শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

চাঁদপুরে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে

প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বি এম হান্নান, চাঁদপুর থেকে : আবহাওয়া পরিবর্তন ও গত কয়েকদিন শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় রোটা ভাইরাস ডায়রিয়া এবং নিউমোনিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। চাঁদপুর জেলাসহ পার্শ্ববর্তী বেশ ক’টি জেলা ও উপজেলাগুলোতে রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশু প্রতিদিন’ই মতলব আইসিডিডিআরবিতে চিকিৎসা সেবা নিতে আসছে। ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালের চিকিৎসকরাও হিমশিম খাচ্ছে। অপরদিকে কনকনে শীত ও এর তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুর সংখ্যাও বেড়ে গেছে। তবে আইসিডিডিআরবিতে কার্ডধারী শিশুরা নিউমোনিয়ার চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে কার্ড ছাড়া শিশুরা অন্যান্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে। এছাড়া চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে গত দু’দিনে ৩ শতাধিক শিশু অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। এদের বেশিরভাগই শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহজনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। শিশুরা শ্বাসকষ্ট, জ্বর, নিউমোনিয়া ও ব্রংকাইটিজ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. বেলায়েত হোসেন জানিয়েছেন, কয়েকদিনের তীব্র শীতে শিশুদের শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ বেড়ে বিভিন্ন ঠা-াজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। মতলব আইসিডিডিআরবি সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সব ক’টি ওয়ার্ডে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের প্রচ- ভিড়। বহির্বিভাগ অর্থাৎ বারান্দার মেঝেতেও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা সেবা নিতে দেখা যায়। আইসিডিডিআরবি সূত্র জানায়, প্রতিদিন গড়ে ১৪০ থেকে ১৭৫ জন রোগী এখানে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছে। এর সংখ্যা অন্যান্য সময়ের তুলনায় তিন গুণের চেয়েও বেশি। গত এক মাসে এ হাসপাতালে চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ, হাজীগঞ্জ, কচুয়া, হাইমচর, শাহরাস্তি, মতলব দক্ষিণ ও উত্তর এবং কুমিল্লার বরুড়া, মুরাদনগর, চান্দিনা, কুমিল্লা সদর, দাউদকান্দি, বুড়িচং, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, তিতাস, লক্ষ্মীপুর, রায়পুর, রামগঞ্জ, নোয়াখালীর চাটখীল, ফেনী সদর, নোয়াখালী, মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুর ও কক্সবাজার থেকে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশু ভর্তি হয়ে চিকিৎসা সেবা নিয়েছে। চিকিৎসা সেবা নিতে আসা কুমিল্লা বরুড়ার সিফাতের মা আঞ্জুমান আরা বলেন, তার মেয়ে ঘনঘন বমি ও পাতলা পায়খানা করছিল। এখানে নিয়ে আসার পর ডাক্তারদের চিকিৎসা ও পরামর্শে এখন অনেকটাই ভাল। তিনি জানান, চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী স্যালাইন ও বেবিজিংক খাওয়ানো হচ্ছে। মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের মাইমুনার মা বলেন, ‘শ্বাসকষ্ট ও জ্বর হওয়ায় তিনদিন আগে এ হাসপাতালে ভর্তি করাইছি। ডাক্তার ও নার্সরা গ্যাস (নেবুলাইজার) ও অ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন দিছে। অহন আমার মেয়ে কিছুডা সুস্থ।’ মতলব আইসিডিডিআরবি’র সিনিয়র চিকিৎসক ডা. চন্দ্রশেখর দাস বলেন, তীব্র শীত ও আবহাওয়াজনিত কারণ এবং দূষিত পানি পান, ময়লা খাবার পরিবেশনেই এ রোগে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। এ কারণেই শীতে শিশুরা ব্যাপকহারে এ রোগে আক্রান্ত হয়। প্রচ- শীতে ভাইরাস (রেসপিরেটরি সিনসাইটিয়াল ভাইরাস) ও ব্যাকটেরিয়াজনিত কারণে এত বেশি হারে শিশুরা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। আক্রান্ত শিশুদের অ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন ও নেবুলাইজ্ড দ্রবণ (গ্যাস) দেয়া হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন