শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

গর্তে লুকিয়েও রেহাই পায় না শিকারির হাত থেকে

প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নুরুল আলম বাকু, দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) থেকে
অনাদিকাল থেকেই মানুষ জীবন-জীবিকার জন্য গাছপালাসহ নানা প্রকার প্রাণীদের ব্যবহার করে আসছে। মানুষ খাদ্য, বস্ত্র, আশ্রয়, ওষুধসহ নানা প্রয়োজন মেটায় জীবজগৎ থেকেই। সেজন্য মানুষের টিকে থাকার মূল্যবান উপাদান হিসেবে জীববৈচিত্র্য বিশেষ গুরুত্বপুর্ণ। তাই বর্তমানে জীববৈচিত্র্য হ্রাস পাওয়ায় তার বিরুপ প্রভাব পড়ছে দামুড়হুদাসহ এলাকার মানুষের ওপর। নানা প্রতিকূলতার কারণে দামুড়হুদাসহ আশপাশ এলাকার জীববৈচিত্র্য বিপন্ন হয়ে পড়েছে। আশঙ্কাজনকভাবে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে অপরিকল্পিতভাবে বাসস্থান নির্মাণ, বনজঙ্গল উজাড়, খাদ্যের অভাব, কৃষিক্ষেত্রে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের অপরিমিত ব্যবহার, পলি পড়ে ভরাট হয়ে ও বৃষ্টির অভাবে নদ-নদী শুকিয়ে যাওয়া, বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়ে যাওয়ায় জলবায়ুর পরিবর্তনসহ নানাবিধ কারণে বিভিন্ন প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য প্রতিকূল পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিনিয়ত নির্বিচারে বনজঙ্গল উজাড় ও নানা প্রজাতির ছোট বড় গাছ কাটার ফলে বনজঙ্গল হ্রাস পাওয়ায় নানা প্রজাতির পাখি ও বন্যপ্রাণীদের আবাসস্থল ক্রমেই সঙ্কুচিত হয়ে পড়ছে। ফলে প্রকৃতি থেকে এ সমস্ত পাখ-পাখালী ও বন্যপ্রাণী হারিয়ে যাচ্ছে। দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য ও বাসস্থানের চাহিদা মেটাতে বর্তমানে পতিত জমি আর নেই বললেই চলে। এসব পতিত জমি ঝোপঝাড়, ছোটবড় গাছপালা ও লতাপাতায় ভরা ছিল। এসব ঝোপের মধ্যে শিয়াল, খরগোশ, খেঁকশিয়াল, বেজি, সজারু. গুঁইসাপ, বন বিড়াল ইত্যাদি বসবাস করতো। বাসস্থানের অভাব ও শিকারীদের কারণে এসব নেই বললেই চলে। যাও বা দু’একটা চোখে পড়ে তাও আবার মানুষের মধ্যে অসচেনতা ও আইনের প্রতি অজ্ঞতার কারণে তাও আর বাঁচতে পারছে না। বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ বন্যপ্রাণী অধ্যাদেশ ১৯৭৪ এর (২৬) ১খ ধারায় পাখি শিকারীর এক বছর কারাদ- ও একহাজার টাকা জরিমানার বিধান থাকলেও সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতার কারণে তার প্রয়োগ না থাকায় নানাপ্রকার পাখি, বন্যপ্রাণী শিকার ও এসবের বেচাকেনা বন্ধ হচ্ছে না। কয়েক দশক আগেও দামুড়হুদা উপজেলাসহ পার্শ¦বর্তী এলাকার মাঠের ঝোপঝাড়ে বসবাস করতো শিয়াল, খেঁকশিয়াল, বেজি, খরগোশ ও গুঁইসাপ। ছুটে বেড়াতো বিভিন্ন ফসলের ক্ষেতসহ ফাঁকা মাঠে। বর্তমানে ভুট্টা, আখসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেতে দু’একটা খরগোস ও বেজি দেখা যায়। গ্রামাঞ্চালের অনেকে জানায়, প্রায়ই সাঁওতাল ও বুনো-বাগদিরা দল বেঁধে বিভিন্ন মাঠে জাল পেতে ও লাঠিপেটা করে এসব শিকার করে। শিকারীরা তাড়া করলে অনেক সময় বেজি, খেঁকশিয়াল বা খরগোশ গর্তে লুকিয়ে পড়লে কোদাল দিয়ে মাটি খুঁরে গর্ত থেকে তুলে আনে। বন্যপ্রাণী শিকার করা আইনত নিষিদ্ধ হলেও এ ব্যাপারে তাদের কোন ধারণা না থাকায় তারা অবাধে এসব শিকার করে। আইন সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে তাদের কেউ কিছু বলে না। এ ব্যাপারে দামুড়হুদা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, বন্যপ্রাণী আইনে এসব শিকার করা নিষেধ। কেউ বন্যপ্রাণী শিকার করলে এবং তার উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণাদি পেলে আমরা তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন