লক্ষ্মীপুর জেলা সংবাদদাতা : লক্ষ্মীপুরে রামগঞ্জে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাছাইয়ে অনিয়মের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা অর্থ বাণিজ্যের বিনিময়ে প্রার্থী মনোনীত করার অভিযোগ উঠেছে। নাম না প্রকাশের শর্তে উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র প্রার্থী বাছাইয়ে বাণিজ্যের বিষয়টি স্বীকার করে এর জন্য উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে দায়ী করেন। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থীদের অভিযোগ দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে টাকার বিনিময়ে মনোনয়ন বিক্রি করা হয়েছে। এতে যোগ্য ও ত্যাগী নেতারা মনোনয়ন পায়নি। এতে করে নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। আগামী ২৩ এপ্রিল অনুষ্ঠিত তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন নির্বাচনে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ১০ ইউনিয়নের মধ্যে ৫ ইউনিয়নের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে ৫টি ইউনিয়নেই একক চেয়ারম্যান প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগ। সূত্র জানায়, প্রতিটি ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ড কমিটি এবং ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কাউন্সিলর করে তাদের ভোটের মাধ্যমে যিনি বেশি ভোট পাবেন সেই আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হবেন এমন বিধান থাকলেও রামগঞ্জে সেটি পরিলক্ষিত হয়নি। দলীয় নৌকা প্রতীক পেলেই চেয়ারম্যান হওয়া অনেকটা নিশ্চিত এমন ধারণা থেকেই টাকা দিয়ে অনেকেই মনোনয়ন পেতে আগ্রহী হলেও নেতৃবৃন্দের আস্থাভাজনরাই টাকার বিনিময়ে মনোনয়ন পেয়েছেন। শিল্পপতি আনোয়ার হোসেন খান বাবুলের অনুরোধে ১নং ইউনিয়ন, স্থানীয় সংসদ সদস্যের অনুরোধে ৪নং ইউনিয়ন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যনের অনুরোধে ৫নং ইউনিয়ন এবং জেলা কমিটির সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের অনুরোধে ৬নং ও ৭নং ইউনিয়নের দলীয় চেয়ারম্যান মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এরপূর্বে ঢাকাস্থ স্থানীয় সংসদ সদস্যের কার্যালয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য লায়ন এম এ আউয়াল, জেলা আ,লীগের সিনিয়ার সহ সভাপতি সফিকুল ইসলাম, সহ সভাপতি এড. সফিক মাহামুদ পিন্টু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোজাম্মেল হক মিলন, উপজেলা আ,লীগ সভাপতি আলহাজ্ব মো. শাহাজান, সাধারণ সম্পাদক আ ক ম রুহুল আমিন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মনির হোসেন চৌধুরীসহ নেতৃবৃন্ধ ঢাকায় একাধিক বৈঠক করে ৫জনের নামের তালিকা প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রেরণ করলে প্রধান মন্ত্রীর স্বাক্ষরীত দলীয় মনোনয়ন পান তারা। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত একধিক প্রার্থীদের অভিযোগ টাকার বিনিময়ে রামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দলীয় মনোনয়ন বিক্রি করায় যোগ্য ও ত্যাগী নেতারা মনোনয়ন পায়নি। এতে করে নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। এসব কারণে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীরা ৫টি ইউপিতেই চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ার জন্য মনোনয়ন ফরম কিনলেও মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ মুহূর্তে গত ৫ এপ্রিল রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ শাহাজান আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী সকল চেয়ারম্যান প্রার্থীদের রামগঞ্জ রেস্টহাউজে ডেকে এনে ভয়ভীতি দেখিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে বাধ্য করেন। অপর দিকে গত ৬ এপ্রিল রামগঞ্জ উপজেলা আ,লীগের উদ্যোগে রামগঞ্জ সার্কিট হাউজে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানানো হয়, প্রতিটি ইউনিয়নেই ৩ থেকে ৪ জন করে আ,লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিল। দলের প্রতি আস্থা রেখে এবং নৌকার বিজয়ের স্বার্থে বিদ্রোহী প্রার্থীরা নিজ ইচ্ছায় তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেন। সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা আ,লীগের সভাপতি আসন্ন নির্বাচনে ১নং কাঞ্চনপুর ইউনিয়নে আ: করিম মাস্টার, ৪নং ইছাপুর ইউনিয়নে মো. সহিদ উল্যা, ৫নং চন্ডিপুর ইউনিয়নে মো. কামাল হোসেন ভূইয়া, ৬নং লামচর ইউনিয়নে মোহাম্মদ উল্যা, ৮নং করপাড়া ইউনিয়নে মজিবুল হক মজিবকে একক প্রার্থী ঘোষণা করে তাদের বিজয় নিশ্চিত করার জন্য নেতাকর্মীসহ সকলের প্রতি আহ্বান জানন। উপজেলা আ,লীগের সভাপতি আলহাজ্জ মোহাম্মদ শাহজানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আ,লীগের সম্পাদক আ.ক.ম রুহুল আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বাচ্চু প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন