আবদুল আউয়াল ঠাকুর
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এক আলোচনা সভায় বলেছেন, আইনসভার মূল উদ্দেশ্য আইন প্রণয়ন। আগে সংসদে আইনের ওপর ব্যাপক আলোচনা-বিতর্ক হতো। কিন্তু এখন কোনো বিতর্ক হয় না। আলোচনা হয় না। সেখান থেকে কিছুই পাই না। আমাদের আইন প্রণেতাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো আইন সম্পর্কে অজ্ঞতা। তিনি আরো বলেছেন, জাতীয় সংসদে প্রচলিত আইন কিংবা আইনের সংস্কার বিষয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা না হওয়ায় সংসদে আইনের দুর্বল চর্চা হচ্ছে। এ জন্য এখনকার প্রত্যেকটি আইনই ত্রুটিপূর্ণ ও অসম্পূর্ণ থেকে যায়। জনগণ ভোগান্তিতে পড়ে যায়। প্রধান বিচারপতির বক্তব্য নিয়ে তুমুল বিতর্ক হয়েছে মন্ত্রিসভায়। একাধিক মন্ত্রী প্রধান বিচারপতির বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন। তারা বলছেন, কয়েকটি ধাপে পর্যালোচনার পর সংসদে আইন প্রণয়ন করা হয়। অথচ প্রধান বিচারপতি সংসদ নিয়ে ঢালাও বক্তব্য রেখেছেন। অন্যদিকে আলোচনা সভায় প্রধান বিচারপতি বলেছেন, এখন নানা ধরনের সার্কুলার, এসআরও, পরিপত্রÑ এসব বিষয় দিয়ে বিচার চলছে। এগুলো দিয়ে আমরা যেমনি খেই হারিয়ে ফেলি, তেমনি বেশ কিছু বৈষম্য থেকে যায়। আমরা হিমশিম খেয়ে যাই।.. আইন ত্রুটিপূর্ণ থেকে গেলে জনগণ ভোগান্তিতে পড়ে, বিচার বিভাগের ওপর চাপ পড়ে। আইন প্রণয়নের ধাপগুলো কেমন হওয়া উচিত তা ব্যাখ্যা করে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, প্রথমে আইন কমিশন একটি আইন নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করবে, এরপর সে বিষয়ে অংশীদারদের কাছ থেকে মতামত নেবে। তারপর তারা প্রতিবেদন দেবে, এর ওপর সংসদে বিতর্ক হবে, খসড়া তৈরি হবে। তারপর সেটি আইন হবে। বর্তমানে এগুলো হচ্ছে না।
যে সূত্র ধরেই হোক প্রধান বিচারপতি যে সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তা যে কোনো মহলই স্বীকার করবে। এটি সময়ের বিবেচনায় সবার এবং বৃহত্তর কল্যাণের জন্যই ভাববার রয়েছে। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে যে সংসদের প্রসঙ্গ রয়েছে সে ব্যাপারে সবাই একমত যে, বর্তমান সংসদ জনগণের প্রকৃত কাজে আসছে না। প্রধান বিচারপতি আইন প্রণয়নকে সংসদের প্রধান কাজ বলে উল্লেখ করেছেন, সংবিধানও তাই বলছে। সংবিধানের মতে, সংবিধানের বিধানাবলী সাপেক্ষে প্রজাতন্ত্রের আইন প্রণয়নের ক্ষমতা সংসদের ওপর ন্যস্ত। এই মূল কাজকে বর্তমান সময়ে কতটা গুরুত্বের সাথে দেখা হয় বা প্রধান বিবেচনা হিসেবে দেখা হয় কিনা সে প্রশ্ন অবশ্যই ইতোমধ্যে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক নানা মহলে উঠেছে। প্রধান বিচারপতির অলোচনাতেও তারই প্রতিধ্বনি শোনা গেল। সুপ্রিম কোর্ট যেহেতু আইনের ব্যাখ্যা করেন, সে কারণে এর আগেও যখনই কোনো জটিলতা দেখা দিয়েছে তখন সুপ্রিম কোর্টের শরণাপন্ন হতে হয়েছে। এটা যেমনি নতুন কিছু নয় তেমনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেও এর নজির রয়েছে। এমন কি কোনো আইনের সঙ্গত প্রয়োগ হয়নি বলেও যখন মনে করা হয় তখনো সুপ্রিমকোর্টের কাছেই যেতে হয়। এই যাওয়া কার মনঃপূত হলো কি হলো না সে বিষয়টি বড় নয় বরং এটাই সাংবিধানিক বিধিব্যবস্থা। বোধকরি এবার যে প্রশ্ন উঠেছে তা বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এর
আগে কখনো ওঠেনি। কেন উঠেছে সে আলোচনার বিস্তৃত বিবরণে না গিয়েও বলা যায়, ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনটি সংবিধান বর্ণিত প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হতে না পারার কারণেই বর্তমান প্রশ্নের জন্ম হয়েছে। বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা হলেও স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত বহুবার বহুদলীয় ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এর নানা প্রকৃতি থাকলেও সংসদের কার্যকারিতা নিয়ে বর্তমানে যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে অতীতে তেমনটা দেখা হয়নি। বলা কষ্টকর, বাকশাল টিকে থাকলে সংসদের অবস্থা কী হতো। কারণ সেখানে বহুদলীয় গণতন্ত্রের সৌন্দর্যের অস্তিত্ব ছিল না। যার কোনো উদাহরণ নেই তা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনায় না গিয়েও বলা যায়, সামরিক শাসনের আওতায় সীমিত গণতান্ত্রিক চর্চার সময়েও যে ধরনের নির্বাচন এবং পার্লামেন্ট গঠিত হয়েছে সেখানেও আইন প্রণয়নকালে এক ধরনের মনোমুগ্ধকর বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিতর্কের তোড়ে কোনো কোনো আইন প্রণয়নের উদ্যোগও পরিত্যাগ করেছে সংশ্লিষ্টরা। এ ধরনের উদাহরণ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এমনকি ভারতেও রয়েছে। এদেশের সংসদেও সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে প্রণয়নের জন্য উপস্থাপিত কোনো কোনো আইনের বিরুদ্ধে বিরোধীরা রাজপথে নেমেছে। এসব ক্ষেত্রে সংসদের বিরোধী দলই নেতৃত্ব দিয়ে থাকে। সংসদে শক্তিশালী বিরোধী দলের যে কথা বারবার বলা হচ্ছে তার মূল লক্ষ্য হচ্ছে জনস্বার্থ নিশ্চিত করা। আর এর প্রধান বিষয়ই হচ্ছে আইন প্রণয়ন। আইনের মাধ্যমে যদি জনসাধারণের স্বার্র্থ রক্ষা করা না যায় তাহলে অন্য কোনো উপায় নেই, যে উপায়ে সে স্বার্থ রক্ষা সম্ভব। আইন নিয়ে প্রধান বিচারপতি যা বলেছেন সেটি হয়তো বক্তব্য আকারে প্রথমবার পাওয়া গেল। তবে বর্তমান আমলে এ কথা মুখে মুখেই রয়েছে। গত কয়েক বছরে এটা লক্ষণীয় যে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করা বা স্তব্ধ করার এক ধরনের মানসিকতা নিয়ে এমন অনেক আইন সংসদে প্রণয়ন করা হয়েছে, যার সাথে মৌলিক মানবাধিকারের বড় ধরনের সাংঘর্ষিকতা রয়েছে। এসব আইন প্রণয়নের আগে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করতে নানা ধরনের সার্কুলার ইস্যু করা হয়েছে। এমনকি মিডিয়ার স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণেও অনেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, যা নিয়ে বড় ধরনের মতপার্থক্য রয়েছে। এসবই হয়েছে বা হতে পেরেছে সংসদে কোনো কার্যকর বিরোধী দল না থাকার কারণে। সাধারণভাবে সরকারি দল কোনো আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়ে সংসদে তা উপস্থাপন করলে এর ওপর বিরোধী দল বক্তব্য রাখে। তার সুস্পষ্ট মতামত তুলে ধরে। এরপর এটি সংসদীয় কমিটিতে যায়, সেখানেও বিরোধী দলের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকেন। সেখানেও খুটিনাটি পরীক্ষা করা হয়। এরপর দুপক্ষ মোটামুটি একমত হলে সংসদীয় প্রক্রিয়ায় তা আইনে পরিণত হয়। এটা সবাই জানেন, সংসদে বিরোধী দলকেই অধিকতর জনবান্ধব মনে করা হয়। কারণ, নির্বাহী বিভাগের নির্যাতন-নিগ্রহ থেকে জনগণকে মুক্ত করতে বিরোধী নেতারাই সোচ্চার থাকেন। এর পিছনে সূক্ষ্ম যে রাজনীতিই থাকুক না কেন জনগণের স্বার্থ রক্ষিত হওয়ার পথ উন্মুক্ত থাকে। প্রধান বিচারপতির আলোচ্য বক্তব্য প্রসঙ্গে প্রবীণ পার্লামেন্টারিয়ান ও যিনি গত সংসদে আওয়ামী লীগের তরুণ সংসদ সদস্যদের শেখানোর দায়িত্বে ছিলেন তিনি মন্ত্রিসভায় বলেছেন, সংসদে আইন পাস হওয়ার আগে তা কয়েক ধাপে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়, ত্রুটি-বিচ্যুতি লক্ষ্য করে সংশোধনী আনা হয়, বিতর্ক চলে এবং মন্ত্রণালয়, সচিব কমিটি, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটিসহ বেশ কয়েক দফা কোনো আইন যাচাই-বাছাই করে দেখা হয়। তার বক্তব্যে মূলত প্রথা-পদ্ধতির কথাই তুলে ধরা হয়েছে। বলা যায়, কেতাবি কথাই তিনি বলেছেন। যাদের নাম ও প্রসঙ্গ তিনি উল্লেখ করেছেন সেখানে জনস্বার্থের প্রতিনিধিত্বকারীরা বর্তমানে কোথায়? সরকার যাকে বিরোধী দল বলে আত্মতৃপ্তি পাচ্ছে সে তো সরকারের সঙ্গে হালুয়া-রুটির ভাগ নিতে ব্যস্ত। সেই দলটির প্রধান এবং দলটির কো-চেয়ারম্যানও এসব নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতে শুরু করেছেন। সম্প্রতি এ নিয়ে কঠিন মন্তব্য করেছেন কো-চেয়ারম্যান। তিনি বলেছেন, দলের একটি অংশ বাইরের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। দলের অবস্থা ব্যাখ্যা করে তিনি বলেছেন, গরু আমার, মালিকানা অন্যের। বিষয়টি গভীর উদ্বেগের। এ ধরনের মন্তব্যে শরিকগণ যাই হোক না কেন এর পর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন না তুলেও বোধহয় এটা বলা যায়, আর যাই হোক এদের দ্বারা সংসদে জনস্বার্থ রক্ষিত হওয়ার কোনো অবকাশ নেই। সে বিবেচনায় বলা যায়, সংসদে আইনের চর্চা নিয়ে প্রধান বিচারপতি যে প্রশ্ন তুলেছেন তাকে এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই বরং জনস্বার্থের বিবেচনায় অধিক গুরুত্বের সাথে দেখাই উচিত।
একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের যে প্রয়োজনীয়তা বর্তমান সময়ে গভীরভাবে অনুভূত হচ্ছে তার যৌক্তিকতা পুনরায় প্রমাণ করেছে তৃণমূল পর্যায়ের নির্বাচন। এই নির্বাচনে সারা দেশে রক্তের বন্যা বয়ে গেছে। অথচ সংসদে এর কোনো প্রভাব নেই। দেশে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপি বা ২০ দলীয় জোট কোনো কার্যকর প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তোলেনি। সরকারি দলের ভেতর থেকেই প্রতিরোধ উঠেছে। এর ধরন ও প্রকৃতি নিয়ে ইতোমধ্যে নানা আলোচনা স্থান করে নিয়েছে। কেউ বলছেন, মনোনয়নের সাথেই যেহেতু হালুয়া-রুটির সম্পর্ক অর্থাৎ মনোনয়ন পেলেই যেহেতু নির্বাচিত বলে ধরে নেয়া যায় তাই এ বিরোধ। কেউ বলছেন, সরকারদলীয় প্রতীকে প্রার্থিতা সীমাবদ্ধ করে দেয়ার কারণেই এমনটা হচ্ছে। অন্তরালে যাই থাকুক প্রকৃত অবস্থা হচ্ছে, দেশে নির্বাচনী ব্যবস্থা যে নাজুক হয় পড়েছে সে কথাই সার্বিকভাবে উঠে এসেছে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে ব্যর্থ নির্বাচন কমিশনের ওপর সব মহলেরই অনাস্থা বাড়ছে। বিএনপি, সরকারের ভাষায় বিরোধী দল জাতীয় পার্টিসহ বাম ঘরানার প্রায় সব রাজনৈতিক দলই ইসির ভূমিকায় চরমভাবে ক্ষুব্ধ ও হতাশ। তারা মনে করছে যত দ্রুত সম্ভব এই নির্বাচন কমিশনকে বিদায় করা প্রয়োজন। না হলে দেশে দীর্ঘদিনের নির্বাচনী সংস্কৃতি একেবারে ধ্বংস হয়ে যাবে। বাস্তবতা থেকেই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বাতিলের দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি শীর্ষ আইনজীবী, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরাও এ দাবির সাথে একমত পোষণ করছেন। সঙ্গত কারণে প্রশ্ন উঠতে পারে, নির্বাচন কমিশনের পরিবর্তন কি গোটা পরিস্থিতিতে কোনো মৌলিক ভূমিকা রাখতে পারবে? এমনও হতে পারে ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অভিজ্ঞতা যেহেতু বর্তমান কমিশনের রয়েছে, তাই হয়তো তৃণমূল বা যে কোনো নির্বাচন নিয়েই এখন আর মাথা ঘামায় না বা ঘামানোর প্রয়োজনীয়তা বোধ করে না। বাস্তবেও এটা ঠিক যে, মাথা ঠিক না করে অন্য কিছু ঠিক করার কোনো সুযোগ যেমনি নেই তেমনি তা কোনো কার্যকর ভূমিকাও রাখতে পারে না। প্রাসঙ্গিক আলোচনায় ইতোপূর্বে যথার্থই বলা হচ্ছে, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়া না নেয়ার মধ্যে নির্বাচন পরিচালনায় কোনো পরিবর্তন আসেনি। বাস্তবতা হলো, তৃণমূলই হোক বা জাতীয়ই হোক নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচনের কোনো ব্যবস্থা যদি না থাকে তাহলে গণতন্ত্র টিকবে কী করে? গণতন্ত্রই যদি না টেকে তাহলে আইন প্রণয়ন বা যা কিছুই বলা হোক তা কীভাবে জনস্বার্থের অনুবর্তী হবে?
বর্তমান প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় সরকার ক্ষমতায় থাকার পরিকল্পনা করছে বলে সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে আভাস দেয়া হচ্ছে। দেশের গণতন্ত্রপন্থি সব মহলই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ফর্মূলা বের করার পক্ষে অভিমত দিচ্ছে। বিএনপির সর্বশেষ সম্মেলন থেকেও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সরকারের প্রতি সংলাপের আহ্বান জানানো হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো সাড়া পাওয়ার খবর প্রকাশিত হয়নি। প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ার কারণে সুন্দরবনের সুন্দরী গাছ ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে। মাথামরা রোগে আক্রান্ত হয়ে এই গাছ মরে যাচ্ছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, ভারতের বৈরী পানি নীতির শিকার হয়ে শুধু সুন্দরবনই নয়, গোটা দেশই ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে। ভারতীয় গাড়ি ছাড়া অন্য গাড়িকে অলিখিতভাবে রুট পারমিট দেয়া হচ্ছে না। ভারতীয় নীতির কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন পুরোটাই বলতে গেলে ভারতনির্ভর। ২০১৪ সালে সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ভারতের ততকালীন কংগ্রেস সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে তার মারাত্মক নেতিবাচক দিক উঠে এসেছে প্রধান বিচারপতির বক্তব্যে। সংসদ ভবনে যারা গেছেন তারা নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন, ভবনের ফ্লোরটি ভূমির সাথে। আর উপরে ছাতা। অর্থাৎ জনগণের প্রতিনিধিরা ভূমিতে বসে যে আইনটি প্রণয়ন করবেন সেটি হলো জনগণের জন্য ছাতা। সেই ছাতা নিয়েই যে প্রশ্ন উঠেছে তার অর্থ হলো জনগণের সাথে ফাটল তৈরি হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে সংসদের মুখ্য কাজ নিয়েই যদি প্রশ্ন ওঠে তাহলে জনগণের সার্বিক অবস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে তা বুঝিয়ে বলার অপেক্ষা রাখে না। সেজন্য দেশ রক্ষায় একটি কার্যকর সংসদের আলোচনা অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। এটা কীভাবে গঠন করা সম্ভব তা নিয়ে সবারই গঠনমূলকভাবে ভাবা দরকার। সেদিকে নজর দিলে বোধহয় প্রধান বিচারপতির বক্তব্যকে বিতর্কমূলক মনে না করে ইতিবাচকভাবে দেখার সুযোগ রয়েছে।
awalthakur@gmail.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন