সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

বাড্ডায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ২ উভয়ই আওয়ামী নেতা ফরহাদ হত্যায় জড়িত

স্টাফ রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ৬ জুলাই, ২০১৮, ৬:০২ পিএম

 রাজধানীর বাড্ডায় ডিবি পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেনÑ নুরুল ইসলাম ওরফে কিলার সানি (২৮) ও অমিত ওরফে কিলার দাদা (৩৫)। গতকাল ভোর ৪টার দিকে সাঁতারকুলের প্রজাপতি গার্ডেন এলাকায় ডিবির উত্তর বিভাগের একটি দলের সঙ্গে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। নিহত দু’জন বাড্ডার আওয়ামী লীগ নেতা ফরহাদ হোসেন হত্যায় জড়িত ছিল বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। ময়না তদন্তের জন্য নিহত দু’জনের লাশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। 

গত ১৫ জুন উত্তর বাড্ডার আলীর মোড়ের কাছে বায়তুস সালাম জামে মসজিদের সামনে ফরহাদ হোসেনকে গুলি করে একদল দুর্বৃত্ত। তিনি বাড্ডা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও এলাকায় ডিসের ব্যবসা করতেন।
ডিবির উত্তর বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান ঘটনার সত্যাতা নিশ্চিত করে জানান, ফরহাদ হোসেন হত্যাকাÐের পর স্থানীয় সিসি টিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে দেখা গেছে যেÑ হত্যাকাÐ শেষে দু’জন ব্যক্তি অস্ত্র হাতে পালিয়ে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে একজন লাল গেঞ্জি পরিহিত ছিল। ওই লাল গেঞ্জি পরিহিত যুবকই ছিল সানি। অন্যজন হল অমিত। সে ভারতে পালিয়ে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসী আশিক ও আমেরিকায় পালিয়ে থাকা আরেক সন্ত্রাসী মেহেদীর সহযোগী ছিল। অমিত রাজধানীর বিভিন্ন কিলার গ্রæপের সঙ্গে জড়িত এবং ‘কিলার দাদা’ হিসেবে পরিচিত ছিল। ডিসি আরও বলেন, বাড্ডা এলাকায় লেগুনার চাঁদাবাজি, ফুটপাত নিয়ন্ত্রণ এবং গরুর হাটের চাঁদাবাজির ভাগ বাটোয়ারাসহ নানা দ্ব›েদ্ব ফরহাদ হোসেনকে হত্যা করা হয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। হত্যাকাÐের দিন একাধিক গ্রæপ অস্ত্রসহ ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়েছিল। তাদের মধ্যে অস্ত্রধারী ‘শুটার’ ছিল ছয়জন। হত্যাকাÐের পরে জড়িতদের কেউ ঢাকা বা দেশের বাইরে চলে গিয়েছিল। তাদের ধরতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ব্যার্থ হয় পুলিশ।
গতকালের অভিযান সম্পর্কে ডিসি মশিউর জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারেন যে, বাড্ডার সাঁতারকুলের প্রজাপতি গার্ডেনের পাশে নির্মাণাধীন একটি ভবনের সামনে কিছু সন্ত্রাসী অবস্থান করছে। তাদের মধ্যে ফরহাদ হোসেনকে হত্যায় জড়িত কয়েকজন রয়েছে। পরে রাত ৩টার দিকে ডিবি পুলিশের উত্তর বিভাগের একটি দল ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। সন্ত্রাসীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বের হওয়ার সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তখন পুলিশও আত্মরক্ষার্তে গুলি চালায়। একপর্যায়ে স্থানীয়রাও সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধে লাঠিসোটা নিয়ে ঘটনাস্থলে আসে। গোলাগুলির পর ভবনের নিচতলা থেকে দু’জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎক দু’জনকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে দুটি পিস্তল ও কয়েক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সিসি টিভি ফুটেজে প্রাপ্ত ছবি ও স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যমতে নিহত দু’জনের পরিচয় সনাক্ত করা গেছে। তাদের মধ্যে নুরুল ইসলাম ওরফে কিলার সানি আওয়ামী নেতা ফরহাদ হোসেন হত্যাকাÐের মূল শুটার। এ ছাড়া অমিত হত্যায় জড়িত সন্ত্রাসীদের সব ধরণের সহযোগিতা করেছে। সে আন্ডারগ্রাউন্ডে থেকে হত্যাসহ সব ধরণের অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল। তাদের সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।
এদিকে ময়না তদন্তকারী কর্মকর্তা বাড্ডা থানার এসআই শহীদুল আলম গতকাল সন্ধ্যার দিকে জানান, ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশ দুটির সুরতহাল সম্পন্ন হয়েছে। চিকিৎসকরা চাইলে আজ (গতকাল) রাতে ময়না তদন্ত সম্পন্ন হতে পারে বলে তিনি জানান। তখন লাশ হস্তান্তরের পরবর্তী করণীয় জানানো হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন