শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ ‘সন্ত্রাসীরা আমাকে পঙ্গু করে দিয়েছে’

প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কক্সবাজার অফিস
এক সময়ের সদা চঞ্চল ও পরিচিত ব্যবসায়ী আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইলিয়াছ সওদাগর এখন পঙ্গু হওয়ার পথে। গত ১৬ জানুয়ারি স্বশস্ত্র সন্ত্রাসীরা গুলি করে ও কুপিয়ে তার দু’হাত-পা ঝাঁজরা করে দেয়। ছুরিকাঘাত করে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে। হাতুড়ি ও লোহার রড দিয়ে বেপরোয়াভাবে পিটিয়ে থেতলে দিয়েছে তার সারা শরীর। হাঁটাচলা তো দূরের কথা, দাঁড়াতেও পারে না শহরজুড়ে পরিচিত এই ব্যবসায়ী। তার দুই পা ও এক হাতে প্লেট লাগানো হয়েছে। নিজ হাতে খাওয়া-দাওয়া সারতে পারেন না। ঠিকমতো ওঠতে-বসতে কষ্ট হয়। ব্যথা-যন্ত্রণার কারণে ঘুমাতে পারেন না। প্রাকৃতিক কাজ সারতে হয় অপরের সহযোগিতায়। তাকে নাড়াচাড়া করতে দরকার হয় অন্তত দুইজন মানুষ। শহরে এক হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে ইলিয়াছ সওদাগর তার উপর সন্ত্রাসী হামলার এই বর্ণনা দেন। দীর্ঘ আড়াই মাসের অধিক সময় তিনি ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এখনো পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেনি। এরপরও ১২ এপ্রিল কক্সবাজারে গণমাধ্যমকর্মীদের মুখোমুখি হন ইলিয়াছ সওদাগর। হুইল চেয়ারে ভর করে তাকে আনা হয় শহরের আবাসিক হোটেলের একটি কক্ষে। সেখানে তিনি বর্ণনা দেন তার ওপর অমানবিক হামলার ঘটনার। এ সময় তিনি ‘অলৌকিক’ভাবে বেঁচে যাওয়ায় মহান আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং সবার কাছে দোয়া কামনা করেন। ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে ইলিয়াছ সওদাগর বলেন, গত ১৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় শহরের কলাতলী বাইপাস রোডের আদর্শ গ্রাম অফিস এলাকায় তিনি ব্যক্তিগত অফিসে বসে ব্যবসায়িক কাজ করছিলেন। হঠাৎ সন্ত্রাসী বাহিনী ধারালো কিরিচ, হাতুড়ি, লোহার রড ইত্যাদিসহ অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এসে প্রথমে তার দুই পায়ে গুলি করে। এরপর তারা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বেপরোয়া কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে মারাত্মক আহত করে। তার মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে রাস্তার পাশে ফেলে সন্ত্রাসীরা দ্রুত মাইক্রোবাসে করে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা ঘটনাস্থল থেকে তাকে রক্তাক্ত আহতাবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে চট্টগ্রামে রেফার করে। দুইদিন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন হাসপাতালের আইসিইউতে (নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র) অবস্থার কোন পরিবর্তন না হওয়ায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎক তাকে ঢাকা রেফার করে। এরপর তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা অ্যাপোলো হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়। ইলিয়াছ সওদাগর বলেন, বর্বরোচিত হামলার সাথে জড়িত চিহ্নিত কয়েকজন আসামি গ্রেফতার হলেও ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী শাহাব উদ্দিন এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। হামলাকারীদের চিনতে পেরেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, শাহাব উদ্দিন, আব্দুল আলিম, শহিদুর রহমান, শফি উল্লাহ, হিরু, কাইয়ুম, মো. বাদশা প্রকাশ বাদশা ডাকাত, নাজিম, মঈন উদ্দিন প্রকাশ ডাকাত মঈন উদ্দিন, রাসেল (ড্রাইভার)। তিনি বলেন, তারা চট্টমেট্টো-ট-১১-৬১৮৪নং মাক্রোবাসে করে এসেছিল। এ দিকে ইলিয়াছ সওদাগরের ওপর হামলার ঘটনায় স্ত্রী মর্জিনা আকতার বাদী হয়ে গত ২১ জানুয়ারি কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় এজাহারভুক্ত ৬ জনসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৮/৯ জনকে আসামি করা হয়। মামলার তদন্ত চলছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন