স্টাফ রিপোর্টার : অবসর সুবিধা পেতে পদে পদে হয়রানির শিকার হচ্ছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। চাকরি শেষে নিজ সংস্থায় এমন হেনস্থা হওয়ায় তারা চরম হতাশা বোধ করছেন। বিষয়গুলো নিয়ে ভুক্তভোগী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সংশ্লিষ্ট কর্তকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেও কোনো সমাধান বের করতে পারেনি। উল্টো কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভোগান্তি বেড়েছে। এ কারণে ভুক্তভোগীদের কেউ কেউ সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে পাওনা বুঝে নেয়ার চেষ্টা করছেন। ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, ডিএসসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবসরে গেলে চার ধরনের সুবিধা পেয়ে থাকেন। প্রথমে পুরো বেতনে এক বছরের ছুটি পান। এই ছুটি চলাকালীন এককালীন ১৮ মাসের বেতন পান। এরপর প্রভিডেন্ট ফান্ডের সুবিধা দেয়া হয়। আর সর্বশেষ গ্রাচুইটি (আনুতোষিক) হিসেবে একশ’ সাড়ে তিন মাসের বেসিকের সমপরিমাণ সুবিধা দেয়া হয়। ঐহিত্যগতভাবে অবসরে গেলে অবিভক্ত ডিসিসিতে স্বাভাবিক নিয়মে অবসর সুবিধা প্রদান করা হতো। বিভক্তির পর ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন পুরাতন ঐতিহ্য বজায় রাখলেও ডিএসসিসি সেটার ব্যত্যয় করছে। দিনে দিনে এটার মাত্রা বেড়েই চলেছে বলে সংশিষ্টদের অভিযোগ।
এ প্রসঙ্গে ডিএসসিসি মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুবিধা দেয়ার ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা হচ্ছে কিনা আমার জানা নেই। কত সহজে তাদের সুবিধা দেয়া যায়, সে ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করব। জানা যায়, বর্তমানে অবসর সুবিধা পেতে ডিএসসিসির কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন এমন কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা শতাধিক। চলতি অর্থবছরে আরও কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ বেশ কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী অবসরে যাবেন। তারাও অবসর সুবিধা পাওয়ার বিষয়ে চরম অনিশ্চয়তায় রয়েছেন। চলতি বছরে কয়েক মাসের ব্যবধানে অবসরে যাচ্ছেন তত্ত¡বাবধায়ক প্রকৌশলী শিহাব উলাহ, সহকারী আইন কর্মকর্তা এমএস করিম, অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক (বাসটার্মিনাল) মারুফ হাসান, তত্ত¡বাবধায়ক প্রকৌশলী আবু সালেহ মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিনসহ অনেকে। অবসর সুবিধা দেয়ার চিত্র দেখে এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীও হতাশার মধ্যে রয়েছেন।
ডিএসসিসির সাবেক কর কর্মকর্তা ইকবাল আহমদ বলেন, ইতোমধ্যে আমার পিআরএল পিরিয়ড শেষ হয়েছে। আমি ১৮ মাসের এককালীন, প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা ও গ্রাচুইটি চার ভাগের একভাগ পেয়েছি। বাকি টাকা কবে পাব তা জানি না। একসঙ্গে টাকাগুলো পেলে কোনো কাজে লাগানো যেত। ডিএসসিসির সংস্থাপন বিভাগের সাবেক অফিস সহকারী সেলিম হোসেন বলেন, অবসরের অন্যান্য সুবিধাসহ গ্রাচুইটির ১০ লাখ টাকা পেয়েছি। বাকি ১৫ লাখ টাকা কবে পাব, সেটা জানি না। ডিএসসিসি থেকে বলা হচ্ছে ফান্ডে টাকা নেই। এ কারণে একসঙ্গে টাকা দিতে পারছে না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক কর্মকর্তা বলেন, অবসরের পর সুবিধা পেতে ধাপে ধাপে বিভিন্ন টেবিলে ঘুরতে ঘুরতে পায়ের জুতা ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে। তার পরও সময়মতো সুবিধাগুলো পাওয়া যাচ্ছে না। ক্ষেত্রবিশেষে কাউকে কাউকে খুশিও করতে হচ্ছে। সবকিছুর পরও সুবিধাগুলো একসঙ্গে পেলে আমাদের কাজে লাগত। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সেটা করছে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন