শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

লাইফস্টাইল

রমজানে ডায়বেটিস ম্যানেজ খুবই সহজ

| প্রকাশের সময় : ২২ মে, ২০১৮, ৭:৫৫ পিএম

প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমান নরনারীর রমজান মাসে রোজাব্রত পালন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে ধর্মীয় বিধানমতে। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত এই দীর্ঘসময় সবধরণের পানাহার থেকে বিরত থাকাই রোজার প্রধান শর্ত। এই উপবাসব্রত পালনে ডায়বেটিস বা মধুমেহ রোগে আক্রান্তদের কোনও কোনও ক্ষেত্রে নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে উপযুক্ত সময়ে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণে , চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং বøাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখলেই সম্ভাব্য সমস্যাকে আগে ভাগেই ঠেকানো সম্ভব।
বিশ্বজনীন সমীক্ষা অনুযায়ী ডায়াবেটিস আক্রান্তদের রোজা পালন ঝুকিঁপূর্ণ। একজন ডায়াবেটিস রোগী রোজাব্রত পালন করলে তার কর্তব্য হচ্ছে গুরুত্ব সহকারে নিজের রক্তে গøুকোজের পরিমাণ ঘন ঘন মেপে নেওয়া। কারণ, রমজানে কার বøাড সুগারের পরিমাণ মাত্রাতিরিক্তভাবে নীচে নেমে যেতে পারে। তাই রোজা চলাকালীন শরীরে কোনও ধরণের অস্বাভাবিকতা ধরা পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে লক্ষণসমূহ হচ্ছে-শরীরে কাঁপুনি, ঘাম দেখা দেওয়া এবং মাথা ঘোরানো। যারা টাইপ ওয়ান ডায়বেটিসে আক্রান্ত, তাদের রমজানে রক্তে গøুকোজের পরিমাণ মাত্রাতিরিক্তভাবে বেড়ে যেতে পারে। এতে মারাত্মক সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। ফলে রক্তে, ‘কিটোন্স’ নামে এক ধরণের রাসায়নিক পদার্থ জমা হতে পারে। তা থেকে কিটোঅ্যাসিডোসিস নামের এক ধরণের মারাত্মক সমস্যা দেখা দিতে পারে। রক্তে গøুকোজের পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত হলে যে লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে-বেশি পিপাসা, প্রচুর প্রস্্রাব অথবা মারাত্মক ক্লান্তিবোধ। রক্তে গøুকোজের পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত উচ্চ পরিমাণ থেকে নীচে নামলে এবং উপরে উল্লেখিত লক্ষণগুলো অনুভব করলে ডাক্তারের সঙ্গে তা নিয়ে কথা বলবেন।
উপবাসব্রত পালনে শরীরে বেশ কিছু পরিবর্তন দেখা যায়। রোজাদারের শরীর প্রথম অবস্থায় জমাকৃত গøুকোজ ব্যবহার করে, তারপর দেহের চর্বি ভেঙে যখন শক্তি তৈরি হয় তখন দীর্ঘমেয়াদে কোলেস্টরালের পরিমাণ, বøাড প্রেসার ও ওজন কমে। দৈহিক ওজন কমলে রোগীর পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশনের শিকার হওয়ার সম্ভবনা থাকে। তাই ইফতার ও সেহরির মধ্যবর্তী সময়ে প্রচুর পরিমাণে চিনি ও ক্যাফেইনমুক্ত পানীয় পান করা উত্তম। পাশাপাশি রমজানে খাওয়া-দাওয়াসহ ওষুধ সেবনের সময় সূচিরও পরিবর্তন হয়। অর্থাৎ অন্যান্য দিনের সকাল বেলার ডোজ রমজানে ইফতারের সময় এবং রাতের ডোজ সেহরির সময় নিতে হয়।
রমজান মাসে সেহরি এবং ইফতারের উভয় সময়েই সহজপ্রাচ্য এবং চিকিৎসকের পরামর্শমতো পুষ্টিসম্পন্ন খাবার খাওয়া উচিত। খাদ্যতালিকায় ডায়াবেটিস-বান্ধব ফল যেন পরিমিত পরিমাণে অবশ্যই থাকে। বিশেষত বøাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে এমন ফলমূল বা আহার ইফতারের সময় নেওয়া উত্তম। অত্যধিক ফ্যাট বা চর্বিজাত আহার রমজানে বর্জন করাই শ্রেয়। অন্যান্য সময়ে রোগীদের যে শারীরিক কসরৎ বা ব্যায়ামের পরামর্শ দেওয়া হয় তা রমজান মাসে না করলেই চলে। কারণ, প্রতিদিনের তারাবির নামাজের মাধ্যমেই প্রত্যেকের ভাল ব্যায়াম হয়ে যায়। রোজাব্রত পালনের পাশাপাশি নিয়মিত বøাডসুগার পরীক্ষা করে দেখা অবশ্যই উচিত। রক্তে সুগারের মাত্রা ঠিক রেখে সর্বোপরি পরিমিত আহার এবং নিয়মিত ওষুধ গ্রহণের মাধ্যমে একজন ডায়াবেটিস রোগী অনায়াসেই রোজা রাখতে পারেন। এ নিয়ে অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সতর্কতাই মূলমন্ত্র।

০ আফতাব চৌধুরী
সাংবাদিক ও কলামিস্ট।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন