ডা. কালিদাস বৈদ্য লিখিত ‘বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের অন্তরালের শেখ মুজিব’ নামক গ্রন্থের ‘লেখকের কথা’ শিরোনামের অধীনে তিনি লিখেছেন-
“ইসলামের ধর্মগ্রন্থ কোরাণে আমরা দেখতে পাই “... অংশীবাদীদের যেখানে পাবে হত্যা করবে, তাদের বন্দী করবে। অবরোধ করবে এবং প্রত্যেক ঘাটিতে তাদের জন্য ওৎ পেতে থাকবে কিন্তু যদি তারা তওবা করে, নামাজ কায়েম করে, যাকাত দেয়, তবে তাদের পথ মুক্ত করে দেবে” (৯/৫) --- তাদের গ্রেপ্তার করবে, যেখানে পাও হত্যা কর, এবং তাদের সাথে বন্ধুত্ব কর না- (৪/৮৯).. “তাদের সাথে অবিরাম যুদ্ধ কর যতক্ষণ না আল্লার রাজত্ব কায়েম হয় (৮/৩৯) ... তাদের গর্দানে আঘাত কর (৪৭/৪) .... তাদের হাত, পা কেটে ফেল, শূল বিদ্ধ কর ও হত্যা কর” ইত্যাদি ভিন্নধর্মী বা অমুসলমানদের খতম করতে আল্লা নিজেই এরূপ অনেক নির্মম আদেশ দিয়েছেন। আমরা দেখতে পাই, ৯/৫ নং আয়াতে সন্ত্রাসবাদের নির্দেশ আছে। সেই সন্ত্রাসবাদ আজ আত্মঘাতী সন্ত্রাসবাদের রূপ নিয়েছে। ”
ডা. কালিদাস বৈদ্য কুরআনুল কারীমের উপরোক্ত ৪টি আয়াতের মাধ্যমে তার ভাষায় ‘মহান আল্লাহকে সন্ত্রাসবাদের নির্মম নির্দেশদাতা এবং কুরআনে সন্ত্রাসবাদের নির্দেশ আছে’ এমনটি দাবী করেছেন। এ বিষয়ে আমাদের বক্তব্য হলো- কুরআনুল কারীমের কোন আয়াত ও তার হুকুম বুঝতে হলে পূর্বাপরের আয়াত, অবতীর্ণের প্রেক্ষিত, অবস্থা ইত্যাদি সম্পর্কে অবগতি থাকা অত্যাবশ্যকীয়। অন্যথায় কুরআনের কোন আয়াতের হুকুম, ব্যাখ্যা বা মর্ম বুঝা সম্ভব নয়। অথচ ডা. কালিদাস বৈদ্য মুসলমানদেরকে সন্ত্রাসী প্রমাণ করতে সকলের সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহর ব্যপারে কথা বলতে দ্বিধা করেননি। আয়াতের অপব্যখ্যা করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার উস্কানী দিচ্ছেন। পারস্পরিক সহাবস্থান, সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি বিনষ্টের সুগভীর সক্রান্তের বীজ বপন করছেন।
ডা. কালিদাস বৈদ্য উত্থাপিত ৪টি আয়াতের বিস্তারিত বিধি-বিধান, প্রেক্ষাপট ইত্যাদি নি¤েœ উল্লেখ করা হলো।
এক. সূরা নিসা, ৮৯ নং আয়াত
সারাংশ: বর্ণিত আয়াতে কারীমা এবং তাতে বর্ণিত হুকুম অবতীর্ণ হয়েছিল মুনাফিকদের ক্ষেত্রে। যখন নবী সা. হিজরত করে মদীনায় চলে যান এবং তখন মুসলমানদের জন্য হিজরত করা ততটাই আবশ্যক ছিল যতটা আবশ্যক ছিল ইসলামের জন্য কালিমায়ে শাহাদাতের সাক্ষ্য দেয়া। কিন্তু মক্কায় তখন এমন কিছু মুনাফিক ছিল, যারা মদীনায় গিয়ে নবিজী সা. এবং সাহাবা রাযি. এর সামনে নিজেদের ঈমান যাহির করত আর মক্কায় ফিরে এসে মুশরিকদের সাহায্য করত এবং কীভাবে মুসলমানদের ক্ষতি সাধন করা যায় সে চক্রান্ত করত। তাই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা সে সকল মুনাফিকের ব্যপারে হুকুম নাযিল করলেন, অর্থাৎ তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় (আল্লাহ তায়ালার নির্দেশে হিজরত না করে এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত অব্যাহত রাখে তাহলে তাদেরকে পাকড়াও কর এবং যেখানে পাও হত্যা কর।
তবে এ সকল মুনাফিকের মুক্তির জন্য দুটি পথ ও আল্লাহ তায়ালা খুলে দিয়েছেন-
তবে যারা সে গোত্রের সাথে মিলিত হবে যাদের সাথে তোমাদের সন্ধিচুক্তি রয়েছে ২. অথবা তারা সরাসরি তোমাদের কাছে এ অবস্থায় আসবে যে তাদের অন্তর তোমাদের সাথে এবং তাদের স্বজাতির সাথে যুদ্ধ করতে অনিচ্ছুক।
এতএব, আয়াতে কারীমার মূল শিক্ষা এবং নির্দেশনা হল যদি তারা যুদ্ধ এবং চক্রান্ত থেকে নিবৃত্ত হয়, তাহলে তোমরা তাদেরকে হত্যা করো না। যেমন আল্লাহ তায়ালা পরবর্তী আয়াতে বলেন-
অতএব, তারা যদি তোমাদের থেকে নির্লিপ্ত হয় এবং তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করে ও তোমাদের কাছে সন্ধির প্রস্তাব পেশ করে তবে আল্লাহ তায়ালা তোমাদেরকে তাদের বিরুদ্ধে (যুদ্ধ করার) কোন সুযোগ রাখেননি। সূরা নিসা-৯০। আল্লামা রাযী রহ. এ আয়াতের তাফসীরে লিখেন- অর্থ: এর দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, কোন বিধর্মী মুসলমানদের ওপরে আক্রমন না করলে তাদেরকে আক্রমন করার সুযোগ নেই।
অতএব, আয়াতের সঠিক তাফসীর জানার পর আমরা নির্দ্ধিধায় বলতে পারি, বর্তমান জামানায় ইসলাম ও মুসলমানের যে সকল শত্রæ কুরআনুল কারীমের উক্ত আয়াতের ভুল ব্যখ্যা করে ইসলাম ও মুসলমানদের সন্ত্রাসী সাব্যস্ত করতে চায়, মুসলমানদের নামে অপবাদ রটায় এবং নিজেদের দাবীর স্বপক্ষে উক্ত আয়াতে কারীমাকে দলিল হিসেবে উপস্থাপন করে, তারা মূলত নিজেদের অসৎ উদ্দেশ্য সাধনে ধূ¤্রজাল সৃষ্টি করছে। তারা বর্ণিত আয়াতের পূর্ববর্তী আয়াত বাদ দিয়ে লাফ দিয়ে এই আয়াতে চলে আসে, আবার এর পরবর্তী আয়াত; যাতে সুন্দর সমাধান রয়েছে সেটাও উল্লেখ করে না। অতএব, আয়াতের পূর্বাপরের দিকে লক্ষ করলে এ কথা স্পষ্ট হয়ে যায় যে, এসব তাদের অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের ফসল বৈ কিছুই নয়।
দুই. সূরা তাওবার ৫ নং আয়াত
অর্থ: অতঃপর নিষিদ্ধ মাস অতিবাহিত হলে মুশরিকদের হত্যা কর যেখানে তাদেরকে পাও, তাদের বন্দী কর এবং অবরোধ করো। আর প্রত্যেকটি ঘাটিতে তাদের সন্ধানে ওঁৎ পেতে থাক। তবে তারা যদি তাওবা করে নামায কায়েম করে যাকাত আদায় করে তবে তাদেরকে পথ ছেড়ে দাও। নিশ্চই আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।
আয়াতের শানে নুযূল বা অবতীর্ণের প্রেক্ষিত:
নবী করীম সা. মক্কার থেকে হিজরত করে মদিনায় চলে যাওয়ার পর যখন ইসলাম ও মুসলমানগণের ভিত্তি কিছুটা মজবুত হল তখন নবী সা. মক্কার কোন কোন মুশরিক গোত্রের সাথে সন্ধি-চুক্তি করলেন। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই কয়েকটি গোত্র চুক্তি ভঙ্গ করল, বনু বকর যাদের অন্যতম। তাই যেহেতু তারা সন্ধিচুক্তি রক্ষা করেনি, এজন্য আল্লাহ তায়ালাও মুসলমানদেরকে তাদের সাথে সন্ধিমুক্তির চূড়ান্ত ঘোষণা সম্বলিত আয়াত অবতীর্ণ করেন এবং সন্ধি ভঙ্গের শাস্তি বর্ণনা করেন।
উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা বুঝা যায়, আয়াতে প্রদত্ত হত্যা এবং অন্যান্য হুকুম সমূহ প্রযোজ্য হবে ঐ সকল মুশরিকদের ক্ষেত্রে, যারা নিজেদের কৃত সন্ধিচুক্তি ভঙ্গ করে। একটু ভাবুন তো, কেউ সন্ধিচুক্তি করে তা ভঙ্গ করলে, তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া কি অন্যায়? কিন্তু ইসলাম বিদ্বেষীরা উক্ত আয়াতে কারীমাকেও নিজেদের অসৎ উদ্দেশ্য ব্যবহার করার চেষ্টা করে। তারা আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার প্রেক্ষাপটের প্রতি লক্ষ্য করে না। অথচ কোন আয়াতের হুকুম যথার্থ বুঝার জন্য নিয়ম হলো, সে আয়াতটির প্রেক্ষাপটের প্রতি লক্ষ্য করা। তেমনি তারা পূর্বাপরের আয়াতগুলোর প্রতিও লক্ষ্য করে না, যেখানে রয়েছে এ জাতীয় বিভিন্ন প্রশ্নের সুস্পষ্ট সমাধান। যেমন উক্ত আয়াতের পূর্বের আয়াতে বলা হয়েছে- যাতে চুক্তি রক্ষাকারী মুশরিক এবং যে সকল মুশরিক মুসলমানদের বিরুদ্ধে কাউকে সাহায্য না করবে, তাদের সাথে প্রতিশ্রæতি রক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছেন। আবার পরবর্তী আয়াত যাতে সুস্পষ্টই মুশরিকদের মুক্তির পথ এবং তাদেরকে নিরাপদ স্থানে পৌছে দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন-
আর যদি মুশরিকদের কেউ আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করে তবে তাকে আশ্রয় দিন। যেন সে আল্লাহর বাণী শুনে নেয়। অতপর তাকে তার নিরাপদ স্থানে পৌছে দিন। (এ বিধান) এজন্য যে, তারা এমন সম্প্রদায় যারা (কিছুই) জানে না। সূরা তওবা; ৬।
আয়াতের তাফসীরে আল্লামা রাযী রহ. লিখেন-
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযি. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, জনৈক মুশরিক হযরত আলী রাযি. কে বললেন, আমরা যদি চুক্তি শেষ হওয়ার পরে আল্লাহর বাণী শুনতে বা অন্য কোন প্রয়োজনে নবীর নিকট আসতে চাই তবে কি আমাদেরকে হত্যা করা হবে? তখন হযরত আলী রাযি. বললেন, না । (হত্যা করা হবে না।) কেননা আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, যদি মুশরিকদের কেউ আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করে তবে তাকে আশ্রয় দিন। যেন সে আল্লাহর বাণী শুনে নেয়। অতপর তাকে তার নিরাপদ স্থানে পৌছে দিন । সূরা তওবা; ৬।
অতএব আয়াতে কারীমার পূর্বের চার নম্বর আয়াত এবং পরবর্তী ছয় নম্বর আয়াতে পাঁচ নম্বর আয়াতে বর্ণিত মূল হুকুমের সঠিক ক্ষেত্র বলে দেয়া হয়েছে এবং এটাই আল্লাহ তায়ালার নির্দেশনা। এতে কোন নির্দোষ মুশরিককে যেখানে সেখানে হত্যা করতে বলা হয়নি বরং যদি মুশরিক মুসলমানদের আশ্রয়ে আসে ইসলাম গ্রহণ না করলেও তাকে নিরাপদ স্থানে পৌছে দেয়া মুসলমানদের ওপর আল্লাহ তায়ালা প্রদত্ত দায়িত্ব আর যদি ইসলাম মেনে নেয় তাহলে তো তারা আমাদের ভাই। অথচ ডা. কালিদাস বৈদ্য ৪ নম্বর আয়াত না দেখে, না বুঝে ৫ নম্বার আয়াত নিয়ে ধু¤্রজাল সৃষ্টি করছেন এবং পরবর্তী আয়াতগুলো যেখানে সমাধান রয়েছে সেগুলো না দেখার ভান করে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। তাই নির্দ্বিধায় বলা যায়, ইসলাম কোন নির্দোষ মানুষকে হত্যা করতে সমর্থন করে না। যেমন আল্লাহ তায়ালার নির্দেশনা হচ্ছে-
যে কেউ প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ বা পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টি করা ছাড়া কাউকে হত্যা করে সে যেন সমগ্র মানব জাতিকে হত্যা করল এবং যে কারো জীবন রক্ষা করল, সে যেন সমগ্র মানব জাতিকে রক্ষা করল। সূরা মায়েদা; ৩২।
আয়াত অবতীর্ণের প্রেক্ষিত: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত, উক্ত আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে এমন সম্প্রদায়ের ব্যপারে, যারা মক্কায় ইসলাম গ্রহণ করেছে বলে যাহির করত আর গোপনে মুসলমানদের বিরুদ্ধে মুশরিকদের সহযোগিতা করতো, এ কারণে মুসলমানগণ তাদের ব্যপারে মতানৈক্যে পড়ে গেলেন এবং বিতর্ক করতে লাগলেন, তারপরেই আয়াতটি অবতীর্ণ হল। (তাফসীরে মুনীর: খন্ড-৫, পৃষ্ঠা-১৯৯)
যে সকল মুনাফিকদের ব্যপারে আয়াত অবতীর্ণ হয়েছিল তারা হল, আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই এবং তার সাথীবর্গ। যারা উহুদের যুদ্ধের দিন নবী সা.কে ময়দানে রেখে সাথীদেরকে নিয়ে পালিয়েছিল।
আয়াতের বিধান: মুনাফিকদের বন্দি করা এবং হত্যা করা। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়’ অর্থাৎ যদি তারা আল্লাহর একত্ববাদের সাক্ষ্য এবং হিজরত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে তাদেরকে বন্দি এবং হত্যা কর যেখানে পাও...
আল্লামা আলুসী রহ. তাফসীরে রুহুল মা’আনী তে বলেছেন- আল্লাহর বাণী অর্থাৎ যদি তারা আল্লাহর রাস্তায় হিজরত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তাহলে মসজিদে হারামের ভিতরে/বাইরে যেখানে তাদেরকে পাও বন্দী কর এবং হত্যা কর।
আল্লামা শারাভী রহ. স্বীয় তাফসীর গ্রন্থে লেখেন, আয়াতে একটি সন্ধিচুক্তির বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে, যা রাসূল সা. কোন কোন আরব্য গোত্রের সাথে করেছিলেন। আর এ সকল চুক্তি স্বীকৃতি দেয় যে, নবী করীম সা. গোত্রগুলোর সাথে এই মর্মে চুক্তি করেছিলেন যে, তারা মুসলমানদের উপর আক্রমন করবে না এবং মুসলমানরাও তাদের উপর আক্রমন করবে না। তবে হে মুসলমান সম্প্রদায়, আল্লাহ তায়ালার এই নির্দেশ (হত্যা এবং বন্দির নির্দেশ) যখন তখন ব্যপকভাবে সবসময়ের জন্য নয়। কারণ ইসলাম হল অঙ্গীকার রক্ষাকারী দ্বীন। আর তোমরাতো কতিপয় গোত্রকে অঙ্গীকার প্রদান করেছো যে, তাদের কেউ মুসলমানদের আশ্রয়ে এলে অনুরূপ কেউ মুসলমান হয়ে তাদের কাছে গেলে তাদের দায়িত্ব হল তার হেফাজত করা এবং তার উপর যে কোন বাড়াবাড়ি প্রতিহত করা। আর এজন্যই আল্লাহ তায়ালা আয়াতের শেষে মূল বিধানের ব্যতিক্রম করে বলেছেন- তবে যারা এমন গোত্রে গিয়ে পৌছুবে যাদের সাথে তোমাদের চুক্তি রয়েছে তারা নিরাপদ। (সূরা নিসা- ৯০)
আল্লমা ফখরুদ্দীন রাযী রহ. বলেন, আল্লাহ তায়ালা বলেছেন-
আয়াতের উদ্দেশ্য হল, যদি তারা হিজরত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং মদিনার বাইরে তাদের অবস্থান নির্দিষ্ট করে নেয়, তাহলে যখন তোমরা তাদের পাও যেখানেই পাও, হত্যা কর আর এ অবস্থায় কিছুতেই তাদের কাউকে এমন বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না যে তোমাদের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আঞ্জাম দিবে এবং সাহায্যকারী রূপেও গ্রহণ করো না যে শত্রæর বিরুদ্ধে তোমাদের সাহায্য করবে। জেনে রাখুন, যখন আল্লাহ তায়ালা হত্যার নির্দেশ দিলেন, তখন এই নির্দেশ থেকে দুই প্রকার লোককে আলাদা রেখেছেন।
১। তবে যারা এমন গোত্রের সাথে মিলিত হবে যাদের মাঝে এবং তোমাদের মাঝে সন্ধি চুক্তি বিদ্যমান।
২। অথবা যারা এই এই প্রতিজ্ঞা করে তোমাদের কাছে এসেছে যে, তারা তোমাদের সাথে এবং স্বীয় গোত্রের সাথে যুদ্ধ করবে না। (তাফসীরে কাবীর: ১০/ ২২৮)
৫) আল্লামা শাহ আশরাফ আলী থানবী রহ. বয়ানুল কুরআনে বলেন-
* সে সময় হিজরতের ঐ হুকুম ছিল, যেই হুকুম বর্তমানে মুসলমানদের জন্য কালিমায়ে শাহাদাতের সাক্ষ্য দেওয়া।
৬) ইবনে আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত। একজন মুশরিক হযরত আলী রাযি.কে বললো, হে আলী! আমরা যদি উক্ত দিনগুলি অতিবাহিত হওয়ার পর রাসূল সা. এর কাছে কুরআন শ্রবণ বা অন্য কোন প্রয়োজনে আসতে চাই তাহলে আমাদেরকে কি হত্যা করা হবে? তখন আলী রাযি. বললেন, না। আল্লাহ তায়ালা বলেন, মুশরিকদের কেউ যদি তোমাদের আশ্রয় প্রার্থনা করে তাহলে তাদের আশ্রয় দাও। যাতে সে আল্লাহর বাণী শ্রবণ করতে পারে।
তিনি আরো বলেন, আয়াতের উদ্দেশ্য হল, এ কথা ব্যক্ত করা যে, যখন কোন বিধর্মী ইসলামের ব্যপারে কোন দলীল-প্রমাণ জানতে চায় বা কুরআনের বাণী শ্রবন করতে চায় তাহলে তাকে সুযোগ দেয়া ওয়াজিব। তাকে হত্যা করা হারাম এবং নিরাপদ স্থানে তাকে পৌছে দেয়া। (তাফসীরে রাযী: ১৫/২৩৫)
৭) আল্লামা সাইয়েদ কুতুব রহ. তাফসীর ফী যিলালীল কুরআনে বলেন, আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে মুশরিকদেরকে নির্দিষ্ট চার মাস অতিবাহিত হওয়ার পরে পূর্ণরূপে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দেওয়াটা ইসলাম ধর্মের উদার দৃষ্টিভঙ্গি। তার উত্তমতা এবং বাস্তবমূখী হওয়ার বিষয়টি প্রমাণ করে। অনুরূপ উক্ত আয়াতে সকল মুশরিককে হত্যা বা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের কথা বলা হয়নি। যেমনটি অনেকে বলে থাকে। অতএব কোন মুশরিক (যাকে জাহিলী কোন অজ্ঞতা গ্রাস করেনি) সে যদি ইসলামের জন্য নিজেকে পেশ করে এবং ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয় তাহলে ইসলাম তাদেরকে ইসলামী রাষ্ট্রে পূর্ণ নিরাপত্তার ভার প্রদান করে। আর আল্লাহ তায়ালা রাসূল সা.কে নির্দেশ দিয়েছেন, তিনি যেন মুশরিকদের আল্লাহর কালাম শ্রবণ এবং দ্বীনী দাওয়াত পরিপূর্ণরূপে তাৎপর্য সহকারে জানার সুযোগ করে দেন এবং তাদেরকে নিরাপদ স্থানে পৌছে দেওয়া পর্যন্ত নিরাপত্তা প্রদান করতে। এ সকল উদারতা ও নিরাপত্তা প্রদানের নির্দেশ ঐ সময়ের জন্য প্রযোজ্য হবে, যখন মুশরিকদের কেউ তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করে। যদি আশ্রয় চায় তবে তাকে আশ্রয় দাও............... (তাফসীর ফী যিলালিল কুরআন)
তিন. সূরা আনফালের ৩৯ নং আয়াত:
‘আর তাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাক, যতক্ষণ না ফিতনা শেষ হয়ে যায় এবং দ্বীন সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর হয়ে যায়।’
বর্ণিত আয়াতে কারীমাকে ইসলাম বিদ্বেষীরা বিকৃতভাবে মানুষের সামনে প্রচার করে বেড়ায় আর সকলের কাছে ইসলাম ও মুসলমানদেরকে সন্ত্রাসী বলে চিত্রায়িত করতে চায়। অথচ উক্ত আয়াতের পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী আয়াত সমূহ অধ্যয়ণ করলে তাদের উত্থাপিত এ অসার দাবী এবং সর্বপ্রকার সংশয় দূরীভূত হয়ে যায়। পাঠক, একটু মনোযোগ দিয়ে পূর্বাপর আয়াতগুলো লক্ষ্য করুন। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
অর্থ: আর তাদের কী বা গুণ আছে যে, আল্লাহ তাদেরকে শাস্তি দেবেন না অথচ তারা মানুষকে মসজিদুল হারামে যেতে বাধা দেয়, যদিও তারা তার রক্ষক নয়। মুত্তাকীগণ ছাড়া অন্য কোনও লোক তার রক্ষক হতেই পারে না। কিন্তু তাদের অধিকাংশ লোক (এ কথা) জানে না। (সূরা আনফাল: আয়াত- ৩৪)
অর্থ: বাইতুল্লাহর নিকট তাদের নামায শিশ দেয়া ও তালি বাজানো ছাড়া কিছুই নয়। সুতরাং তোমরা যে কুফরী কাজকর্ম করতে, তজ্জন্য এখন শাস্তি ভোগ কর। (সূরা আনফাল: আয়াত- ৩৫)
অর্থ: যারা কুফর অবলম্বন করেছে, তারা আল্লাহর পথে মানুষকে বাঁধা দেওয়ার জন্য নিজেদের অর্থ সম্পদ ব্যয় করে।
হে নবী! যারা কুফর অবলম্বন করেছে, তাদেরকে বলে দাও তারা যদি নিবৃত্ত হয় তবে অতীতে যা কিছু হয়েছে তা ক্ষমা করে দেওয়া হবে। কিন্তু তারা যদি পুনরায় সে কাজই করে তবে পূর্ববর্তী লোকদের সাথে যে আচরণ করা হয়েছে তা তো (তাদের সামনে) রয়েছেই।
লক্ষ করুন, পূর্বের আয়াতে আল্লাহ তায়ালা কাফেরদের অন্যায় কাজের কথা উল্লেখ করেছেন- অর্থাৎ কাফেররা মুসলমানদেরকে তাদের প্রাণকেন্দ্র মসজিদুল হারামে প্রবেশের অধিকার থেকে বাঁধা প্রদান করত। তারপর আল্লাহ তায়ালা নবী সা. কে পূর্ববর্তী উম্মতদের বাড়াবাড়ির কারণে তাদের যে পরিণতি হয়েছিল তা উল্লেখ করে ভীতি প্রদর্শনের নির্দেশ দেন। তা হল, যখনি পূর্ববর্তী উম্মতগণের মাঝে কোন নবী আসতেন এবং তাদের উম্মতেরা যদি তাঁকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করত তখন সে নবী তাদের উপর আল্লাহ তায়ালার আযাবের কামনা করতেন। এরপরে তারা যদি এরূপ অন্যায় থেকে কোনক্রমেই নিবৃত্ত না হয় তখন আপন হক্ব আদায়ের জন্য তাদের সাথে যুদ্ধ করতে নির্দেশ প্রদান করেন। যাতে মসজিদুল হারাম কাফেরদের হাত থেকে মুক্ত হয় এবং তাতে একমাত্র আল্লাহ তায়ালা ছাড়া অন্য কারো ইবাদত না করা হয়। আর এভাবেই দ্বীন পরিপূর্ণরূপে আল্লাহর জন্য হয়। কারণ কাফেররা তখন কাবার পার্শ্বে বহু মূর্তিও স্থাপন করেছিল এবং পূঁজা করত। অতএব উল্লেখিত বিবরণে এ কথা স্পষ্ট হল যে, এ সকল আয়াতে ঐ সকল কাফেরদের সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে, যারা ইসলামের ক্ষতি-সাধনের জন্য তাদের অর্থ ব্যয় করত, মুসলমানদেরকে তাদের মসজিদে প্রবেশে বাঁধা দান করত- এমন ক্ষেত্রে তাদের সাথে যুদ্ধ করা মুসলমানদের জন্য আবশ্যক হয়ে পড়ে।
এখানে সাধারণ বিধর্মীদের ব্যপারে বলা হয়নি। বরং যারা সন্ত্রাসী বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী তাদের বিরুদ্ধে বলা হয়েছে। সন্ত্রাসী যেই হোক তাকে প্রতিহত করতে কে না বলে? হ্যাঁ, তারা যদি আগেই এ ধরণের অন্যায় কাজ থেকে নিবৃত্ত হয় তাহলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে এবং পূর্বের কৃত অপরাধও মাফ করে দেওয়া হবে। বরং কত উদার নীতির কথাই না বলা হল অথচ ডা. কালিদাস বৈদ্য ইসলামের ধর্মগ্রন্থ কুরআনকে সন্ত্রাসের উস্কানীদাতা বলে নির্লজ্জ মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা উক্ত আয়াতে কোন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা বা কারো বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে যুদ্ধ করতে নির্দেশ দেননি। বরং কারো অপরাধ প্রমাণিত হলে মানব জাতির কল্যাণেই এ বিধানটি দিয়েছেন। আপনি জেনে থাকবেন যে, নিরপরাধ মানুষকে হত্যার ব্যপারে ইসলাম বড় কঠোর। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা একজন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করাকে গোটা মানবজাতিকে হত্যার নামান্তর বলে ঘোষণা দিয়েছেন বিপরীতে একজন মানুষের প্রাণ রক্ষা করাকে গোটা মানব প্রাণ রক্ষা করার শামিল বলে ব্যক্ত করেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন- যে কেউ প্রাণের বিনিময়ে প্রাণ অথবা পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টির কারণ ছাড়া কাউকে হত্যা করল, সে যেন সকল মানুষকেই হত্যা করল এবং যে কারো জীবন রক্ষা করল, সে যেন সবার জীবন রক্ষা করল। (সূরা মায়িদা: আয়াত-৩২)
আশাকরি, পূর্বাপরের আয়াত এবং নিরপরাধ মানুষ হত্যার ব্যপারে কুরআনের কঠোর অবস্থানের বিষয়টি জানার মাধ্যমে আপনার মনের সৃষ্ট প্রশ্নের সমাধান পাওয়া গেছে।
চার. সূরা মুহাম্মদের ৪ নং আয়াত।
আল্লাহ তায়ালা বলেন-অতঃপর যখন তোমরা কাফেরদের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হও তখন তাদের গর্দানে মার, অবশেষে যখন তাদেরকে পূর্ণরূপে পরাভূত কর তখন তাদেরকে শক্ত করে বেধে ফেল। অতঃপর হয় তাদের প্রতি অনুগ্রহ কর, না হয় তাদের নিকট হতে মুক্তিপণ লও। তোমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাবে যে পর্যন্ত না শত্রæপক্ষ অস্ত্র সমর্পন করবে। তোমাদের প্রতি এটাই নির্দেশ। আল্লাহ চাইলে নিজেই তাদেরকে শাস্তি দিতেন কিন্তু তিনি তোমাদের একজনকে অপরের দ্বারা পরীক্ষা করতে চান। আর যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে, আল্লাহ কখনই তাদের কর্মফল নিস্ফল করবেন না। (সূরা মুহাম্মদ-৪) উক্ত আয়াতে কারিমার প্রেক্ষাপটের প্রতি লক্ষ্য না করে কেবল বাহ্যিক অবস্থার বিবেচনায় ইসলাম বিদ্বেষীরা মুসলমানদেরকে এ বলে অপবাদ দেয় যে, আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদেরকে যখনি কোন মুশরিকদের সাথে যে কোন স্থানে সাক্ষাত হয় তাদেরকে কোন অপরাধ ব্যতিত হত্যা করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
সংশয় নিরসন: আয়াতের প্রতি লক্ষ্য করুন। এখানে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, যতক্ষণ না শক্রপক্ষ অস্ত্র সমর্পণ করবে। অর্থাৎ আয়াতটি মূলত যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রæপক্ষ যখন অস্ত্র নিয়ে আক্রমন বা হত্যা করছে, সে সময় সংক্রান্ত। যুদ্ধ চলাকালীন একজন সৈনিকের ভূমিকা কী হবে, সে ব্যপারে এখানে নিদের্শনা দেয়া হয়েছে। এটা স্বাভাবিক সময়ের বিষয় নয়। আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা ওয়াহবাতুয যুহাইলী রহ. তাফসীরে মুনীরে লেখেন- যুদ্ধের ময়দানে এমন নির্দেশ আল্লাহ তায়ালা এজন্য দিয়েছেন, যাতে কাফেরদের সাথে আর কোন যুদ্ধ না থাকে অর্থাৎ তারা হয়তো যুদ্ধে পরাজিত হবে বা অঙ্গিকারের ভিত্তিতে অস্ত্র সমর্পণ করবে। মূলত: এ নির্দেশের চূড়ান্ত টার্গেট হল, যাবতীয় যুদ্ধ বিগ্রহের ইতিটানা। এ নির্দেশ স্বাভাবিক স্থীতিশীলতা বজায় রাখার প্রতি উৎসাহ প্রদান করার জন্য। যাতে মানুষ শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে বসবাস করতে পারে এবং সুকৌশলে, সাগ্রহে, দলীল-প্রমাণ ও সদুপদেশের মাধ্যমে ইসলামের বিস্তৃতি ঘটে। ইসলামের প্রচার-প্রসার মোটেই তরবারীর দ্বারা হয়নি, যেমনটি ডা. কালিদাস বৈদ্য বুঝাতে চেয়েছেন বরং ইসলামের প্রচার-প্রসার লাভ করেছিল মহৎ চরিত্র এবং স্বাধীনচেতা উদার কর্মযজ্ঞের মাধ্যমে। জোর-জবরদস্তির মাধ্যমে নয়। তাইতো কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, দ্বীনের ক্ষেত্রে কোন জোর-জবরদস্তি নেই। অন্যত্র বলেছেন, তিনি তোমাদের জন্য ধর্ম পালনে কোন কঠোরতা আরোপ করেননি। সূরা হজ্ব-৭৮।
ইসলাম এতটাই উদার যে, মুসলিম দেশের সংখ্যালঘু বিধর্মীদের জান-মালের নিরাপত্তার প্রতি গুরুত্বারোপ করে ইসলামের মহানবী, মানবতার কাÐারী মুহাম্মদ সা. বলেছেন, তাদের (বিধর্মীদের) প্রাণের (নিরাপত্তার গুরুত্ব) আমাদের (মুসলিমদের) প্রাণের মতই গুরুত্বপূর্ণ। তাদের ধন-সম্পদের নিরাপত্তাবিধান নিশ্চিত করা আমাদের ধন-সম্পদের নিরাপত্তার মতই। পরিশেষে আমরা দ্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, মহান আল্লাহ তায়ালা অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করার নির্দেশ দেননি। বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বিশৃঙ্খলা-অরাজকতা, সন্ত্রাসীকর্মকাÐ নির্মূল ও প্রতিহত করার জন্য কিছু কঠোর আইন ও বিধি-বিধান প্রণয়ন করেছেন। যে শত্রæ অন্যায়ভাবে প্রতিপক্ষের ওপর অস্ত্রধারণ করে তাকে প্রতিহত করতে বলেছেন। তার সাথে কঠোর আচরণ করা কি অপরাধ? নাকি এটাই আইন ও নীতির দাবী।
উপসংহার: ডা. কালিদাস বৈদ্যের বই ‘বাঙালির মুক্তিযুদ্ধে অন্তরালের শেখ মুজিব’ এ ১৯৭১ সালে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুসহ বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে অনেক আপত্তিকর ও স্পর্শকাতর বক্তব্য আছে যা আমার আলোচ্য বিষয় নয়। বাংলাদেশ মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান সকলের। আমরা সবাই ভাই ভাই, সকলে মিলে মিশে এ দেশে থাকতে চাই। আমাদের মাঝে এই বইয়ে পবিত্র কোরআন মাজিদের আয়াতের অপব্যাখ্যা দ্বারা কোনরূপ রাজনৈতিক, সামাজিক বা সাম্প্রদায়িক অসহিষ্ণুতা সৃষ্টি না হয় এজন্য বাংলাদেশের আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ মসজিদের ইমাম, খতিব, ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলির নেতাকর্মীসহ প্রত্যেক মুসলমানের উচিৎ ও ঈমানী দায়িত্ব হচ্ছে, কোরআন মাজিদের এই আয়াতগুলির দ্বারা যাতে কোনরূপ বিভ্রান্তি সৃষ্টি না হয়, সেজন্য প্রত্যেকেই নিজ নিজ অবস্থানে জুমআর বয়ানে, ওয়াজ মাহফিলে অপব্যাখ্যাকৃত আয়াতগুলির সঠিক ব্যাখ্যা তুলে ধরে জনগণকে সচেতন করা।
জবাব প্রদান ও গবেষণায়: মুফতি ইলিয়াছ মাদারীপুরী, মুফতি রায়হান ফারহাত, মুফতি আকরাম হুসাইন
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন