শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

রামগঞ্জের ৫ ইউনিয়ন আ.লীগ প্রার্থীরা ব্যস্ত পরিকল্পনায় বিএনপিসহ অন্যরা আতঙ্কে

প্রকাশের সময় : ২১ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এস এম বাবুল বাবর, লক্ষ্মীপুর থেকে
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় পর্যায়ে জেলার রামগঞ্জ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫টি ইউনিয়নে নির্বাচন ২৩ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াত ও স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ পাঁচটি চেয়ারম্যান পদের বিপরীতে মোট ২৩ জন প্রার্থী, ৪৫টি সাধারণ সদস্যের বিপরীতে ২০৪ জন প্রার্থী এবং ১৫টি সংরক্ষিত মহিলা সদস্যের বিপরীতে ৪১ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৫টি ইউনিয়নে ৪৭টি ভোট কেন্দ্রে ২৫৮টি ভোট কক্ষে ৯০,১৫৭ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত নির্বাচনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসব চোখে পড়েনি। আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা নিজেদের জয় নিশ্চিত করতে ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের নেতাদের সাথে নানা পরিকল্পনা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। অপরদিকে বিএনপিসহ অন্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বহিরাগত সন্ত্রাসী হামলা, ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, ভোট কেন্দ্র থেকে তাদের এজেন্টদের জোরপূর্বক বের করে দেয়া এবং ভোট কেন্দ্র দখলের আশঙ্কায় আতঙ্কিত। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে সাধারণ ভোটার ও বিরোধীদলীয় প্রার্থীদের মাঝে ভয়ভীতি, আতঙ্ক ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত রোববার বিকালে ৮ নম্বর করপাড়া ইউনিয়নের আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম তছলিম হোসেন স্থানীয় শাহজকি উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জনাকীর্ণ সাংবাদিক সম্মেলনে ইউনিয়নে আ.লীগের দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী বা অন্য কেউ ভোট কেন্দ্রে ঢুকে কারচুপি করার চেষ্টা করলে তার জন্য কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে সেই ঘটনার জন্য প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের নেতাদের দায়দায়িত্ব বহন করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, স্থানীয় আ.লীগের ৬ জন নেতার স্বাক্ষরিত নামের তালিকা কেন্দ্রে পাঠানোর কথা থাকলেও ষড়যন্ত্র করে তার স্বাক্ষর জাল করে কেন্দ্রে মজিবুল হকের নাম পাঠানো হয়েছে। উপজেলা আ.লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত তালিকায় করপাড়া ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম তছলিম হোসেনকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। টাকার বিনিময়ে অদৃশ্য শক্তি তার নামের পরিবর্তে অন্যজনকে নৌকার মনোনয়ন দেয়া হয়। তাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরনবী খোকনকে স্থানীয় আ’লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ (আনারস প্রতীকে) নির্বাচিত করে ঘরে ফিরবে। আ.লীগের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদকের এমন বক্তব্যেই প্রতীয়মান হয় আসন্ন নির্বাচনে সহিংস ঘটনা ব্যাপক হারে ঘটতে পারে এই ইউনিয়নে। এ ছাড়া প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে আ’লীগের ৫-৬ জন প্রার্থী থাকায় সংঘর্ষ ব্যাপক হারে সংঘটিত হতে পারে এমনটি মনে করছেন সাধারণ ভোটাররা। অপরদিকে গত রোববার সন্ধ্যায় ১ নম্বর কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল খালেকের নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা প্রদান, নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় প্রতিপক্ষের হামলায় প্রার্থী আবদুল খালেকসহ ৪ নেতাকর্মী আহত হন। রবিবার বিকালে তিনি ও দলের নেতাকর্মীরা প: বিঘা সফি আলীর বাড়িতে ধানের শীষ প্রতীকের নির্বাচনী গণসংযোগে গেলে একই এলাকার আওয়ামী ও যুবলীগের ১০/১২ জনের একদল তাদের বাধা প্রদান করেন। এ সময় বিএনপি সমর্থিতরা কারণ জানতে চাইলে চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল খালেক, ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি আলী হোসেন, বিএনপি নেতা আব্বাস মিয়া ও ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সভাপতি সফিকুল ইসলামকে লাঠিসোঁটা দিয়ে বেদম মারধর করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর হুমকি দেয় বলে বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল খালেক জানান। এ ছাড়া ৬ নম্বর লামচর ইউনিয়ন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মফিজ মিয়া জানান, গত শুক্রবার বিকালে নির্বাচনী কাজে ব্যবহৃত গাড়িটি ব্যাপক ভাঙচুর করে। একই সময়ে তার শ্বশুরবাড়ি মাঝিরগাঁও নৈত বাড়িতে হামলা চালিয়ে বসতঘরেও ভাঙচুর করে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর লোকজন। দলের নেতাকর্মীদের মাঝে ভীতি ছড়াচ্ছে। ভোট কেন্দ্রে কেউ গেলে জীবিত ফেরত আসতে পারবে না বলে হুমকি দিচ্ছে সরকারদলীয় লোকজন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন