লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ১৫ দিনের মাথায় ফের মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। গত এক বছর ৭ বার বাঁধে ধস নামে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কমলনগর মাতাব্বর হাট এলাকায় নির্মাণাধীন তীর রক্ষা বাঁধের উত্তর পাশের ৫০ মিটার ধস দেখা দেয়। আবারো ধস দেখা দেওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এর আগে ১৫ জুলাই ভোররাতে ওই বাঁধের দক্ষিণাংশের প্রায় দুইশ’ মিটারে ধস নামে। দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু না হওয়ায় বাঁধের দুই পাশের এলাকায় অব্যাহতভাবে ভাঙছে। আশপাশের এলাকায় ভাঙনের কারণে বাঁধ ধসে গতি বেড়েছে।
গত বর্ষা মৌসুমেও ওই বাঁধে পাঁচ বার ধস নামে। অনিয়মের মধ্য দিয়ে নিম্নমানের কাজ করায় বার বার ধস নামছে বলে স্থানীয়রা দীর্ঘদিন থেকে অভিযোগ করে আসছে। হুমকির মুখে রয়েছে পুরো বাঁধ। ধস দেখা দেওয়ায় আতঙ্কে রয়েছে কমলনগর উপজেলার দু-লক্ষাধিক মানুষ।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে এক কিলোমিটার বাধঁ নির্মানে ব্যায় ধরা হয় ৪৮ কোটি ১১ লাখ টাকা। কাজ পায় ডকইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্ক লিমিটেড। কিন্তু ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি না করে ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিংকে দিয়ে তখন কাজ শুরু করে। শুরুতে নিম্নমানের বালু ও জিও ব্যাগ দিয়ে কাজ শুরু করায় স্থানীয়দের চাপের মুখে পড়ে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনসহ নানান কর্মসূচি পালন করেন স্থানীয়রা। তীব্রস্রোত এক কিলোমিটার নির্মাণাধীন বাঁধের দু’পাশে ব্লক স রে গেছে। এতে করে জোয়ারের পানি ডুকে পড়েছে কিছু এলাকায়। এছাড়া ব্লক থেকে ব্লকের দূরত্ব বাড়ায় বাঁধের বেশ কিছু অংশ ফাঁকা হয়ে গেছে। ধস ঠেকাতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে জিও ব্যাগ (বালু ভর্তি বিশেষ ব্যাগ) ডাম্পিংয়ের কাজ শুরু করলেও কোনভাবেই রক্ষা করা যাচ্ছেনা বাঁধ। এখন পুরো বাধঁ রয়েছে হুমকির মুখে। এছাড়া গত এক মাস ধরে কমলনগর উপজেলার মাতাব্বরনগর, লুধূয়া, সাহেবেরহাট, কাদিরপন্ডিতের হাট, পাটওয়ারীহাট, চরকালকিনি ও চরফলকনসহ ১০টি গ্রামের প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকায় জুড়ে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ভাঙন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, অন্যত্র থেকে মাটি সংগ্রহ করে বাঁধ নির্মাণ করার কথা থাকলেও নদীর তীর থেকে মাটি উত্তোলন করায় বারবার ধস নামছে। সংসদ সদস্য-মাহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন বলছেন, রামগতি ও কমলনগর এলাকার নদী ভাঙন রোধ করা সাধারণ মানুষের প্রাণের দাবি, আমি এই দাবি পূরণের জন্য সব সময় চেষ্টা করে যাচ্ছি, ইতিমধ্যে ১৩৪৯ কোটি টাকা একনেকে পাশ হয়ে প্রায় ২শ কোটি টাকা ব্যয়ে ১ম পর্যায়ের সাড়ে ৫ কিলোমিটার বাঁেধর কাজ শেষ হয়েছে। শিগগিরই দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু করা জন্য ১৭০৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষা রয়েছে। এছাড়া কমলনগর উপজেলার মাতাব্বরহাট এলাকায় ৪৮ কোটি ১১ লাখ টাকা ব্যায়ে এক কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন