মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) উপজেলা সংবাদদাতা
মির্জাপুরের উয়ার্শী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ হেল শাফিসহ আ.লীগের ৫ ও বিএনপির ৭ প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এছাড়া আ.লীগ ঘরানার সহিদুর রহমান সরকার নিজেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। দুই দলের ১২ প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের পর দলের শীর্ষ নেতাদের মন জয় করতে নানাভাবে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। তারা নিজ দলের মনোনয়ন পেতে বিগত দিনের নিজের কর্মকা- দলের হাইকামান্ডের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। তারা প্রত্যেকেই দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী বলে জানা গেছে। উয়ার্শী ইউনিয়নে যারা আ.লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন তারা হলেন পরপর দুবার নির্বাচিত (বর্তমান) চেয়ারম্যান উপজেলা আ.লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ হেল শাফি, টাঙ্গাইল জেলা আ.লীগের সাবেক ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মাহবুব আলম মল্লিক (হুরমহল), ইউনিয়ন আ.লীগ সভাপতি ফরহাদ আলী খান শাহিন, ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক মনির হোসেন খান ও উপজেলা আ.লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক আরিফ খান। অপরদিকে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন ফরম যারা সংগ্রহ করেছেন তারা হলেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলাম খান লিমটন, উপজেলা বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক শরীফুজ্জামান খান (সাঈদ), উপজেলা বিএনপির সদস্য ও উয়ার্শী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, উপজেলা বিএনপির সদস্য সাবেক ছাত্রদল নেতা ইয়ার হোসেন, উয়ার্শী ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক লিপটন মল্লিক, টাঙ্গাইল পৌরসভার ১৪নং ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও শহর যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. বাবুল খান, উয়ার্শী ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আতিকুর রহমান খান সুমন। প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মম্ভাব্য প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার লড়াইয়ের পাশাপাশি এলাকার ভোটারদেরও মন জয় করতে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া উয়ার্শী ইউনিয়ন আ.লীগের সাবেক সভাপতি মরহুম খোরশেদ আলম সরকারের ছেলে এবং ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ আব্দুর রহমান সরকারের নাতি সহিদুর রহমান সরকার নিজেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। জানা গেছে, উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মধ্যে উয়ার্শী ইউয়িন নানা কারণে রাজনৈতিকভাবে দুই দলের কাছেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ইউনিয়নে টাঙ্গাইল জেলা আ.লীগের সভাপতি জেলা পরিষদের প্রশাসক ফজলুর রহমান খান ফারুক ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম খানের (এনআই খান) বাড়ি। জাতীয় এই দুই নেতার জন্মস্থানসহ নানা কারণে এই ইউনিয়নের মানুষ খুবই রাজনৈতিক সচেতন। গত দুই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আ.লীগ প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল্লা হেল শাফির সঙ্গে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীরা বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। কিন্তু আসন্ন নির্বাচনে আ.লীগ থেকে একাধিক প্রার্থী দলীয় নৌকা প্রতীক পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তাদের মধ্যে থেকে একক প্রার্থী বাছাই এখন দলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দলের হাইকমান্ড দলীয় যোগ্য প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল করলে এই ইউনিয়নটি আ.লীগের হাতছাড়া হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে বলে দলের তৃণমূল পর্যায়েল নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন। অপরদিকে বিএনপি দলীয় ৭ জন প্রার্থীই দলের মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী। তাদের মধ্যে থেকে একক প্রার্থী বাছাই করে সম্মিলিতভাবে দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করলে এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের চেয়ারটি পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে না বলে দলের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে মির্জাপুর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মীর শরীফ মাহমুদ বলেন, রাজনৈতিক কারণে উয়ার্শী ইউনিয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বরাবরের মতো এই ইউনিয়নে আ.লীগের দলীয় প্রার্থীই বিজয়ী হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফরিদ বলেন, দলের প্রার্থী বাছাইয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামত নেয়া হবে যাতে দলের প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করা যায়। নির্বাচন অফিস সূত্র জানান, ২৭.৮১ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের উয়ার্শী ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা রয়েছে ২১২০৫ জন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন