চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বরুমচড়া ও জুঁইদন্ডী ইউনিয়নবাসীর একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম লাল মোহাম্মদীয়া সড়ক। ওই সড়কে শাহ্ মোহছেন আউলিয়া খালের ওপর স্থাপিত সেতুটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে দীর্ঘ আট মাস আগে। গত বছরের বর্ষায় জোয়ারের পানি উঠানামায় সেতুটির দুপাশের মাটি ভেঙে খালে বিলীন হয়ে যায়। একইসঙ্গে বেহাল হয়ে পড়েছে পাঁচ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে লাল মোহাম্মদীয়া সড়কটিও। এতে করে মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছে দুই ইউনিয়নের মানুষ।
স্থানীয়রা জানান,এ সড়ক দিয়ে বরুমচড়া ও জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষের চলাচল। জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের বাসিন্দারা এ সড়ক হয়ে বরুমচড়া ভ‚মি অফিস ও তৈলারদ্বীপ সরকারহাটের পশুরবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। আর বরুমচড়ার বাসিন্দারা এ সড়ক দিয়ে খুরুস্কুল হয়ে বটতলী রুস্তমহাটে যায়। এ সড়কে অটোরিকশা, মিনি ট্রাকসহ ছোট যানবাহনগুলো চলাচল করত। কিন্তু গেল বর্ষায় ইটের এ সড়কটির দুই কিলোমিটার খুব ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সড়কের ওপর দিয়ে বৃষ্টি ও শঙ্খের জোয়ারের পানি উঠানামা করায় ইটগুলো ক্ষয়ে গেছে। পানি চলাচল করায় সড়কের একমাত্র সেতুটির উভয় পাশ থেকে মাটি সরে গেছে। এ কারণে গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে সেতুটির ওপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে দুই ইউনিয়নের হাজারো বাসিন্দা।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়,২০০৮ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে বরুমচড়া সওদাগর দীঘির পাড় থেকে খুরুস্কুল পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার সড়কে ইট বিছানোসহ সেতুটি পাকা করা হয়। এরপর থেকে ওই সড়ক ব্যবহার করে নিরাপদে চলাচল করছিল বরুমচড়া ও জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের বাসিন্দারা। গেল বছরের বর্ষা মৌসুমে বাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি উঠানামার কারণে সেতুটি ধসে পড়ায় যান চলাচল বন্ধ থাকে। তবে স্থানীয়রা উদ্যোগ নিয়ে সেতুর দুপাশে সাঁকো দিয়ে কোনোরকম চলাচল করছেন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, সড়কটির বরুমচড়া ইউনিয়নের দেড় কিলোমিটার ও জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের আধা কিলোমিটার অংশে ইট এবড়োখেবড়ো হয়ে গেছে। ইটের মাঝখান থেকে বালু ও মাটি সরে গেছে। সড়কের মাঝখান দিয়ে হেঁটে চলাচল করাও কষ্টকর। ওই সড়কের সেতুটির উভয় পাশের মাটি সরে গিয়ে সেতুটি হেলে পড়েছে। সেতুর দুপাশে পারাপারের জন্য বাঁশ দিয়ে ছোট দুটি সাঁকো দেওয়া হয়েছে।
খুরুস্কুল গ্রামের বাসিন্দা আবদুল গফুর জানান, সেতুটি এই এলাকার মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি ধসে পড়ায় দুই ইউনিয়নের মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে। আট মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় উদ্যোগে কাঠ-বাঁশ দিয়ে সেতু মেরামত করা হয়। এসব বাঁশের খুঁটি নষ্ট হয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। এ জন্য দ্রুত নতুন সেতু নির্মাণ করা প্রয়োজন।
বরুমচড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহাদত হোসেন চৌধুরী বলেন,সড়ক ও সেতু সংস্কারের জন্য উপজেলা প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। জানতে চাইলে আনোয়ারা উপজেলা প্রকৌশলী তাসলিমা জাহান ইনকিলাবকে জানান, লাল মোহাম্মদীয়া সড়ক ও সেতুর প্রাক্কলন তৈরি করে নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন