রাজধানীর উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর গোলচত্বর সংলগ্ন খালি জায়গার হাটটির শেয়ার নিয়ে ক্ষমতাসীন আওমীলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি ও তুমূল বাকবিতন্ডার ঘটনা ঘটেছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় হাটটির ১নং হাসিল ঘরে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোক দিবসের ফেস্টুন ছিড়ে ফেলা হয়েছে। এতে করে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা যায়, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) এবার ১০টি হাটের জন্য টেন্ডার আহবান করেছে। এরমধ্যে ৮টি হাটের ইজারা সম্পূর্ণ হয়েছে। বাকি দুইটির মধ্যে একটি বাতিল, অন্যটির এখনো টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। ইজারা হওয়া ৮টি হাটের মধ্যে উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের ১ নং গোল চত্বর সংলগ্ন খালি জায়গার হাটটি ইজারা পেয়েছেন উত্তরখান থানা আওমীলীগের সহসভাপতি মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম।
শফিকুল হাটের ইজারা পেলেও তার কাছে হাটের শেয়ার দাবি করেন তুরাগ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল হাশিম চেয়ারম্যানের দুই ছেলে জাহিদুল ও মহিবুল হাসান। তারা স্থানীয় যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় হাটটির ১নং হাসিল ঘরে ইজারাদারের লোক তুরাগ থানা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক নুর হোসেনের কাছে হাটের শেয়ার দাবি করে জাহিদুল ও নাজমুল। তখন নুর হোসেন নতুন করে শেয়ার দেওয়ার সুযোগ নেই বলে অপরগতা প্রকাশ করলে হাশিমের দুই ছেলের সঙ্গে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে মারধরের ঘটনা ঘটে।
এসময় ক্ষুব্ধ জাহিদুল ও নাজমুল তুরাগ থানা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ নুর হোসেন, শরিফ, শাগর ও যুবরাজ মেম্বারসহ ১০/১২ জনের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। পরে জাহিদুলের লোকেরা ১২ নং সেক্টর কবরস্থান থেকে শুরু করে ১৫ নং সেক্টরের ২ নং ব্রীজ পর্যন্ত ১৫ আগস্ট শোক দিবস উপলক্ষে টানানো মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক হাবিব হাসানের সকল ফেস্টুন ছিড়ে ফেলে।
প্রসঙ্গত, হাটের ইজারাদার তার লোক হিসেবে পরিচিত। ঘটনা সূত্র ধরে গতকালও হাট এলাকায় দুই পক্ষের লোকজনকে শো-ডাউন করতে দেখা গেছে। যে কোন সময় হাটের শেয়ার নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষ ঘটতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেন স্থানীয়রা। হাট শুরু হতে এখনো বেশ কয়েকদিন বাকি রয়েছে।
এই বিষয়ে ভূক্তভোগি নুর হোসেন ও যুবরাজ মেম্বার বলেন, জাহিদুল ও নাজমুল হাসিল ঘরে ঢুকে আমাদের কয়েকটা ছেলের গায়ে হাত তুলে। এসময় আমরা তার প্রতিবাদ করায় আমাদের সঙ্গেও হাতাহাতি হয়েছে। কিছু সময় পরে আমরা হাবিব ভাইয়ের করা শোক দিবসের সকল ফেস্টুন ছেড়া দেখতে পাই। কে বা কাহারা এটা করেছে আমরা দেখিনি। তবে জাহিদুলরা এটা করে থাকতে পারে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে যুবনেতা জাহিদুল হাসান বলেন, হাট ইজারায় আমিও ২০ শতাংশ শেয়ার আছি। এখানে নতুন করে শেয়ার দাবি করার কোন প্রশ্নই আসে না। হাতাহাতির ঘটনা প্রসঙ্গে জাহিদুল বলেন, হাসিল ঘরে যাওয়ার পরে আমাদের বসার চেয়ার চাওয়ায় নুর হোসেনের সঙ্গে থাকা বিএনপির কয়েকটা ছেলে বেয়াদবি করায় তাকে একটা থাপ্পর দেয় আমাদের এক ছোট ভাই। এসময় হাসিল ঘরে থাকা কয়েক জনের সঙ্গে আমাদের বাকবিতন্ডা হলে, আমরা সেখান থেকে চলে যাই।
তিনি আরো বলেন, ফেস্টুন ছেড়ার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমার বাবা, হাবিব কাকার রাজনৈতিক গুরু, উনার ফেস্টুন আমরা কেন ছিড়তে যাব, নুর হোসেনরাই ফেস্টুন ছিড়ে আমাদের নামে চালিয়ে দিচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন