শফিকুল ইসলাম বেবু, কুড়িগ্রাম থেকে
নাগেশ^রীর একই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন জামাই-শ্বশুর। শ^শুর আইয়ুব আলী লাঙ্গল আর জামাই সোলায়মান আলীর মার্কা নৌকা। একজন জাতীয় পার্টির অন্যজন আওয়ামী লীগের। নির্বাচনী সরগরমে বাড়তি রস যোগ হয়েছে জামাই-শ্বশুরের প্রতিদ্বন্দ্বিতা। কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বেরুবাড়ী ইউনিয়নে সর্বত্রজুড়ে জামাই-শ্বশুরের প্রার্থীতার আলোচনা এখন তুঙ্গে। বিজয়ের মালা কার কপালে জুটবে শ্বশুর না জামাই! এ লড়াই দেখার অপেক্ষায় শেষ হবে আগামী ২৩ এপ্রিল। শ্বশুর আইয়ুব আলী জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পেয়ে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে ছুটছেন ভোটের মাঠে। রাত-দিন ভোটারের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। ভোট চাচ্ছেন। নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। আইয়ুব আলী গত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান। এবার মনোনয়ন দেয় জাতীয় পার্টি। ইউনিয়নে দলটির মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান চেয়ারম্যান মমিনুর রহমান দলীয় সমর্থন না পেয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। তবে বিদ্রোহীর খড়গ কাটেনি। দলের আরো এক মনোনয়ন প্রত্যাশী মাসুম উল হক স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে ঘোড়া প্রতীকে ভোট করছেন। জাতীয় পার্টির বেশ কিছু নেতা তার হয়ে কাজও করছেন। আইয়ুব আলী বলেন, পল্লী বন্ধু এরশাদের মার্কা। লাঙ্গল এলাকায় উন্নয়ন করছে। এ উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে আমাকে জয়ী করবে ভোটাররা। জামাই-শ্বশুর প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়ে বলেন, দলের নীতি নির্ধারকরা মনোনয়ন দিয়েছেন। জনগণ যাকে যোগ্য ভাববে, তাকে ভোট দেবে। আর মেয়ে জামাই যদি মূল্যায়ন বুঝতো তাহলে নির্বাচন করতো না। মেয়ে জামাই সোলায়মান আলী হয়েছেন নৌকার মাঝি। বেরুবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তিনি। নাগেশ্বরী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি থেকে এবারই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন। বয়সে তরুণ এ নেতাকে সমর্থন দেয় আওয়ামী লীগ। দীর্ঘদিন থেকে জনসংযোগ করে আসছিলেন তিনি। ব্যস্ত সময় পার করছেন এখন। ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন। ভোট চেয়ে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। এ দলেও রয়েছে বিদ্রোহী প্রার্থী। গত নির্বাচনের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক বর্তমান সদস্য আব্দুল মোতালেব দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হয়ে ভোট করছেন। তার মার্কা মোটরসাইকেল। সোলায়মান আলী বলেন, জনগণের পাশে থেকেছি সব সময়। জনগণ অনেক প্রার্থীর মাঝে আমাকে খুঁজে নিবে বলে বিশ্বাস করি। সম্পর্কের চেয়ে যোগ্যতা আর দলীয় বিবেচনা করে জনগণ রায় দেবে। দল দু’টি তাদের বিদ্রোহী প্রার্থীকে নিয়ে বিপাকে রয়েছেন। এছাড়াও বসে নেই ধানের শীষ প্রতীকের বিএনপির প্রার্থী জানে আলম ম-ল ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দলের পাখা মার্কার প্রার্থী আমিনুল ইসলাম। সব মিলে বেরুবাড়ী ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রচারণা তুঙ্গে। বিভিন্ন দলের নির্বাচনী পোস্টারে ছেয়ে গেছে ইউনিয়নটির জনাকীর্ণ এলাকাগুলো। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, তৃতীয় ধাপে আগামী ২৩ এপ্রিল নাগেশ্বরী উপজেলার বেরুবাড়ীসহ ১৪ ইউনিয়নে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এখানে চেয়ারম্যান পদে ৮৩ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ১৪ ইউনিয়নে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নে সাতজন রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। এ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৩৪ হাজার ১৬৫ জন। ভোট কেন্দ্র ১৩৬টি। বুথ সংখ্যা ৮৬২।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন