রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

দুপচাঁচিয়ায় বসেছে খলসানি মেলা

দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) থেকে মোঃ গোলাম ফারুক | প্রকাশের সময় : ৩ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

দুপচাঁচিয়া উপজেলায় গত ২ দিনে মুষলধারে বৃষ্টির পর বিভিন্ন হাট বাজারে মাছ ধরার উপকরন বাঁশের তৈরী খলশানী বা চাঁই বিক্রির ধুম পরেছে। এলাকার হাট বাজার গুলোতে প্রতিদিন শত শত খলশানি বিক্রি হচ্ছে।
দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের ঐতিহ্যবাহী ধাপ সুলতানগঞ্জ হাট সহ উপজেলার ৬ টি ইউনিনের বিভিন্ন হাটে মাছ ধরার প্রাচীন উপকরণ এই সব খলশানি ব্যাপক হারে বিক্রি হচ্ছে। গ্রাম থেকে অনেকেই তাদের নিপুন হাতের তৈরী খলশানি এই সব হাটগুলোতে নিয়ে এসে তা বিক্রির জন্য পরসা সাজিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। ক্রেতারাও দাঁড়িয়ে থেকে আকারভেদে পছন্দ করে তাদের খলশানি ক্রয় করছে। এ ব্যাপারে খলশানি বিক্রেতা উপজেলা সদরের মাঝিপাড়ার মানিক সরকারের পুত্রদ্বয় নিতাই সরকার (৫৬), নারায়ন সরকার (৫২) “দৈনিক ইনকিলাব” কে জানান, আষাঢ় শ্রাবন দুই মাস বর্ষাকাল। প্রতি বছর বর্ষা শুরু থেকে তাদের খলসানি বিক্রির এ ব্যবসা শুরু হয়। চলে পুরো বর্ষারই দু’মাস। এ দু’মাসের জন্য তারা সারা বছর অপেক্ষায় থাকে। পুরো বর্ষা মাস শুরু না হলেও গত ২ দিনে প্রবল বর্ষণে নদ-নদির পানি বেড়েছে। মাঠে বিভিন্ন খাল-বিলে পানি জমেছে। তাই এ জৌষ্ঠ মাসেও প্রাচীন উপকরণ মাছ ধরার এই খলশানি ব্যাপক হারে বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য মাসে তারা খলশানি তৈরীর সামগ্রী ক্রয় করে তা খলশানি তৈরীর কাজের উপযোগী করে প্রস্তুত করে। বর্ষা শুরুর এক মাস আগে থেকেই শুরু করে খলশানি তৈরীর কাজ। এ কাজে বাড়ীর গৃহীনি থেকে শুরু করে ছেলে-মেয়েরাও সহযোগীতা করে। এসব খলশানি তৈরীতে প্রকার ভেদে খরচ হয় ৫০ থেকে ৩০০ শত টাকা। আর তা বিক্রি হয় ১০০ শত থেকে ৫০০ শত টাকা পর্যন্ত। অপর খলশানী বিক্রেতা পার্শ্ববর্তী আদমদিঘী উপজেলার চাঁপাপুর এলাকার গোকেন এর পুত্র গোপাল (৪৫), সুধিন এর পুত্র বাসু (৫০), কাহালু উপজেলার কালাই এলাকার বাহার আলী কাজীর পুত্র জালাল উদ্দিন কাজী (৪৬) জানান, তারা প্রতি হাটে ৩০ থেকে ৪০ টি খলশানী বিক্রি করেন। তারা আরও জানান, খলশানী তৈরীর সামগ্রীর দাম আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। তাই আগের মত আর লাভ হয়না। দীর্ঘ্য দিন থেকে এ ব্যবসায় জরিত, তাই এ ব্যবসা ছাড়তে পারছে না বলেই ধরে আছে। স্থানীয় এক খলশানী ক্রেতা উপজেলার তালুচ গ্রামের মোফাজ্জল হোসেন জানান, হাট-বাজার থেকে দেশীয় মাছ প্রায় হারিয়েই গেছে। যে দু’একজন দেশীয় মাছ বিক্রির জন্য আনেন, তার দাম অনেক। যা তাদের মত মধ্যবিত্ত পরিবারের ক্রয় করে খাওয়া কষ্টকর। তাই হাট থেকে ৪টি খলশানী কিনেছেন। আষাঢ়ের গত কয়েক দিন টানা বৃষ্টি হওয়ায় মাঠে ঘাটে বেশ পানি জমেছে। এই পানিতে দেশী সিং, টেংরা, কই, পুঁটি, শাটি মাছ পাওয়া যায়। এসব মাছ ধরার জন্যই তিনি এ খলশানীগুলো কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আরও জানান, বর্ষা এবার আগাম শুরু হওয়ায় খলশানীর কদরও বেড়েছে। হাট-বাজারে তাই বিক্রির ধুমও পড়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন