলা সংবাদদাতা : শস্য ভা-ার হিসেবে খ্যাত চলনবিলের সিংড়ার দুর্গম পল্লী পাউটা-বাঁশবাড়িয়া গ্রামের এক ভূমিহীন কৃষক রফিকুল ইসলামের লিজ নেওয়া সাত বিঘা জমির মিনিকেট ধান আগাছা নাশক বিষ ছিটিয়ে বিনষ্ট করা হয়েছে। এতে রফিকুল ইসলাম নামে ওই কৃষকের দেড় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক রফিকুল ইসলাম সিংড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। ওই পরিবারের সদস্যরা এখন দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। এদিকে রাতের অন্ধকারে এক সঙ্গে রফিকের সাত বিঘা জমির পাশের অপর তিন কৃষকের জমিতেও আগাছা নাশক বিষ দেওয়ায় গ্রামজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গ্রামবাসী এখন রাত জেগে জমি পাহারা দিচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, সে উপজেলার দুর্গম পল্লীর পূর্ব বাঁশবাড়িয়া মাঠে প্রায় সাত বছর ধরে আটবিঘা জমি লিজ নিয়ে চাষাবাদ করে আসছেন। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ওই জমির নতুন ধান ঘরে তোলার কথা থাকলেও কে বা কারা রাতের আঁধারে আগাছানাশক বিষ ছিটিয়ে তার সাত বিঘা জমির ধান পুড়িয়ে দিয়েছে। খবর পেয়ে কৃষি বিভাগের তিনজন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জমি পরিদর্শন করে জানান, আগাছানাশক ছিটিয়ে দেওয়ার কারণে গাছসহ সব ধান বিনষ্ট হয়ে গেছে। তাদের ঘরে খাবারেরও জোগান নেই। এরপর দাদন ব্যবসায়ীর কাছে থেকে নেওয়া ৬০ হাজার টাকা সুদে আসলে ৯০ হাজার টাকা শোধ করতে হবে কিন্তু ধান ঘরে তুলতে না পারায় তারা পথে বসেছেন। রফিকের স্ত্রী আলেয়া খাতুন জানান, তার স্বামী অন্য জায়গায় দিনমজুরের কাজ করেন। তাই বাড়িতে থাকেন না। দুই ছেলেকে নিয়ে তিনি কৃষিকাজ করেন। শত্রুতা করে কেউ এসব করেছে। এখন দাদন ব্যবসায়ীর ঋণ শোধ করতে তাদের ভিটেমাটি বিক্রি করতে হতে পারে। স্থানীয় এলাকাবাসী মোয়াজ্জেম হোসেন, মকলেছ ও আব্দুর রাজ্জাক জানান, তাদের বিলের জমির ধান প্রায় রাতের আঁধারে বিষ ছিটিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। ধানের সাথে মানুষের এ কেমন শত্রুতা? তাই গ্রামবাসী এখন রাত জেগে জমির ধান পাহারা দিচ্ছেন। সিংড়া উপজেলা কৃষি অফিসার সাজ্জাদ হোসেন জানান, আগাছা নাশক ওষুধ ছিটানের ফলে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত জমি পরিদর্শন করে ওই কৃষককে জমিতে পানি স্প্রে করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বিষয়টি কৃষি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও অবগত করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন