বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

প্রধান দুই দলের মনোনীতদের চেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে বিদ্রোহীরা

প্রকাশের সময় : ১৭ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মামুনুর রশীদ মামুন, বিশ্বনাথ (সিলেট) থেকে

আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার সর্বত্র বইছে নির্বাচনী হাওয়া। প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় এবারের নির্বাচন যতোটা উৎসবমুখর হওয়ার কথা ছিল, দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে নানা আশঙ্কায় ভুগছেন সাধারণ ভোটার ও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। রাত-দিন উপেক্ষা করে ভেটারদের মন জয় করতে বিরামহীন প্রচারণা চালালেও দলীয় প্রার্থী নির্বাচনে বিতর্ক থাকায় অনেকটা সমালোচনার মুখে বিব্রতকর অবস্থায় রয়েছেন স্থানীয় আ.লীগ-বিএনপির দলীয় প্রার্থী ও নেতারা। এতে করে সুবিধাজনক অবস্থানে থেকে বিরামহীন প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন উভয় দলের বিদ্রোহীরা। আ.লীগ, বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে প্রার্থী নির্বাচনের অভিযোগ তুলছেন দলীয় অনেক নেতাকর্মীরা। তারা বলছেনÑ কোনো দিন দলীয় কর্মকা-ে অংশ না নিলেও টাকার জোরে উড়ে এসে জুড়ে বসেছেন আ.লীগ, বিএনপির একাধিক প্রার্থী। অভিযোগ রয়েছে তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে স্থানীয় সিনিয়র নেতারা মোটা অংকের টাকা নিয়ে জনবিচ্ছিন্ন ও বিভিন্ন কারণে বিতর্কিত প্রার্থীদের মনোনয়ন দিয়েছেন। এতে বঞ্চিত হয়েছেন দীর্ঘদিনের রাজপথের পরীক্ষিত ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতারা। মনোনয়ন বঞ্চিত নেতাদের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ আর অসন্তুষ বিরাজ করছে। এদিকে রামপাশা ইউনিয়নে আ.লীগ মনোনীত প্রার্থী আলমগীর হোসেনের নাম সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রবাস পুরানো মামলার আসামির তালিকায় থাকার কথা জানা গেছে। এছাড়াও বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়ন পরিষদের প্রার্থীকে বিএনপি ঘরাণার লোক আখ্যাদিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী ও উপজেলা আ.লীগের সাবেক সহ-সভাপতি শাহ আসাদুজ্জামান আসাদ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দলীয় মনোনয়ন ক্রয়ের অভিযোগ তুলেছেন আব্দুল জলিল জালালের বিরুদ্ধে। এসব বিতর্কের ফলে নির্বাচনী মাঠে অনেকটা হিমশিম খাচ্ছেন উভয় দলের মনোনীত প্রার্থীরা। এদিক থেকে বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন বিদ্রোহী প্রার্থীরা। তাদের কারো ব্যক্তি ইমেজ, পারিবারিক ঐতিহ্য এবং নিজ নিজ ইউনিয়নে ব্যাপক পরিচিতি ও দীর্ঘদিন দলীয় রাজনীতির অগ্রভাগে থেকে নেতৃত্ব দেয়ার পাশাপাশি সামাজিক কর্মকা-ে জড়িত থাকায় নির্বাচনী মাঠে সহজেই সাধারণ মানুষের আস্তা অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছেন। এদিকে আ.লীগ-বিএনপি সাধারণ ভোটারদের চাহিদার বিপরীতে কতিপয় বিতর্কিত প্রার্থীদের দলীয় মনোনয়ন দেয়ায় নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে শঙ্কিত রয়েছেন অনেকেই। আবার সরকারি দলের প্রার্থীরা মনোনয়ন দাখিলের দিন থেকে শুরু করে প্রকাশ্যে একের পর এক নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলেও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে জনমনে। সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে সাধারণ ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তাদের কাছে স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীকের চেয়ে উপযুক্ত প্রার্থী নির্বাচিত করা অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ। তাই জনগণের কাছের মানুষ হিসেবে পরিচিত, সুখ-দুঃখের সাথী ছিলেনÑ এমন প্রার্থীকেই নির্বাচিত করতে চান তারা। তাছাড়া উভয় দলের তৃণমূলের অনেক কর্মী সমর্থকরা প্রকাশ্যে দলীয় প্রার্থীদের বিরোধিতা না করলেও ভেতরে ভেতরে বিদ্রোহী প্রার্থীদের নানাভাবে উৎসাহ, সহযোগিতা ও সমর্থন যোগান দিয়ে চলেছেন নিরন্তর। জানা গেছে, আগামী ৭ মে অনুষ্ঠিতব্য উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৪১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। নির্বাচন অফিস কর্তৃক মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই সম্পূর্ণ হয়েছে গত ১১ এপ্রিল সোমবার। যাচাই-বাছাইকালে কোন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন আগামী ১৮ এপ্রিল এবং প্রতীক বরাদ্দ ১৯ এপ্রিল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন