দেশি গরুতে কুমিল্লার হাটগুলো জমে উঠেছে। প্রায় আশি হাজার খামারি ও গৃহস্থের তিন লাখ এবং বেপারীদের হাত ধরে উত্তরাঞ্চলের জেলা থেকে আনা আরো প্রায় এক লাখসহ মোট চার লাখ দেশি গরুতেই ঈদুল আজহা উদযাপন করবেন কুমিল্লার কোরবানিদাতারা। কুমিল্লার স্থায়ী অস্থায়ী চার শতাধিক হাটে গত বৃহস্পতিবার থেকে দেশি উঠতে শুরু করেছে। গতকাল শনিবার থেকে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন ও সতের উপজেলার হাটগুলোতে কোরবানির জন্য দেশি গরু, ছাগল বেচাকেনা আরো জমজমাট হয়ে উঠেছে।
বড় হাটগুলোতে জাল টাকা সনাক্তকরণ ব্যবস্থা ও প্রাণীসম্পদ অফিসের ভেটেনারী মেডিকেল টিম বসানো হয়েছে। ঈদুল আজহার আর মাত্র তিনদিন বাকি। খামারি ও গৃহস্থের গরু-ছাগলেই চাহিদা মেটাবে কুমিল্লার কোরবানীদাতাদের। গতকাল কুমিল্লা শহরের চকবাজার, নেউরা, চৌয়ারা, চান্দিনা, মাধাইয়াসহ কয়েকটি হাট ঘুরে দেখা গেছে ছোট বড় ট্রাকে করে আনা দেশি গরুতে সয়লাব। আবার আশপাশের গ্রামের গৃহস্থরা পায়ে হেঁটেও গরু নিয়ে এসেছেন হাটে। বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে দেশিয় গরু লালনপালনে খরচ বেশি পড়ায় দাম কম রাখার সুযোগ নেই। ইজারাদাররা বলছেন, মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বেশি থাকায় দাম বেশি। হাটে গরু ও ক্রেতার জমজমাট অবস্থা থাকলেও গতকাল শনিবার বিক্রি হয়েছে কম। ইজারাদাররা বলছেন রোববার থেকে বেচাকেনা জমে উঠবে।
কুমিল্লার বিভিন্ন হাটে পাবনা, কুষ্টিয়া, বগুড়া, রাজশাহী, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলা থেকে আগত সিন্ধি, ফিজিয়ান, শাহীআওয়াল, সুরমা, নেপালীসহ উন্নতজাতের দেশি গরু আসতে শুরু হয়েছে। আর উপজেলার হাটগুলোতে উঠেছে স্থানীয় খামারি ও গৃহস্থের পালন করা দৃষ্টিনন্দন গরু। ঈদেরদিন সকাল পর্যন্ত গরু পাওয়া যাবে এমন হাটের মধ্যে রয়েছে কুমিল্লা শহরের চকবাজার, সদর দক্ষিণের নেউরা, বাগমারা, লালমাই, সুয়াগঞ্জ বাজার, চৌদ্দগ্রাম বাজার, মুন্সিরহাট ও চিওড়া বাজার, বরুড়া বাজার, চান্দিনা বাজার, বুড়িচংয়ের ময়নামতিবাজার, দাউদকান্দির ইলিয়টগঞ্জ ও গৌরিপুর বাজার।
এদিকে এবারে হাটে ভারতীয় গরুর প্রভাব না পড়ায় দাম কিছুটা বেশি বলে জানান বাজার সংশ্লিষ্টরা। ইজারাদার, বেপারী ও সাধারণ বিক্রেতারা হাটগুলাতে গরুর সঙ্কট দেখা দেবে না বলে আশা করছেন। তবে তারা আশঙ্কা করছেন মৌসুমী ব্যবসায়ি ও দালালরা গরুর কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করতে পারে। এধরনের কৃত্রিম সঙ্কট যাতে কেউ সৃষ্টি করতে না পারে এজন্য প্রতিটি হাটে পর্যাপ্ত গরুর বিষয়ে মাইকে প্রচারণা চালাচ্ছেন এবং ইজারাদাররা সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন। অন্যদিকে এখন পর্যন্ত হাটগুলোতে ভারতীয় গরুর প্রভাব না পড়ায় বেশ ফুরফুরে মেজাজেই রয়েছেন জেলার খামারি ও গৃহস্থরা। তবে গতবার ঈদের দুইদিন আগে গরুর দাম হঠাৎ পড়ে যাওয়ায় এবারে লোকসানভীতিতে রয়েছেন অনেক বেপারি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন